মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ফিলিস্তিনি ভূখন্ডে অবৈধ ইসরাইলি বসতি স্থাপন বন্ধের প্রস্তাব পাসের ঘটনায় প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেওয়া দেশগুলোর বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে ইসরাইল। এরইমধ্যে এ ইস্যুতে ইসরাইলকে সমর্থন না দেওয়ায় নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ সদস্য দেশসহ তেল আবিবে নিযুক্ত ১১টি দেশের রাষ্ট্রদূতদের তলব করেছে ইসরাইল। যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও ইসরাইল অন্য যেসব দেশের রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে সে দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে যুক্তরাজ্য, চীন, রাশিয়া, ফ্রান্স, জাপান, মিসর, উরুগুয়ে, স্পেন, ইউক্রেন ও নিউজিল্যান্ড।
শুক্রবারের ভোটাভুটিতে যুক্তরাষ্ট্র ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল। ফলে ফিলিস্তিনি ভূখন্ডে অবৈধ ইসরাইলি বসতি স্থাপন বন্ধের প্রস্তাবটি ১৪-০ ভোটে পাস হয়। এ ঘটনায় রবিবার ইসরাইলি মন্ত্রিসভার বৈঠকে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আবারও ওবামা প্রশাসনের কঠোর সমালোচনা করেছেন। এ প্রস্তাব পাসের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য বারাক ওবামা প্রশাসনকে অভিযুক্ত করেছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী। তার ভাষায়, আমাদের কাছে যেসব তথ্য রয়েছে সে অনুযায়ী আমাদের কোনও সন্দেহ নেই যে ওবামা প্রশাসন এ প্রস্তাবের উদ্যোগ নিয়েছে, এর পেছনে দাঁড়িয়েছে, এর ভাষা ঠিক করে দিয়েছে এবং প্রস্তাবটি পাসের জন্য দাবি তুলেছে।
নেতানিয়াহুর দাম্ভিক উচ্চারণ, ইস্যুটি সমাধানের জন্য জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ উপযুক্ত জায়গা নয়। তিনি জানিয়েছেন, এ প্রস্তাব পাসের জাতিসংঘের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা-না রাখার ব্যাপারেও ভাবছে ইসরাইল। গত শনিবার এক সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু বলেন, জাতিসংঘের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ইসরাইলি সহায়তা, ইসরাইলে থাকা জাতিসংঘ প্রতিনিধিসহ ওই সংস্থার সঙ্গে আমাদের যাবতীয় সম্পর্ক এক মাসের মধ্যে পুনর্বিবেচনা করতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছি। গত শনিবারের সাক্ষাৎকারে জাতিসংঘের ৫ সংস্থাকে ইসরাইলের প্রতি শত্রুভাবাপন্ন বলে আখ্যায়িত করেন নেতানিয়াহু। তিনি জানান, এরইমধ্যে ওই সংস্থাগুলোতে ৭৮ লাখ ডলারের তহবিল বাতিল করা হয়েছে। পাশাপাশি আরও তহবিল বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে। এর আগে এ ঘটনায় প্রস্তাব উত্থাপনকারী সেনেগাল ও নিউজিল্যান্ড থেকে ইসরাইলি রাষ্ট্রদূতদের দেশে ফেরার নির্দেশ দেয় তেল আবিব। নিরাপত্তা পরিষদে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব পাসের পর শনিবার এ সিদ্ধান্ত নেয় ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দফতর। এরইমধ্যে সেনেগালকে দেওয়া ইসরাইল সরকারের সব ধরনের সাহায্য বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন ক্ষুব্ধ ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী। সেনেগালের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পূর্বনির্ধারিত ইসরাইল সফর বাতিলেরও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। ফিলিস্তিনি ভূখন্ডে ইসরাইলি বসতি স্থাপন বন্ধের পক্ষে নিরাপত্তা পরিষদে পাস হওয়া প্রস্তাবও প্রত্যাখ্যান করেছে ইসরাইল। এই প্রস্তাবের নিন্দা জানানো পাশাপাশি তারা জানিয়েছে, প্রস্তাবের কোনও শর্ত মানতে বাধ্য নয় ইসরাইল। ২৩ ডিসেম্বর ২০১৬ শুক্রবার ১৫ সদস্যবিশিষ্ট জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে এ সংক্রান্ত প্রস্তাবটি তুলে ধরা হয়। ইসরাইলি বসতি স্থাপনের বিরুদ্ধের ওই প্রস্তাবে বলা হয়, ১৯৬৭ সাল থেকে ফিলিস্তিনি ভূখন্ডে ইসরাইল যে বসতি স্থাপন করে যাচ্ছে, তার কোনও আইনি ভিত্তি নাই। ভোটদানে থেকে বিরত থাকে যুক্তরাষ্ট্র। বাকি ১৪টি দেশ এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিলে তা পাস হয়।
প্রস্তাবটিকে আন্তর্জাতিক আইনের বিজয় এবং ইসরাইলি চরমপন্থার প্রত্যাখ্যান বলে উল্লেখ করেছে ফিলিস্তিন। আর ইসরাইল বলছে, তারা এর তোয়াক্কা করে না। প্রস্তাবের কোনও শর্তই মানবেন না তারা। এক বিবৃতিতে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, এমন এক অদ্ভুত প্রস্তাব যেন কোনও খারাপ প্রতিক্রিয়া না ফেলতে পারে, এ লক্ষ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত ট্রাম্পের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত ইসরাইল। তিনি আরও বলেন, জাতিসংঘে পাশ হওয়া ওই লজ্জাজনক ইসরাইল-বিরোধী প্রস্তাব ইসরাইল প্রত্যাখ্যান করে। ইসরাইল তা মানতে দায়বদ্ধ নয়। ইসরাইলকে রক্ষার জন্য জাতিসংঘে গড়ে ওঠা দলবাজি রুখতে ব্যর্থ হয়েছে ওবামা প্রশাসন। দৃশ্যপটের বাইরেই কেবল তারা সংঘাতে জড়ায়। সিরিয়া গৃহযুদ্ধের প্রসঙ্গ টেনে নেতানিয়াহু বলেন, একই সময়ে যখন সিরিয়ায় পাঁচ লাখ মানুষের হত্যা রুখতে নিরাপত্তা পরিষদ কিছুই করেনি, তখন মধ্যপ্রাচ্যে সত্যিকারের গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে তারা লজ্জাজনক দলবাজি করছে। জাতিসংঘে ইসরাইলি দূত ড্যানি ড্যানন আল-জাজিরাকে বলেন, তাদের সরকার আশা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র এই প্রস্তাবে ভেটো দেবে। বিবিসি, ফক্স নিউজ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।