নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
সিলেট স্ট্রাইকার্সকে নিয়ে সিলেটজুড়ে ছিল অন্যরকম উন্মাদনা। টানা সাফল্যে থাকা মাশরাফি-মুশফিকদের দলটিকে ঘিরে তৈরি হয়েছিল বাড়তি আগ্রহও। এরই রেশ বিপিএলের সিলেট পর্বে। ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম; এরপর ফের ঢাকা ঘুরে এবারের বিপিএল এখন সিলেটে। গতকাল থেকে উঠেছে বিপিএল সিলেট পর্বের পর্দা। শুরুর ম্যাচে রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে নামে সিলেট স্ট্রাইকার্স। ‘ঘরের দল’কে শতভাগ সমর্থন দিতে গ্যালারি মেতেছিল ‘গোলাপি উৎসবে’! কিন্তু ২২ গজের গল্পটা ছিল অন্যরকম। নিজেদের ‘হাউসফুল’ দর্শকের সামনে এবারের বিপিএলে সবচেয়ে বাজে ব্যাটিংটাই করল মাশরাফির দল। রংপুরের দুই নতুন বলের বোলার শেখ মেহেদী হাসান ও আজমতউল্লাহ ওমরজাইর বোলিংয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে সিলেট। স্কোরবোর্ডে ১৮ রান তুলতেই ৭ উইকেট নেই বিপিএলের পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ দলটির! বিপিএলের সর্বনিম্ন রানের রেকর্ড (৪৪) না হয়ে যায়। কিন্তু হলো না। সেখান থেকে সিলেটেরই ঘরের ছেলে তানজিম হাসানকে নিয়ে অধিনায়ক মাশরাফি প্রতিরোধ গড়েন। ৪১ রান করেন তানজিম, মাশরাফি করেছেন ২১। আর তাতেই পুরো ২০ ওভার খেলে ৯ উইকেটে ৯২ করে সিলেট। যা ১৫.৪ ওভারে ৬ উইকেট হাতে রেখে টপকে যায় রংপুর।
এবারের আসরে সিলেট স্ট্রাইকার্সের জার্সির রং গোলাপি। দলকে সাহস জোগাতে দর্শক-সমর্থকরাও একই রংয়ের জার্সি পরে হাজির হয়েছেন সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উত্তর কিংবা দক্ষিণ, পূর্ব কিংবা পশ্চিম সবদিকের গ্যালারিতে গোলাপি রংয়ের ঢেউ। প্রতিপক্ষ রংপুর রাইডার্সের সমর্থক যে একেবারেই নেই, তা নয়। কিন্তু তাদের সংখ্যার উপমা হবে ‘বিশাল সমুদ্রে একটি ডিঙি নৌকা’র মতো! ম্যাচটি শুরু হয় বেলা ২টায়। কিন্তু বেলা ১টার দিকেই স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে ছিল দর্শকদের উপস্থিতি। সময় যতো গড়িয়েছে, গ্যালারিতে দর্শক বেড়ে প্রায় পূর্ণ হয়েছে। দর্শক না বলে সরাসরি সিলেট স্ট্রাইকার্সের সমর্থক বলাই ভালো! ২০ মিনিট মধ্যে লাক্কাতুরা স্টেডিয়ামের গ্যালারি গোলাপি রং ধারণ করে। সিলেট স্ট্রাইকার্সের জার্সির সে রং ছড়িয়ে পড়ে মাঠের পাশের টিলাতেও। বিপিএলের কোনো দলের জন্য এমন একতরফা সমর্থন শেষ কবে দেখা গিয়েছিল, সেটা গবেষণার বিষয়। রংপুর রাইডার্সের একটা ব্যানার ছাড়া গ্যালারির সবখানেই যে সিলেটের দাপট!
সিলেট স্ট্রাইকার্সকে নিয়ে যে বাড়তি আগ্রহ, এর পরিণতি কী? কিন্তু ঘরের মাঠ, বিপুল সমর্থন, দর্শকদের প্রত্যাশা চুলোয় পুড়িয়ে সোচনীয় পরাজয় বরণ করল সিলেট স্ট্রাইকার্স। উম্মাদনার সকল আয়োজন নীল হলো হতাশার মোড়কে। অথচ ঘরের মাঠের অনুক‚ল পরিবেশ-প্রতিবেশের কোনো চাপ দেখা গেল না সিলেট স্ট্রাইকার্সের ব্যাটিংয়ে। টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামে সিলেট স্ট্রাইকার্স। এর পরের চিত্রটা কেবলই আসা-যাওয়ার! ৪ রানে টম মুরসকে হারানো সিলেটের স্কোর ১২ রানে থাকতে থাকতে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন নাজমুল হোসেন শান্ত, তৌহিদ হৃদয়, মুশফিকুর রহিম আর জাকির হাসান! ১৮ রানে নেই হয়ে যায় সিলেটের ৭ উইকেট! বিপিএলের ইতিহাসে সর্বনিম্ন ৪৪ রানে আটকে পড়ার রেকর্ড খুলনার; ২০১৬ বিপিএলে রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে। একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে এদিন সর্বনিম্ন রানে আটকে যাওয়ার ভয় চেপে ধরেছিল সিলেট স্ট্রাইকার্সকে। তা হতে দেননি তানজিম হাসান সাকিব আর মাশরাফি। ধ্বংস্ত‚পে দাঁড়িয়ে লড়াই করেন এ দুজন। গড়েন ৪৮ রানের জুটি। হাসান মাহমুদের বলে রবিউল হকের দারুণ ক্যাচে পরিণত হয়ে মাশরাফির বিদায়ে ভাঙে এ জুটি। ২১ বলে দুই ছক্কায় ২১ রান করেন দলনায়ক। সাকিব তখনও লড়ে যাচ্ছিলেন। খানিক পরে তিনিও ফিরে যান হাসান মাহমুদের বলে বোল্ড হয়ে। তবে ফেরার আগে ৩৬ বলে পাঁচ চার আর দুই ছয়ে ৪১ রান করে দলকে শত রানের কাছাকাছি যাওয়ার পথ করে দেন সাকিব। ২০ ওভার শেষে ৯ উইকেটে ৯২ রান দাঁড়ায় সিলেটের স্কোর। হাসান মাহমুদ ৪ ওভারে ১২ রানে ৩টি, আজমতউল্লাহ ওমরাজাই ৪ ওভারে ১৭ রানে ৩টি, মেহেদি হাসান ৪ ওভারে ১২ রানে ২টি আর হারিস রউফ ৪ ওভারে ১৯ রানে নেন ১ উইকেট।
আগের দিনই সিলেটের এই ম্যাচের উইকেট দেখে বড় স্কোরের সম্ভাবনাটা উড়িয়ে দিয়েছিলেন স্বাগতিক অধিনায়ক মাশরাফি। বল কিছুটা থেমে আসবে, বাঁক খাবে- এমনই ছিল মাশরাফির ধারণা। তবে সেটা যে ১৮ রানে ৭ উইকেট হারানোর মতো নয়, রংপুরের রান তাড়ায় তা বোঝা গেছে। সিলেটের ছোট্ট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে রংপুরের ওপেনার রনি তালুকদার খেলেছেন স্বাভাবিক গতিতে। তার ৩৮ বলে ৪১ রানের ইনিংসে শেষ পর্যন্ত সহজেই জিতেছে দলটি। ২টি চার ও ২টি ছক্কা ছিল রনির ইনিংসে। মাঠ ভর্তি সিলেটের সমর্থকদের সামনে জয়ের পর রংপুরের ক্রিকেটার ও ম্যানেজমেন্টে সদস্যরা সিলেট স্টেডিয়ামে আসা সমর্থকদের অভিবাদনের জবাব দিয়েছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।