মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়ে মন্দার শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। নভেল করোনাভাইরাসজনিত মহামারীর প্রভাব কাটিয়ে ওঠার আগেই শুরু হওয়া এ যুদ্ধ বিশ্বকে নতুন সমস্যার মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। তবে মন্দার শঙ্কার মধ্যেও সদ্যসমাপ্ত জানুয়ারিতে কর্মসংস্থান বেড়েছে। মার্কিন শ্রম বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, গত মাসে নতুন কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করেছেন ৫ লাখ ১৭ হাজার কর্মী। বিশ্লেষকরা বলছেন, এ সংখ্যা প্রত্যাশার চেয়ে অনেক বেশি। এর মাধ্যমে বেকারত্বের হার ৩ দশমিক ৪ শতাংশ কমে গেছে, যা ১৯৬৯ সালের পর সর্বনিম্ন। বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটি এখন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং ঋণের উচ্চহারের কারণে এক ধরনের মিশ্র সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বেশ কয়েকটি পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, চলতি বছর মন্দার আশঙ্কা অনেক বেশি। বিশেষ করে ভোক্তা ব্যয় কমে যাওয়া, উৎপাদনে ধীরগতি এবং বাড়ি বিক্রির পরিমাণ অনেক বেশি কমে গেছে, যার সূত্র ধরেই মন্দার পূর্বাভাস দেয়া হচ্ছে। সম্প্রতি এক জরিপে দেখা গেছে, অর্ধেকের বেশি মার্কিনি মনে করে, দেশের অর্থনীতি এরই মধ্যে মন্দায় পতিত হয়েছে। তবে এমন পরিস্থিতির মধ্যেও অবাক করার বিষয় হলো, শ্রমবাজার শক্তিশালী হয়ে উঠছে। এমনকি যে অর্থনীতিবিদরা শ্রমবাজারের অবস্থা নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী দিয়েছিলেন, তারাও হতবাক হয়েছেন। নতুন কর্মসংস্থানের সংখ্যার বিষয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানের অর্থনীতিবিদ জাস্টিন ওলফার্স বলেন, ‘এটি অবিশ্বাস্য।’ যদিও এক মাসের তথ্যের ভিত্তিতে বেশি প্রত্যাশা করার বিষয়ে সতর্ক করেছে ‘বিশ্লেষক সংস্থা মুডি’স। সংস্থাটির পরিচালক দান্তে ডি অ্যান্টোনিও বলেন, এর পরের মাসগুলোয় কর্মসংস্থানের গতি খুবই মন্থর হবে। মন্দার সম্ভাবনাও অনেক বেশি থাকবে। জানুয়ারিতে নিয়োগের হার ছিল ব্যাপক। এর কারণ হলো মহামারীর পর ধীরে ধীরে খুলতে শুরু করেছে বার ও রেস্তোরাঁগুলো। এ কারণে এগুলোয় কর্মীর প্রয়োজন পড়ছে। এটিই মূলত কর্মসংস্থান বৃদ্ধির পেছনে কাজ করেছে। গত বছরও যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে নতুন নতুন চাকরির ক্ষেত্র সৃষ্টি হতে দেখা গেছে। গত বছরের মার্চ পর্যন্ত ১২ মাসে আগের বছরের তুলনায় সেখানে ৫ লাখ ৬৮ হাজার নতুন চাকরির ক্ষেত্র তৈরি হতে দেখা গেছে। আগের বছর যেখানে নতুন চাকরির ক্ষেত্র তৈরি হয়েছিল ৪৫ লাখ, ২০২২ সালে সংখ্যাটা দাঁড়ায় ৪৮ লাখে। অবসর ও আতিথেয়তা খাতে যুক্তরাষ্ট্রে কর্মসংস্থান ৪ লাখ ৯৫ হাজারের নিচেই রয়ে গেছে। পেশাগত ও ব্যবসায়িক সেবায় চাকরির ক্ষেত্র বেড়েছে ৮২ হাজার। অন্যদিকে সাময়িকভাবে সাহায্য করার মতো চাকরি যা ভবিষ্যতে কাজের সুযোগ তৈরি করে তেমন ক্ষেত্রগুলো টানা কয়েক মাস কমতির দিকে থাকার পরে বেড়ে গিয়ে ২৫ হাজার ৯০০টিতে দাঁড়িয়েছে। সরকারি চাকরির ক্ষেত্র বেড়েছে ৭৪ হাজার। ক্যালিফোর্নিয়ায় ধর্মঘট করা বিশ্ববিদ্যালয় কর্মীরা ফিরে আসায় তা বাড়তে দেখা গেছে। নির্মাণকাজেও কর্মসংস্থান বেড়েছে ২৫ হাজার। তার মধ্যে বেশির ভাগই বেড়েছে ব্যবসায়িক কন্ট্রাক্টরদের মধ্যে। উৎপাদনকাজে কর্মসংস্থান বেড়েছে ১৯ হাজার। এছাড়া গত বছর গড় ঘণ্টাপ্রতি আয় বেড়েছে দশমিক ৩ শতাংশ। যদিও তা গত ডিসেম্বরে বেড়েছিল দশমিক ৪ শতাংশ। এতে বছরওয়ারি হিসাবে বেতনের প্রবৃদ্ধি কিছুটা কমে দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ৪ শতাংশে। ২০২১ সালের আগস্টের পরে এটাই সর্বনিম্ন বৃদ্ধি। এর আগে ডিসেম্বরে প্রবৃদ্ধি দেখা দিয়েছিল ৪ দশমিক ৮ শতাংশ। সেই সঙ্গে গড় কর্মসপ্তাহ ৩৪ দশমিক ৪ থেকে বেড়ে ৩৪ দশমিক ৭ সপ্তাহে গিয়ে পৌঁছেছে। রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।