গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
ডায়াবেটিক রোগীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শতকরা ২৭ ভাগ বাড়ায় ‘কারকুমা ইমিউন প্লাস’ নামে একটি ফাংশনাল ফুড। সম্প্রতি টাইপ-২ ডায়াবেটিক রোগীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি বিষয়ক এক গবেষণায় এ তথ্য ওঠে আসে। গবেষণাটি যৌথভাবে পরিচালনা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বারডেম জেনারেল হাসপাতালের গবেষকরা। রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গবেষণার প্রতিবেদনটি অনুযায়ী, ‘কারকুমা ইমিউন প্লাস’ হলো টারমারিক (হলুদ) নির্ভর এক ধরণের ফর্মুলেটেড ফাংশনাল ফুড, যা মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। টাইপ-২ ডায়াবেটিক রোগীরা খুব সহজেই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে এবং সেরে উঠতেও বেশ সময় নেয়।
গবেষণাটি বলছে, সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এই রোগীদের দেহে এ্ই ফাংশনাল ফুড কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই কোষীয় পর্যায়ে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমিয়ে আনে। একইসঙ্গে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৃদ্ধি করার মাধ্যমে রোগীদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে।
‘ইফেক্টস অব ‘কারকুমা ইমিউন প্লাস’ (অ্যা টারমারিক বেজড ফর্মুলেটেড ফাংশনাল ফুড) অন অক্সিডেটিভ স্ট্রেস, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট অ্যান্ড লিভার ফাংশন স্ট্যাটাস ইন টাইপ-২ ডায়বেটিক অ্যাডাল্ট পেশেন্টস” শীর্ষক এই গবেষণার প্রতিনিধিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব নিউট্রিশন অ্যান্ড ফুড সায়েন্সের পরিচালক ও অধ্যাপক প্রফেসর ড. খালেদা ইসলাম।
ড. খালেদা ইসলাম বলেন, ‘দুইবার করোনা ধাক্কা যাবার পর আমরা বুঝতে পেরেছি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকা কতটা জরুরি। এজন্যই এই গবেষণাটি করা। কারকুমা ইমিউন প্লাস হলো একটি ফাংশনাল ফুড। অর্থাত পুরো খা্বারও না, পুরো মেডিসিনও না। আমাদের লাইফস্টাইল, লংজেভিটি বেড়েছে, ট্রিটমেন্ট এডভান্সড হয়েছে। এজন্য আমরা কমিউনিকেবল ডিসিসগুলোকে কন্ট্রোল করে ফেলেছি। কিন্তু ন্-ন কমিউনিকেবল ডিজিজগুলো যেমন: টাইপ-২ ডায়াবেটিক, হাইপারটেনশন, ক্যান্সার এগুলোর প্রোকোপ অনেক বেড়ে গেছে। তাই ওষুধের পাশাপাশি আমরা যদি ফুডের কম্পোন্টে বা ন্যাচারাল পদ্ধতিতে যদি আমরা এই রোগগুলোকে প্রতিরোধ করতে পারি, সেই চেষ্টা করা উচিত। ’
তিনি আরো বলেন, ‘কারকুমা ইমিউন প্লাস হচ্ছে হলুদসহ বেশ কিছু ন্যাচারাল ইনগ্রেডিয়েন্ট থেকে তৈরি করা একটি ফাংশনাল ফুড। এই সব ইনগ্রেডিয়েন্টগুলো সব দেশের বাইরে থেকে আনা। এই উপাদানগুলো তাই সাধারণ হলুদ বা অন্য কিছু থেকে অনেক বেশি স্ট্রং। সাধারণ ফর্ম-এ বা দেশে চাষ করা উপাদানগুলো এতো স্ট্রং নয়। আমাদের দেশের মাটিতে এই হলুদ এখনো চাষ করা শুরু হয়নি। এটা এক ধরণের বিশেষ হলুদ, যার স্ট্রেন্থ অনেক বেশি। আর এর সাথে লবঙ্গ, দারুচিনি, গোলমরিচের মতো উপাদানগুলোও ব্যবহার করে একটি ক্যাপসুলের ফর্ম-এ আনা হয়েছে।’
‘হলুদের একটি অন্যতম উপাদান হলো কারকিউমিন- যা একটি একটিভ ইনগ্রেডিয়েন্স, যার ফলে শরীরে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমে আর এন্টি অক্সিডেন্ট বাড়ে। ফলে রোগীর দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়। এটা নিয়ে কাজ করার উদ্দেশ্য ছিলো এই কারকুমা ইমিউন প্লাসটা যেনো শরীরে ম্যাক্সিমাম কাজ করে এবং এর কোনো সাইড ইফেক্ট আছে কিনা এটা দেখা। আর টাইপ-২ ডায়াবেটিক পেশেন্টদের নিয়ে কাজ করার কারণ হলো- এই পেশেন্টদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক কম থাকে । তাই তারা বিভিন্ন রকম রোগে আক্রান্ত হতে থাকে। তাই গবেষণার জন্য এই পেশেন্টদেরেকে বেছে নেয়া। গবেষণায় দেখা গেছে- কারকুমা ইমিউন প্লাস ব্যবহারের ফলে টাইপ-২ ডায়াবেটিক পেশেন্ট;দের মধ্যে ২৭% ইমিউনিটি বাড়ে। এর মানে, যাদের ডায়াবেটিক নেই তাদের জন্যে এটি আরো বেশি কাজ করবে। এটা কিন্তু ডায়াবেটিক সারিয়ে তুলবে এমন নয়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে। অর্থাত অন্য অসুখগুলোতে আক্রান্ত হবে না সহজে। এটি ব্যবহারে কিডনি, ফুসফুস বা অন্য কোনো অঙ্গে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয় না। ’- বলেন ড. খালেদা ইসলাম।
কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া না থাকলেও এটি খাবার ক্ষেত্রে কোনো সতর্কতা মেনে চলা উচত কিনা জানতে চাইলে খালেদা ইসলাম বলেন, ‘কারকুমা ইমিউন প্লাসটা ব্লাড থিনার হিসেবেও কাজ করে। অর্থাত রক্ত যাতে জমাট না বাধে এর জন্যেও কাজ করে। সো অলরেডি যারা ব্লাড থিনার জাতীয় ওষুধ খাচ্ছেন তারা এটি না খেলেই ভালো। কিংবা নিজেদের ডাক্তারদের সাথে আলাপ করে নিতে পারেন। আর খাবার পর এলার্জ জাতীয় কোনো উপস্বর্গ দেখা দিলে বন্ধ করে দিতে হবে। ’
বারডেমের রিসার্চ এন্ড ল্যাবরেটরি সায়েন্স বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক ডা. এম শওকত হাসানের সরাসরি তত্ত্বাবধানে বারডেম জেনারেল হাসপাতালে গবেষণাটির ক্লিনিকাল ট্রায়াল সম্পন্ন হয়। এছাড়াও মানবদেহে কারকুমা ইমিউন প্লাস ব্যবহারের নিরাপত্তা এবং কার্যকারিতা যাচাইয়ের উদ্দেশ্যে চারজন কো- ইনভেস্টিগেটর, তিনজন রিসার্চ অ্যাসিস্টেন্ট এবং একজন কনসালট্যান্ট এই গবেষণায় অংশগ্রহন করেন।
১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সী ৯৪ জন ডায়াবেটিক রোগীদের নিয়ে এ গবেষণা করা হয়। ৩০ দিন পর্যবেক্ষণের পর দেখা যায়, কারকুমা ইমিউন প্লাস সেবনের ফলে তাদের শরীরে অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের বায়ো-মার্কার ম্যালোনডিঅ্যালডিহাইড (এমডিএ) শতকরা ২৩ ভাগ কমে গিয়েছে এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের বায়ো-মার্কার (টিএসি, এসওডি এবং জিএসটিএম১) যথাক্রমে শতকরা ৪৫, ৬৩ ও ১০০ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে লিভার ফাংশনের বায়োমার্কার (সিরাম এসজিপিটি এবং এসজিওটি) এবং কিডনি ফাংশনের বায়োমার্কার (সিরাম ক্রিয়েটিনিন) এর মাত্রায় উল্ল্যেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন হয়নি। অর্থাৎ, কোনোপার্শপ্রতিক্রিয়াও দেখা যায়নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।