মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
পাকিস্তানের মাটিতে চলতি বছরে যে এশিয়া কাপ হওয়ার কথা তারও ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে – কারণ ভারত আবার পাকিস্তানে যেতে বেঁকে বসেছে, তারা চায় কোনও নিরপেক্ষ ভেন্যুতে টুর্নামেন্ট হোক। আর এই স্পর্শকাতর বিষয়টিতেই এখন একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছেন পাকিস্তানের ক্রিকেট লেজেন্ড জাভেদ মিঁয়াদাদ – যিনি ক্রিকেট মহলে বেশ ‘ঠোঁটকাটা’ বলেই পরিচিত। মিঁয়াদাদের সেই বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে রীতিমতো তোলপাড় পড়ে গেছে ভারত ও পাকিস্তানের ক্রিকেট মহলে।
ভারতীয় ক্রিকেট দল শেষবারের মতো কোনও পাকিস্তান সফরে গিয়েছিল প্রায় চৌদ্দ বছর আগে, ২০০৮ এর এশিয়া কাপে খেলতে। এরপর মাঝে বহু বছর পাকিস্তানের মাটিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বন্ধ থাকলেও গত তিন বছরে আইসিসি-র পূর্ণ সদস্য প্রায় সবগুলো দেশই পাকিস্তানে খেলতে গেছে – একমাত্র ব্যতিক্রম ভারত। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড এ বিষয়ে বহুবার আপত্তি জানালেও কোনও লাভ হয়নি – কারণ ভারতে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার মোটেই চায় না ভারতের জাতীয় দল পাকিস্তানে গিয়ে খেলুক, এবং এটা তারা খোলাখুলিই বলে থাকে।
পাকিস্তানের ক্রীড়া সাংবাদিক ফরিদ খান একের পর এক টুইটে একটি অনুষ্ঠানে দেয়া জাভেদ মিঁয়াদাদের ওই বক্তব্য সামনে এনেছেন। পরে সেই বক্তব্যের ভিডিও-ও প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে সাবেক ওই তারকা ব্যাটসম্যান বলেছেন, “কেন ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে খেলতে ভয় পায়? কারণ তারা জানে পাকিস্তানের কাছে হারলে তাদের দেশের মানুষ ছেড়ে কথা বলবে না।”
“এমন কী নরেন্দ্র মোদী পর্যন্ত উধাও হয়ে যাবেন, ভারতের পাবলিক তাকেও ছাড়বে না”, মন্তব্য করেছেন তিনি।
জাভেদ মিঁয়াদাদ আরও দাবি করেছেন, আশির দশকে পাকিস্তান যখন শারজাতে ভারতের বিরুদ্ধে নিয়মিত জিতত, তখন ভারত শারজায় খেলতে আসাই বন্ধ করে দিয়েছিল। ‘কারণ (হারার পর) তাদের ক্রিকেটারদের বাড়িতে ক্ষুব্ধ জনতা আগুন ধরিয়ে দিত। এমন কী গাভাসকারের মতো ক্রিকেটারও এর জন্য সমস্যায় পড়েছিলেন!’ এর পরই তিনি যোগ করেন, “পাকিস্তানে যদি তারা খেলতে না-আসে তাহলে জাহান্নামে যাক। ভারত না-এলে আমাদের কিচ্ছু যায় আসে না!”
ভারতকে এখানে ‘বাগে আনার’ দায়িত্বটা আসলে ক্রিকেট বিশ্বের নিয়ামক সংস্থা আইসিসি-র বলেও মনে করেন তিনি। ‘যদি তারা সদস্যদের নিয়ন্ত্রণই করতে না-পারে, তাহলে সেই গভর্নিং বডি থেকে কী লাভ? সব সদস্যর জন্যই তো নিয়মটা একই হওয়া উচিত, তাই না?’, মিঁয়াদাদকে উদ্ধৃত করে আরও জানিয়েছেন ফরিদ খান।
মিঁয়াদাদের এই বক্তব্য সামনে আসার পর ভারতের ক্রিকেট সমর্থকরা সোশ্যাল মিডিয়াতে যথারীতি তাঁকে ধুইয়ে দিচ্ছেন বলা যেতে পারে। সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার ভেঙ্কটেশ প্রসাদ মিঁয়াদাদের বক্তব্যের কনটেক্সটে ভারতীয় দলের একটি ছবি দিয়ে টুইট করেছেন, “কিন্তু এরা তো জাহান্নামে যেতে চাইছে না!”
ভারতের ক্রিকেট পর্যবেক্ষকরা অনেকেই মনে করছেন, মিঁয়াদাদের এই বক্তব্যের আড়ালে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড বা পিসিবি-ই আসলে তাদের দেশে খেলতে আসার জন্য ভারতের ওপর চাপ বাড়াতে চাইছে। সিনিয়র ক্রিকেট সাংবাদিক জয়দীপ বসু মনে করছেন, “দুদেশের বোর্ডের মধ্যে বিস্তর আলোচনাতেও যার জট খোলেনি, এখন সাবেক তারকাদের দিয়ে ভারতের আঁতে ঘা দিয়ে পিসিবি হয়তো দেখতে চাইছে তাতে কোনও কাজ হয় কি না!”
তবে জাভেদ মিঁয়াদাদের বিবৃতিতে পরিস্থিতি এতটুকুও পাল্টাবে না বলেই তিনি মনে করেন, কারণ “রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক কারণেই ভারত সরকার কিছুতেই এখন ক্রিকেট দলকে পাকিস্তানে পাঠাতে রাজি হবে না।” তবে ভারতের খেলতে না-আসার বিষয়টি বহুকাল নীরবে হজম করে যাওয়ার পর পাকিস্তান যে এখন তা নিয়ে একটি হেস্তনেস্ত করতে চাইছে, সে লক্ষণ স্পষ্ট।
গত শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বাহরাইনে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) বৈঠকে এ বিষয়ে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের কঠোর অবস্থান ভারতকেও বেশ বিস্মিত করেছে। ক্রিকেট পোর্টাল ইএসপিএনক্রিকইনফো জানাচ্ছে, ওই বৈঠকে এসিসি-র প্রেসিডেন্ট তথা ভারতীয় বোর্ডের সচিব জেয় শাহ যখন বলেন তারা এশিয়া কাপ পাকিস্তানের বদলে কোনও নিরপেক্ষ ভেন্যুতে করতে চান, তখন পিসিবি প্রধান নাজম শেঠিও জানিয়ে দেন সেরকম হলে তাদেরও ভাবতে হবে আগামী অক্টোবরে ভারতে অনুষ্ঠিতব্য ওয়ান-ডে বিশ্বকাপে পাকিস্তান আদৌ খেলতে আসবে কি না।
বস্তুত পাকিস্তানের এই অনড় অবস্থানের কারণেই বাহরাইনের সেই বৈঠকে এশিয়া কাপের ভেন্যু নিয়ে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া যায়নি। আপাতত স্থির হয়েছে, মার্চে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল আবার বৈঠকে বসে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবে। ভারতের দাবি অনুযায়ী ওই টুর্নামেন্ট শ্রীলঙ্কা বা সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো কোনও নিরপেক্ষ ভেন্যুতে সরিয়ে নেওয়া হবে – না কি পাকিস্তান নিজের দেশের মাটিতেই সেটি আয়োজন করতে পারবে – তার ফয়সালা হবে সেই বৈঠকেই। সূত্র: বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।