Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

তুরস্কে একসঙ্গে চাপা পড়ে স্ত্রী-দুই কন্যার মৃত্যু, বেঁচে ফিরলেন আলিম

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ৭:৫৭ পিএম

কংক্রিট আর ইটের বড় একটি স্ল্যাবের নিচ থেকে উঁকি দিয়ে আবদুল আলিম মুয়াইনি উদ্ধারকারীদের দিকে দুর্বলভাবে উদ্ধারের জন্য ইশারা করছিলেন। তুরস্কের হতাই প্রদেশে ভয়াবহ ভূমিকম্পের আঘাতে ধ্বংস হয়ে যাওয়া বাড়ির নিচে দু’দিনেরও বেশি সময় হয়ে ধরে আটকে আছেন তিনি।

আবদুল আলিমের পাশেই পড়ে আছে তার স্ত্রী এসরার নিথর দেহ। তার কাছে উদ্ধারকারীদের পৌঁছাতে অনেক দেরী হয়ে গেছে। উদ্ধারের সময় আবদুল আলিমের পুরো শরীর ধূসর ধুলায় আচ্ছাদিত, এক চোখ ফোলা ছিল এবং পানিশূন্যতায় ভুগছিলেন ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের আলোকচিত্রী উমিত বেকতাস দ্বিতীয় দিনের মতো হতায়ে ছিলেন। গত সোমবার ভোরের দিকে তুরস্কের দক্ষিণ এবং সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলজুড়ে শক্তিশালী ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যেসব এলাকা, হতায়ে সেসবের একটি। স্মরণকালের ভয়াবহ এই ভূমিকম্পে দুই দেশে মৃতের সংখ্যা ইতোমধ্যে ১৭ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।

শহরের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর একটির দিকে এগিয়ে যেতে যেতে তিনি অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী স্বেচ্ছাসেবকদের একটি প্রশ্নই জিজ্ঞাসা করেছিলেন, যা আগেও বহুবার করেছেন: আপনি কি জীবিত কারও কাছে পৌঁছাতে পেরেছেন? আবদুল আলিমের পা কংক্রিটের নিচে আটকে থাকলেও তার জ্ঞান আছে এবং উদ্ধারকারীদের সাথে কথা বলতে পারছেন তিনি। এবার তারা বললেন, হ্যাঁ। কারণ তারা আবদুল আলিমকে জীবিত পেয়েছেন।

আবদুল আলিমের পা কংক্রিটের নিচে আটকে থাকলেও তার জ্ঞান আছে এবং উদ্ধারকারীদের সাথে কথা বলতে পারছেন তিনি। রয়টার্সের আলোকচিত্রী উমিত আব্দুল আলিমের সাথে সরাসরি কথা বলতে পারেননি। তবে আলিমের দুই বন্ধু পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন। তারা বললেন, আবদুল আলিম সিরিয়ার হোমস নগরীর বাসিন্দা। গৃহযুদ্ধ থেকে পালিয়ে তুরস্কে পাড়ি জমান তিনি। এখানে আসার পর তুর্কি নারী এসরাকে বিয়ে করেন।


এই দম্পতির দুই মেয়ে মাহসেন এবং বেসিরা। তখন পর্যন্ত মেয়েদের ভাগ্যে কী ঘটেছে তা পরিষ্কার ছিল না। আবদুল আলিমকে উদ্ধারে দীর্ঘসময় লেগে যায়। কয়েক ঘণ্টা পর উমিত সেখানে ফিরে ঘটনাচক্রে ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে আবদুল আলিমকে উদ্ধার করতেও দেখেন।
উদ্ধারের সময় আবদুল আলিমের পুরো শরীর ধূসর ধুলায় আচ্ছাদিত, এক চোখ ফোলা ছিল এবং পানিশূন্যতায় ভুগছিলেন। তার চিকিৎসার প্রয়োজন ছিল। তবে তিনি বেঁচে ফিরেছেন। কিন্তু তার পরিবারের সদস্যরা বাঁচতে পারেনি। মাটিতে কম্বলে ঢাকা তিনটি মৃতদেহ— এসরা, মাহসেন আর বেসিরার।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ