মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
উনিশ শতকের বাংলায় সশস্ত্র কৃষক আন্দোলনের নেতা ও ‘বাঁশের কেল্লা’ খ্যাত তিতুমীরের জীবনের ওপর একটি মঞ্চ নাটকের শো ভারতের সবচেয়ে মর্যাদাজনক থিয়েটার ফেস্টিভ্যালের কর্মকর্তারা আচমকা বাতিল করে দিয়েছেন। নাটকটির পরিচালক জয়রাজ ভট্টাচার্য বলেছেন, সম্পূর্ণ রাজনৈতিক কারণেই যে তাদের আমন্ত্রণ জানানোর পরও এই শো বাতিল করা হয়েছে, তা নিয়ে তার বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই। তিনি বলেন, ‘তিতুমীরের মতো ইতিহাসের একজন অসাম্প্রদায়িক ও ঔপনিবেশিকতা-বিরোধী নায়ককে যে ভারতের বর্তমান শাসকগোষ্ঠীর পছন্দ হবে না, এটা বুঝতে কোনও অসুবিধা হওয়ার কারণ নেই। দিল্লির যে সর্বভারতীয় থিয়েটার উৎসবে ‘তিতুমীর’কে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল, সেই ‘ভারত রঙ্গ মহোৎসব’ আকারে, পরিসরে ও মর্যাদায় ভারতের সবচেয়ে বড় নাট্যমেলা বললেও সম্ভবত ভুল হবে না। ওই উৎসবের আয়োজক, সরকারি অর্থায়নে চলা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা (এনএসডি) অবশ্য দাবি করছে, রিভিউয়ের জন্য তিতুমীর নাটকের নির্মাতারা যথাসময়ে তাদের শোর ভিডিও রেকর্ডিং পাঠাতে পারেননি বলেই তারা উৎসবে ওই নাটকের শো বাতিল করতে বাধ্য হয়েছেন। তবে নিজে থেকে ওই নাটকটিকে উৎসবে আমন্ত্রণ জানানোর পরও কেন এনএসডি কর্তৃপক্ষ নাটকের ভিডিও রেকর্ডিং দেখতে চাইছে, তারা এ প্রশ্নের কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি। এদিকে দিল্লিতে তিতুমীর নাটকের শো বাতিল হওয়ার পর পশ্চিমবঙ্গে অনেকেই যেমন এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাচ্ছেন, তেমনি দক্ষিণপন্থী ও হিন্দুত্ববাদীরা আবার সামাজিক মাধ্যমে তাদের উল্লাস ব্যক্ত করতেও দ্বিধা করছেন না। তিতুমীর বাংলায় ‘সাম্প্রদায়িকতার বিষ’ ছড়িয়েছিলেন এবং উগ্র ওয়াহাবি ভাবধারার প্রচারক ছিলেন, এই যুক্তি দিয়ে তারা বলছেন তিতুমীরের শো বন্ধ করা হলে সেটা একদম সঠিক কাজই হয়েছে! বাংলা থিয়েটার জগতের লেজেন্ড উৎপল দত্ত তিতুমীরের জীবন নিয়ে একটি নাটক লিখেছিলেন সত্তরের দশকে। তার নাট্যগোষ্ঠী পিএলটি ‘তিতুমীর’ নামে সেই নাটকটি সত্তর ও আশির দশকে বহুবার মঞ্চস্থ করেছে। তখন ওই নাটকে নামভূমিকায় অভিনয় করতেন অভিনেতা সত্য বন্দ্যোপাধ্যায়। ভারত রঙ্গ মহোৎসবে ‘তিতুমীরে’র মঞ্চায়ন বাতিল হয়েছে, এ খবর সামনে আসার পরই পশ্চিমবঙ্গের সাবেক বিজেপি সভাপতি তথাগত রায় টুইট করেন, ‘কেন্দ্রীয় নাট্য উৎসবে তিতুমীর নিয়ে উৎপল দত্তের নাটক মঞ্চস্থ করায় নিষেধাজ্ঞা জারি হয়ে থাকলে ঠিক কাজ হয়েছে। বাংলায় সাম্প্রদায়িক বিষ প্রচার করায় এবং হিন্দু ও মুসলমান, এই দুধরনের বাঙালির মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করায় তিতুমীর অগ্রগণ্য। বাঙালি হিন্দুর এই আদিখ্যেতা ন্যাক্কারজনক।’ এর পাশাপাশি শো বাতিল করার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদেও মুখর হয়ে উঠেছেন পশ্চিমবঙ্গের বহু নাট্যপ্রেমী। এবারের ভারত রঙ্গ মহোৎসবের থিম হল ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ‘আনসাং হিরোজ’ বা নেপথ্যের নায়করা। সেদিকে ইঙ্গিত করে তিতুমীর নাটকের ফেসবুক ওয়ালে জনৈক হৈমন্তী মুখোপাধ্যায় লিখেছেন, ‘তাহলে সরকারের মতে তিতুমীর আনসাং হিরোজের আওতাতেও পড়েন না। এটাও দেখার ছিল শেষমেশ!’ বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।