Inqilab Logo

মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আদানির সাথে যোগসাজশের অভিযোগ এড়িয়ে গেলেন

পার্লামেন্টে ৭৫ মিনিটের ভাষণ মোদির

ইনকিলাব ডেস্ক : | প্রকাশের সময় : ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

ভারতে আদানি শিল্পগোষ্ঠীর নাটকীয় উত্থানের পেছনে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভূমিকা ও কারসাজি আছে, বিরোধী নেতা রাহুল গান্ধী পার্লামেন্টে সরাসরি এই অভিযোগ তোলার পরও প্রধানমন্ত্রী মোদি তার জবাব এড়িয়ে গেলেন। প্রেসিডেন্টের বক্তৃতার ওপর ধন্যবাদজ্ঞাপক বক্তব্য পেশ করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদি বুধবার লোকসভায় প্রায় দেড় ঘণ্টার দীর্ঘ জবাবি ভাষণ দিয়েছেন। কিন্তু তার বিরুদ্ধে বিরোধীদের তোলা সুনির্দিষ্ট অভিযোগগুলোর একটিরও জবাব দেননি তিনি। তার বক্তৃতায় আদানি তো দূরের কথা, কোনো শিল্পগোষ্ঠীর নাম পর্যন্ত একবারের জন্যও আসেনি। বরং তিনি দুর্নীতির প্রশ্নে বেছে নিয়েছেন কংগ্রেসকে পাল্টা আক্রমণের রাস্তা। বলেছেন, ২০০৪ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত যে কংগ্রেস আমল ছিল, সেই দশকটি ভারতের ইতিহাসে আর্থিক কেলেঙ্কারি আর সহিংসতার একটি ‘অন্ধকার পর্ব’। প্রধানমন্ত্রী মোদি যখন পার্লামেন্টে বক্তৃতা শুরু করছেন, ঠিক তখনই প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতা রাহুল গান্ধী টুইট করেন, “প্রধানমন্ত্রীজি, আপনি গণতন্ত্রের আওয়াজকে স্তব্ধ করতে পারবেন না। ভারতের মানুষ আপনাকে সোজাসুজি কিছু প্রশ্ন করেছে। জবাব দিন।” তবে নরেন্দ্র মোদি সোজাসুজি তো নয়ই, এমনকি পরোক্ষভাবেও বিরোধীদের তোলা প্রশ্নগুলোর কোনো জবাব দেননি। খবরে বলা হয়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বুধবার পার্লামেন্টে ৭৫ মিনিট ধরে ভাষণ দিয়েছেন। তবে বিরোধীরা আদানি আদানি বলে চিৎকার করলেও তিনি সেই শব্দটিই তার ভাষণে উল্লেখ করেননি। উলটো তিনি কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকারের দিকেই দুর্নীতির তির ঘুরিয়ে দিয়েছেন। আদানি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী মোদি সরকারের অবস্থান এই যে, ঐ শিল্পগোষ্ঠী সম্পর্কে যা কিছু করার, তা করবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। বিজেপির দলগত অবস্থানও একই। তবে বিরোধীরা আদানি ইস্যুতে গত কয়েক দিন পার্লামেন্ট উত্তপ্ত করে চলেছেন। বুধবার লোকসভায় প্রেসিডেন্টের ভাষণের ওপর ধন্যবাদ জ্ঞাপন ভাষণ দিতে প্রধানমন্ত্রী মোদি যখন ওঠেন, তখনই বিরোধী বেঞ্চ থেকে আওয়াজ উঠতে শুরু করল, ‹আদানি! আদানি!› কিন্তু একবারের জন্যও সেদিকে যাননি মোদি। তবে মোদির ভাষণ শেষের পর বিরোধী বেঞ্চে বসে থাকা রাহুল গান্ধীকে টেবিল চাপড়াতে দেখা যায়। মুখে ছিল মৃদু হাসি। স্থানীয় সময় বিকাল ৪টায় শুরু করে ৫টা ১৫ মিনিটে ভাষণ শেষ করেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। বিরোধীরা যখন মোদি-আদানি ঘনিষ্ঠতা নিয়ে সরব, তখন প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, বড় বড় দুর্নীতি থেকে মুক্তি খুঁজছিল দেশ। আজ সেসব দুর্নীতি থেকে দেশ মুক্ত। তারপর কটাক্ষের সুরে বললেন, লোকসভায় মঙ্গলবার কয়েক জনের মন্তব্যের পর পুরো ইকো সিস্টেম যেন নড়ে গেছে। তাদের সমর্থকরাও উল্লসিত। আমিও দেখছিলাম। কয়েক জনের বক্তৃতার পর কিছু লোক খুশি হয়ে বলছেন, ইয়ে হুয়ি না বাত। হয়তো তারা রাতে ভালো ঘুমিয়েছেন এবং (সময় মতো) ঘুম থেকে উঠতে পারেননি। মোদির দাবি, গত কয়েক বছর ধরে একের পর এক উন্নয়ন হয়েছে দেশে। করোনা পরিস্থিতিতে বিশ্বের বেশির ভাগ দেশের অর্থনীতির যখন কোমর ভেঙে যাওয়ার জোগাড়, সে সময়েও ভারত পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হিসেবে উঠে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী মোদির কথায়, ‹এটা কি গৌরবের নয়? আসলে কিছু মানুষ এমনভাবে নিরাশায় ডুবে থাকেন যে, দেশের প্রগতির কোনো কিছুই তাদের চোখে পড়ে না।’ গতকাল আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারের দাম বেড়েছে। এর মধ্যে আদানি এন্টারপ্রাইজের শেয়ারের দর বেড়েছে ১০ শতাংশ আর আদানি উইলমার ও আদানি ট্রান্সমিশনের শেয়ারের দর বেড়েছে ৫ শতাংশ করে। গত সোমবার পর্যন্ত আদানি গোষ্ঠীর তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর সম্মিলিত বাজার মূলধন কমেছিল ১১৭ বিলিয়ন বা ১১ হাজার ৭০০ কোটি ডলার। এবিপি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ