Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

২২ শতাংশ পাউরুটি ও বেকারি পণ্যে নিষিদ্ধ রাসায়নিক : বিএসএফএ

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১২:৩৬ পিএম

পাউরুটি ও বেকারিপণ্যের খাবারের মান পরীক্ষা করে ক্ষতিকর পটাসিয়াম ব্রোমেট পেয়েছে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ (বিএসএফএ)। ১২২টি নমুনার মধ্যে ২৭টি নমুনায় ব্যবহার নিষিদ্ধ এই রাসায়নিকের উপস্থিতি পাওয়া যায়। অর্থাৎ ২২ শতাংশ পাউরুটি ও বেকারিপণ্যে ক্ষতিকর পটাসিয়াম ব্রোমেট রয়েছে। এ ছাড়া হোটেল-রেস্তোরাঁর ১৩ শতাংশ খাবার মানহীন বলে বিএসএফএর পরীক্ষায় উঠে এসেছে।
গত অর্থবছরে (২০২১-২২) বিভিন্ন অভিযান থেকে সংগৃহীত পাউরুটি ও বেকারিপণ্যের এসব নমুনা পরীক্ষা করা হয়। গত মাসে তা প্রকাশ করে বিএসএফএ। চিকিৎসকরা জানান, পটাসিয়াম ব্রোমেট মিশ্রিত পাউরুটি বা বেকারিপণ্য খেলে মানুষের ক্যান্সার, থাইরয়েড গ্রন্থির রোগসহ নানা রোগ হতে পারে।
এমন পরিস্থিতিতে আজ বৃহস্পতিবার দেশে ষষ্ঠবারের মতো জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবস পালিত হচ্ছে। এবারের প্রতিপাদ্য হচ্ছে, ‘নিরাপদ খাদ্য, সমৃদ্ধ জাতি, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার চাবিকাঠি’।
জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবস উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাষ্ট্রপতি তাঁর বাণীতে বলেন, জনস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাবারের কোনো বিকল্প নেই।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর বাণীতে বলেন, খাদ্যের উৎপাদন থেকে ভোক্তা পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে খাদ্য নিরাপদ রাখা ও পুষ্টিমান বজায় রাখা জরুরি।
বিএফএসএ সূত্রে জানা গেছে, রুটি, পাউরুটি ও বেকারিপণ্যে পটাসিয়াম ব্রোমেট (কেবিআরও৩) ও পটাসিয়াম আয়োডেট (কেআইও৩) ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কিন্তু নমুনা পরীক্ষায় পাউরুটি ও বেকারিপণ্যে পাওয়া পটাসিয়াম ব্রোমেটের মাত্রা ছিল ৩.৩১ পিপিএম থেকে ১২.৯১ পিপিএম। বাংলাদেশ অটো বিস্কুট অ্যান্ড ব্রেড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য মতে, দেশে প্রতিদিন ৮০০ থেকে এক হাজার টন পাউরুটি উৎপাদন করা হয়। এসব পাউরুটির মেয়াদ থাকে তিন দিন পর্যন্ত।
এদিকে খাদ্য স্থাপনা (খাদ্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ ও বিপণনের স্থান), হোটেল, রেস্তোরাঁ ও প্রক্রিয়াকারী কম্পানিগুলো থেকে খাদ্যপণ্যের নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষা করে বিএসএফএ। গত অর্থবছরে (২০২১-২২) অর্থবছরে এক হাজার ২৮২টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে মানসম্মত নমুনা ছিল এক হাজার ১৩০টি। অর্থাৎ প্রায় ১৩ শতাংশ খাবার মানহীন। অন্যদিকে চলতি অর্থবছরের (২০২২-২৩) ডিসেম্বর পর্যন্ত ৮৫৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে মানসম্মত নমুনা পাওয়া যায় ৭৫৫টি। এখানেও প্রায় ১৩ শতাংশ খাবার মানহীন পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য (খাদ্য, শিল্প ও উৎপাদন) অধ্যাপক মো. আব্দুল আলীম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘খাদ্য নিরাপদ করতে আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা রয়েছে। অভিযান পরিচালনা ছাড়াও জনসচেতনতা বাড়ানো হয়েছে। মানহীন পণ্য বাজার থেকে প্রত্যাহার এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
অধ্যাপক আব্দুল আলীম আরো বলেন, রাজধানীতে খাদ্য নিরাপদ রাখতে কঠোর কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। ভ্রাম্যমাণ গবেষণাগারের মাধ্যমে ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে খাদ্যপণ্যের নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষা করে ব্যবস্থা নেওয়া হয়ে থাকে।
বাংলাদেশ ফুড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুস্তাক হাসান ইফতিখার কালের কণ্ঠকে বলেন, খাদ্যে নিষিদ্ধ ও ক্ষতিকর যেকোনো রাসায়নিক মেশানো ভয়ংকর অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। বিচ্ছিন্নভাবে শুধু অভিযান পরিচালনা করলেই হবে না। পণ্যের মানদণ্ড সঠিকভাবে পরিপালনে বাধ্য করতে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকারী সংস্থাগুলোকে প্রযুক্তিগত ও জনবল বৃদ্ধির মাধ্যমে শক্তিশালী করতে হবে। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চয়তায় সাংস্কৃতিক পরিবর্তন আনতে হবে।

 



 

Show all comments
  • Md. Aman Ullah Talukder ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ২:৫২ পিএম says : 0
    এখানে মনে করার কোন কারন নাই যে, যারা ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য মিশিয়েছে তাদের জরিমানা ছাড়া অন্য কোন শাস্তি হবে!!!
    Total Reply(0) Reply
  • Zakiul Islam ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ৩:২৪ পিএম says : 0
    সরকারী ঘোষ খোর কর্মকর্তারা এই জন্য দায়ী । ভেজালের শাস্তি মৃত্যু দণ্ড হওয়া উচিৎ ।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ