নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
উদযাপনই বলে দিচ্ছিল, রুবেল হোসেন জানেন মাইলফলকের কথা। দ্বিতীয় বোলার আর প্রথম পেসার হিসেবে বিপিএলে শততম উইকেটের মাইলফলক ছুঁলেন সিলেট স্ট্রাইকার্সের এই তারকা। তার দুর্দান্ত বোলিংয়ে খুলনা টাইগার্সকে ৩১ রানে হারিয়ে সবার আগে বিপিএলের প্লে-অফে নাম লিখিয়েছে মাশরাফি বিন মুর্তাজার দল। গতপরশু সিলেটে রাতের ম্যাচে আগে ব্যাট করে ৪ উইকেটে ১৯২ রানের পাহাড় গড়ে সিলেট। জবাব দিতে নেমে রুবেলের তোপে নির্ধারিত ওভারে মাত্র ১৬১ রান তুলতেই ৯ উইকেট খুইয়ে বসে খুলনা। তবে এদিন সিলেটের জয় ছাপিয়ে রুবেলের কীর্তিই দেখা দিয়েছে মোটা দাগে। নিজের এই অর্জনে যেমন উচ্ছ্বসিত, দীর্ঘ পথচলায় কিছু আক্ষেপও আছে এই পেসারের। স্বপ্নেরাও মরে যায়নি এখনও। আছে আরও চমকপ্রদ কিছু করা, আবারও জাতীয় দলে খেলার তাড়না তার এগিয়ে চলার জ্বালানি।
৯৬ উইকেট নিয়ে এবারের বিপিএল শুরু করেন রুবেল। কিন্তু নাগালে থেকেও ১০০ পর্যন্ত যেতে তাকে অপেক্ষা করতে হয় অনেকটা সময়। তার সিলেট স্ট্রাইকার্সের অধিনায়ক মাশরাফিও একজন পেসার। দলের মোহাম্মদ আমিরের মতো বিদেশি পেসার যেমন আছেন, তেমনি স্থানীয় রেজাউর রহমান রাজাও দারুণ পারফর্ম করছেন। এমনকি আরেক তরুণ পেসার তানজিম হাসান সাকিবও সুযোগ পেয়ে যান। রুবেল তাই সেভাবে ম্যাচ খেলার সুযোগই পাচ্ছিলেন না। ১৬ ও ১৭ জানুয়ারি চট্টগ্রামে টানা দুটি ম্যাচ তিনি খেলেন। ১ উইকেট নেওয়ার পর আবার বাইরে। তার অপেক্ষার অবসান হয় অবশেষে সিলেট পর্বে দলের শেষ ম্যাচে। খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে সোমবার নিজের প্রথম ওভারেই দুই উইকেট নিয়ে মাইলফলকের দিকে এগিয়ে যান। পরে উইকেটের সেঞ্চুরিও পূর্ণ করে এগিয়ে যান আরেকটু। ৪ উইকেট নিয়ে রাঙিয়ে তোলেন ফেরার ম্যাচ।
ক্রিকেটাররা অনেক সময়ই এসব পরিসংখ্যানের কথা সেভাবে খেয়াল রাখেন না। কিন্তু রুবেল জানতেন। তাই মাঠেই উদযাপন করেন। ম্যাচ শেষেও শততম উইকেটের উদযাপন করতে দেখা যায় তাকে। পরে সংবাদ সম্মেলনে বললেন, তার মাথায় ছিল এই অর্জনের কথা, ‘আমি জানতাম আমার তিনটা উইকেট লাগে। উইকেট পাচ্ছিলাম। যখন শেষ উইকেট (একশতম) উইকেট পেলাম, তখন আসলেই খুব ভালো লেগেছে। সম্ভবত আমি দ্বিতীয় বোলার হিসেবে এমন কিছু করেছি। খুবই ভালো লাগছে।’ বিপিএলে এই মাইলফলক আগে ছিল শুধু সাকিব আল হাসানের। রুবেল সেটিও জানতেন। দেশের সেরা ক্রিকেটারের সঙ্গে একই ক্লাবে জায়গা পেয়ে তিনি উচ্ছ্বসিত। তবে একটু আক্ষেপও করলেন অনেকটা দেরি হওয়ায়, ‘এক নম্বরে তো সাকিব ভাই আছে, আমি জানি। সাকিব ভাইয়েরই থাকার কথা। প্রতি বিপিএলেই উনি এত এত উইকেট নেন। তার পাশে যে কোনো অর্জনেই থাকতে পারা দারুণ ব্যাপার। তবে আমার একটু সময় লেগে গেল। গত দুই বিপিএলে আসলে সেভাবে ম্যাচ খেলারই সুযোগ পাইনি। নাহলে হয়তো আগেই হয়ে যেত এটা। তার পরও, কত কত পেসার খেলেছেন, প্রথম পেসার হিসেবে এটা করতে পেরে ভালো লাগছে।’
রুবেলের ভালো লাগা আরও বেড়ে যেত, যদি ৫ উইকেট পেতেন। সেই সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছিল। তার শেষ ওভারে নাসুম আহমেদের ক্যাচ নিতে পারেননি ইমাদ ওয়াসিম। তাতে আক্ষেপ কিছু আছে রুবেলের, তবে হতাশা খুব বেশি নেই, ‘পাঁচ উইকেট পাওয়া তো প্রতিটি বোলারের স্বপ্ন। ব্যাটসম্যানদের যেমন সেঞ্চুরি করার স্বপ্ন থাকে, আমাদের বোলাদের জন্য পাঁচ উইকেটও তেমন স্বপ্ন থাকে। আমি চেষ্টা করেছিলাম। হয়নি, দুর্ভাগ্য আসলে। কিছু করার নেই। ওকে (ইমাদ) কিছু বলিনি। ও তো চেষ্টা করেছে। কপালে ছিল না আসলে। ভাগ্যের সাথে তো কিছু করার নেই আসলে।’
এখন বিপিএল দলে জায়গা পেতেও তাকে লড়তে হয়, অপেক্ষা করতে হয়। অথচ একটা সময় তিনি ছিলেন মূল বোলারদের একজন। শুধু বিপিএল নয়, জাতীয় দলেও সীমিত ওভারের ক্রিকেটে তিনি ছিলেন নিয়মিত। সেই রুবেল প্রায় দুই বছর ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সুযোগ পান না। বাস্তবতা বলছে, এখন তিনি অনেক দূরে। তবে ৩৩ বছর বয়সী পেসারের স্বপ্ন তার বেঁচে আছে এখনও, ‘জাতীয় দলে আমি দীর্ঘদিন খেলেছি। স্বপ্ন দেখতে তো দোষের কিছু নেই। স্বপ্ন তো সবাই দেখে। আমিও দেখি। চেষ্টা করি বা করছি। সামনে আরও খেলা আছে। আমি যদি এক্সট্রা অর্ডিনারি কিছু করতে পারি, নির্বাচকরা অবশ্যই মাথায় নেবেন। আমি তো খেলব, যতদিন সুস্থ থাকব। একটা সময় যখন আমি দেখব পারছি নাৃতখন আমি নিজেই ছেড়ে দেব। আমার কাছে মনে হচ্ছে আমি এখনও সম্পূর্ণ ঠিক আছি।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।