গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
বাংলাদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সুরক্ষায় কমিশন গঠন এবং তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন হিন্দু নেতারা। এছাড়া বিভিন্ন সময় ধর্মীয় সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিচার দ্রুত শেষ করাসহ নানাবিধ সংকটের আশু সমাধানের দাবিও জানান নেতারা। শনিবার মহানগর নাট্যমঞ্চে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সম্মেলনের উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে এসব দাবি জানানো হয়।
ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সম্মেলনের উদ্ধোধন ঘোষণা করেন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায় নির্যাতিত হলে ভারত চুপ করে বসে থাকতে পারে না। বাংলাদেশে দিন দিন হিন্দুর সংখ্যা কমে যাচ্ছে, যা খুবই উদ্বেগের বিষয়। ভারতে এতধিকবার মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ প্রেসিডেন্ট, ভাইস প্রেসিডেন্ট হয়েছে। ভারতে সংখ্যা লঘু মন্ত্রণালয় আছে, সংখ্যা লঘু কমিশন আছে। সব ক্ষেত্রে বিশেষ বরাদ্দ আছে। যে কারণে ভারতে মুসলিম জনসংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। ভারত থেকে কোন মুসলমান অত্যাচারিত হয়ে অন্য দেশে যাচ্ছে না। আমরা চাই বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায় দাবি দাওয়া অধিকার নিয়ে বসবাস করতে পারে সে ব্যবস্থা করা হোক। তিনি আরো বলেন, ভারত-বাংলাদেশের ইতিহাস একই সূত্রে গাঁথা। আলাদা দুটি ভূখ- সত্ত্বেও দু’দেশের জনগণের সংস্কৃতি ও পরম্পরাও অভিন্ন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার রজতজয়ন্তী সঙ্গে ভারত-বাংলাদেশের বন্ধুত্বেরও রজতজয়ন্তী পূর্ণ হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে ছিলাম, ভবিষ্যতেও থাকব।
সম্মেলনে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু এদেশে অসাম্প্রদায়িকতার বীজ বপন করেছিলেন। হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে সবাই বাঙালী হয়ে যুদ্ধ করেছিল, জয় বাংলা বলে আত্মাহুতি দিয়েছিল। কিন্তু একাত্তরের পরাজিত শক্তি বিভিন্ন সময় সাম্প্রদায়িকাতে পুনর্বাসিত করার চেষ্টা করেছে। সংবিধানে এখনো সাম্প্রদায়িকতার ছাপ রয়েছে, সামরিক শাসনের ছাপ রয়েছে। তাই অসাম্প্রদায়িক দেশ গঠনে বাহাত্তরের সংবিধানে ফিরে যাওয়ার বিকল্প নেই। বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় অধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজন ধর্মীয় সংখ্যালঘু কমিশন।
জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ প্রামানিক বলেন, দেশে হিন্দু জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ৭.৯ শতাংশে নেমেছে। বিভিন্ন স্থানে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা হলেও প্রতিবাদ হয়েছে নামমাত্র। জাতীয় সংসদে ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধত্বকারী সদস্যের সংখ্যা পর্যাপ্ত নয়। এজন্য সংখ্যানুপাতিক তত্ত্বের ওপর ভিত্তি করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য সংসদীয় আসন নির্ধারণ করতে হবে। সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধে আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ সাম্প্রদায়িক নয়, কিন্তু একটি রাজনৈতিক গোষ্ঠীর ভাবাদর্শ সাম্প্রদায়িক। কমিশন গঠন করে সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী কর্তৃক নির্যাতনের ঘটনাগুলোর বিচার দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হবে। বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান ঘিরে সাম্প্রদায়িক হামলা ঠেকাতে প্রয়োজন কার্যকর আইন।
হিন্দু মহাজোটের সভাপতি অ্যাডভোকেট বিধান বিহারি গোস্বামীর সভাপতিত্বে সম্মেলনে অন্যন্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম, কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, সংগঠনের নেতা দিনবন্ধু রায়, বিজয় কৃষ্ণ ভট্টাচার্য, অ্যাড: প্রদীপ পাল সুশান্ত চক্রবর্তী প্রমূখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।