পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : দেশের রাজনীতি থেকে সৌহার্দ্য সম্প্রীতি উঠে গেছে অনেক আগেই। আদর্শ নীতি-নৈতিকতার বদলে ক্ষমতাকেন্দ্রিক প্রতিহিংসা, বিদ্বেষ ও কাদা ছোড়ার রাজনীতিই মূলত এ জন্য দায়ী। তবে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন মত-পথের নেতাদের মধ্যে সৌহার্দ্য দেখা যাচ্ছে।
২১ মাস কারাভোগের পর দুর্নীতির বিরুদ্ধে জেহাদ করা মাহমুদুর রহমান মান্নাকে দেখতে হাসপাতালে যাচ্ছেন বিভিন্ন দলের নেতারা। বিএনপির নেতা সাদেক হোসেন খোকার সঙ্গে টেলিফোনের কথোপকথন ফাঁস হওয়ার সেনা বিদ্রোহে উসকানি ও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মান্নার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা হয়। ২০১৫ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি তাকে গ্রেফতার করা হয়। প্রথমে গ্রেফতারের কথা অস্বীকার করা হলেও পরে স্বীকার করা হয়। দীর্ঘ আইনি চেষ্টায় তিনি ১৮ ডিসেম্বর জামিনে মুক্তি পেয়ে চিকিৎসা নিতে বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি হন।
দুর্নীতিবিরোধী অবস্থান নেয়ায় এক সময়ের আওয়ামী লীগ নেতা মাহমুদুর রহমান মান্নার সঙ্গে সরকারের ‘সাপে নেউলে’ সম্পর্ক। কিন্তু সবাইকে অবাক করে মান্নাকে দেখতে হাসপাতালে যান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। মান্নাকে ওবায়দুল কাদেরের দেখতে যাওয়ার খবর মিডিয়ায় ফলাও করে প্রচার হয়। অতঃপর মান্নাকে দেখতে যান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাসদের সভাপতি আ স ম আবদুর রব, বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা: জাফরউল্লাহ চৌধুরীসহ অনেক প্রভাবশালী নেতা। সড়ক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের হাসপাতালে মান্নাকে ফুল উপহার দেন। দু’নেতা আধা ঘণ্টা পুরনো দিনের স্মৃতিচারণ করেন। সেখান থেকেই বঙ্গবন্ধু মেডিক্যালের ভিসি কামরুল হাসানকে ফোন করে সুচিকিৎসার অনুরোধ করেন। উল্লেখ্য, মান্না একমাত্র নেতা যিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিপি নির্বাচিত হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। ডাকসু নির্বাচনে ভিপি পদে তখনকার জাসদ ছাত্রলীগ নেতা মাহমুদুর রহমান মান্নার কাছে পরপর দুইবার পরাজিত হয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত ছাত্রলীগের নেতা ওবায়দুল কাদের। মান্না নব্বইয়ের দশকের প্রথম দিকে মির্জা সুলতান রাজাসহ আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ২০০২ সালে পান সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব। সে সময় ওবায়দুল কাদের ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি ফখরুদ্দীন-মইন উদ্দিনের তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতা নেয়ার পর দলে সংস্কারপন্থী চিহ্নিত হন মান্না। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগের সম্মেলনে পদ থেকে বাদ দিলে তিনি নাগরিক ঐক্য নামে নতুন দল গড়েন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি বিতর্কিত নির্বাচনের পর ২০১৫ সালের শুরুতে ড. কামাল হোসেন ও আ স ম আবদুর রবকে নিয়ে আওয়ামী লীগ-বিএনপির বাইরে তৃতীয় একটি রাজনৈতিক জোট গঠনের চেষ্টায় নাগরিক ঐক্য গঠন করেন। মাহমুদুর রহমান মান্নাকে হাসপাতালে দেখতে ওবায়দুল কাদেরের যাওয়ার ঘটনা রাজনীতিতে সৌহার্দ্য সম্প্রীতির বহিঃপ্রকাশ। দেশের রাজনীতিতে এমনটা তেমন দেখা যায় না। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রতিপক্ষ্যের নেতার সঙ্গে যে সৌহার্দ্যরে সূচনা করলেন; তা অব্যাহত থাকবে সেটাই মানুষ প্রত্যাশা করে। বড় দলগুলোর দায়িত্বশীল নেতারা যদি জনগণের মানসিকতা বুঝে এমন সম্প্রীতির পথে হাঁটেন তাহলে দেশের রাজনীতি, গণতন্ত্রের ওপর জমাট বাঁধা কালো মেঘ কেটে যাবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।