Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ন্যাটোয় যোগদানে ফিনল্যান্ডের প্রতি তুরস্কের সবুজ সঙ্কেত

ইনকিলাব ডেস্ক : | প্রকাশের সময় : ২৬ জানুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

তুরস্কের বাধার মুখে সুইডেনকে বাদ দিয়ে একাই ন্যাটোর সদস্য হওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করতে শুরু করেছে ফিনল্যান্ড। তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েপ এরদোগান পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, ন্যাটোয় অন্তর্ভুক্তিতে সুইডেনকে সমর্থন দেবেন না তারা। এ অবস্থায় প্রতিবেশীদের রেখেই এগিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন ফিনল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেক্কা হাভিস্টো। গত বছরের মে মাসে নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশন বা ন্যাটোর সদস্য হতে যৌথভাবে আবেদন করেছিল সুইডেন ও ফিনল্যান্ড। মূলত ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের বিষয়টি মাথায় রেখে নিজেদের নিরাপত্তা জোরদার করতেই পশ্চিমা এই সামরিক জোটে ঢুকতে ব্যস্ত হয়েছে নরডিক দেশ দুটি। তবে শুরু থেকেই এ বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছে তুরস্ক। বিশেষ করে, কুর্দি ইস্যুতে দ্বন্দ্ব থাকা সুইডেনের বিষয়ে। তার ওপর এ সপ্তাহে স্টকহোমে তুর্কি দূতাবাসের সামনে উগ্র ডানপন্থিদের বিক্ষোভ এবং পবিত্র কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় তুরস্কের তীব্র ক্ষোভের মুখে পড়েছে সুইডেন। গত সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগান কঠোর ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, ন্যাটোর সদস্যপদ পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনোভাবেই তুরস্কের সমর্থন পাবে না সুইডেন। শুধু তা-ই নয়, আঙ্কারা জানিয়েছে, কোরআন পোড়ানোর প্রতিবাদে তারা সুইডিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রীর একটি আসন্ন সফর বাতিল করেছে। ওই সফরে সুইডেনের ন্যাটো সদস্যপদ পাওয়ার বিষয়ে আলোচনা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে সুইডেনের ন্যাটোয় যোগদানের ভবিষ্যৎ একেবারেই অনিশ্চিত। এ অবস্থায় প্রতিবেশীকে বাদ দিয়ে একা এগিয়ে যাওয়ার চিন্তাভাবনা শুরু করেছে ফিনল্যান্ড। এটাকে তারা তুরস্কের সবুজ সঙ্কেত বলে মনে করছে। মঙ্গলবার ফিনিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, নরডিক দেশ দুটি একসঙ্গে ন্যাটোয় যোগদানই তাদের ‘প্রথম পছন্দ’। তবে যদি এমন কিছু ঘটে, যার কারণে সুইডেন দীর্ঘদিন এগিয়ে যেতে না পারে, সেক্ষেত্রে অবশ্যই পরিস্থিতি মূল্যায়ন করতে হবে ফিনল্যান্ডকে। তিনি বলেন, ন্যাটোয় যৌথ সদস্যপদ এখনো সম্ভব। তবে মনে গভীরে আমরা ঠিকই বিকল্পগুলো বিবেচনা করছি। ন্যাটোর ৩০ সদস্যের মধ্যে কেবল তুরস্ক এবং হাঙ্গেরিই ফিনল্যান্ড-সুইডেনের আবেদন এখনো অনুমোদন করেনি। পুরোনো সব সদস্যের সমর্থন ছাড়া এ জোটে কেউ নতুন সদস্য হতে পারে না। তাই সুইডেনকে ন্যাটোর সদস্য হতে হলে অবশ্যই তুরস্কের সম্মতি আদায় করতে হবে। তবে, আগামী মে মাসে তুরস্কে নির্বাচন রয়েছে। এ অবস্থায় সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ধর্মীয় রক্ষণশীলদের ভোটব্যাংক হাতছাড়া করতে চাইবেন না এরদোগান। ফিনল্যান্ডের সঙ্গে কার্যত তুরস্কের তেমন কোনো বিরোধ নেই। বরং প্রক্রিয়ার শুরুতে ফিনিশদের আলাদাভাবে আবেদন করার পরামর্শ দিয়েছিল আঙ্কারা। কিন্তু ওই সময় সেই পরিকল্পনার বিরোধিতা করে ফিনল্যান্ড-সুইডেন উভয়ই। এমনকি ন্যাটো মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গও এর বিরুদ্ধে ছিলেন বলে ব্লুমবার্গকে জানিয়েছেন নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক দুই তুর্কি কর্মকর্তা। ফিনল্যান্ড আলাদাভাবে আবেদন করলে তুরস্ক সেটি দ্রুত অনুমোদন করবে কি না সে বিষয়ে সরাসরি মন্তব্য না করলেও ওই কর্মকর্তারা বলেছেন, আঙ্কারা-হেলসিঙ্কি সহযোগিতার সম্পর্কে অনেকটাই সন্তুষ্ট তুরস্ক। এটি তাদের সিদ্ধান্তেও প্রতিফলিত হবে। ব্লুমবার্গ, আল-জাজিরা, টিআরটি ওয়ার্ল্ড।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ