Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

যুদ্ধ-বিগ্রহ চলছেই মিয়ানমারে

ইনকিলাব ডেস্ক : | প্রকাশের সময় : ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

মিয়ানমারে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে, সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলের দুই বছর পর, বিশ্লেষকরা বলছেন দেশটি ক্ষমতাসীন জান্তা এবং প্রতিরোধ শক্তি, প্রচ- ক্ষয়ক্ষতির মধ্যে একটি মারাত্মক যুদ্ধের চক্রে আটকে আছে, যা এই বছরের সম্ভাব্য নির্বাচনের আগে আরো রক্তাক্ত পরিস্থিতি বয়ে আনবে। জান্তা এখনো দেশটির বিস্তীর্ণ অঞ্চলকে নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়েছে এবং পাঁচ কোটি চল্লিশ লাখ জনসংখ্যা অধ্যুষিত দেশটি একটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর কাছ থেকে প্রবল আক্রমণের শিকার হচ্ছে। জাতিসংঘ বলেছে, অভ্যুত্থানের পর থেকে লড়াইয়ে এ পর্যন্ত ১২ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং এই সংখ্যা এখনো প্রতি মাসে কয়েক হাজার করে বাড়ছে। বিশৃংখলা সত্ত্বেও, বিশ্লেষকরা আশা করছেন, জান্তা একটি বেসামরিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করার জন্য আগস্টের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাবে। তবে জান্তার বিরোধীরা বলছে, এই সরকার দ্বারা পরিচালিত যেকোনো নির্বাচনে কারচুপি হবেই এবং শুধু নামমাত্র একটি বেসামরিক সরকার গঠিত হবে। মিয়ানমারের বিশ্লেষক এবং ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের সিনিয়র উপদেষ্টা রিচার্ড হরসি এই সংঘাত সম্পর্কে বলেছেন, কোনো সামরিক সমাধান তো দূরে থাক, রাজনৈতিক সমাধানও সুদূর পরাহত বলে মনে হচ্ছে। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে, শত শত স্থানীয় মিলিশিয়া বা পিডিএফ নামে পরিচিত জনগণের প্রতিরক্ষা বাহিনী, সেনাবাহিনীর শাসনকে প্রতিহত করার জন্য দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। ব্রিটেনের ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ -এর বিশ্লেষণ করা সর্বসাম্প্রতিক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, শুধু গত অক্টোবর মাসে প্রায় ৫০০টি আক্রমণ বা সশস্ত্র সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ইনস্টিটিউটের ডেটা ম্যাপিংয়ে দেখা যায়, লড়াইয়ের বেশিরভাগ অংশ এখনো মিয়ানমারের শুষ্ক অঞ্চলগুলোতে কেন্দ্রীভূত, যা উত্তর ও পশ্চিমে মধ্য মান্দালয় অঞ্চল থেকে ম্যাগওয়ে এবং সাগাইং পর্যন্ত বিস্তৃত। এছাড়া, দক্ষিণ কাচিন এবং উত্তর শান রাজ্যে, মিয়ানমারের উত্তর-পূর্ব এলাকা এবং থাইল্যান্ডের সাথে দেশটির পূর্ব সীমান্ত বরাবর অঞ্চলকে তুমুল লড়াইয়ের ক্ষেত্র বলে দেখা যায়। বিশ্লেষকরা বলছেন, বিরোধী দলের অন্য প্রধান সমস্যা হল জাতীয় পর্যায়ে সংহতি ও সমন্বয়ের একগুঁয়ে অভাব। জান্তা এখনো নির্বাচনের জন্য কোনো তারিখ নির্ধারণ করেনি, তবে জোর দিয়ে বলছে, তারা এই বছর একটি নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে চায়। মিয়ানমারের আরেকটি থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড পলিসির বিশ্লেষক অং থু নিয়েন বলেছেন, নির্বাচন অনেক সম্ভাব্য লক্ষ্য উপস্থাপন করবে, তাই আমি মনে করি, আমরা বরং একটি সহিংস নির্বাচনী বছর দেখতে পাব। ইতোমধ্যে, উভয় পক্ষের ক্রমবর্ধমান সংখ্যক লোককে হত্যার লক্ষ্যবস্তু, অপহরণ করা হচ্ছে। অং থু নাইন বলেছেন, সামনের দিনগুলো কেবল একটি মারাত্মক লড়াই নয়, আরো তিক্ত এবং নৃশংস লড়াইয়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে। রয়টার্স, এএফপি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ