Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে তীব্র যানজট

চরম দুর্ভোগে লাখো পর্যটক

| প্রকাশের সময় : ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

রফিকুল ইসলাম সেলিম : চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে চরম বিশৃঙ্খলায় সৃষ্ট তীব্র যানজটে দুর্ভোগে পড়েছেন লাখো পর্যটক। রিকশা, অটোরিকশা, টমটম, চাঁদের গাড়িসহ হালকা যানবাহনের ঢল আর মহাসড়কে চলে আসা হাটবাজারের কারণে তীব্র যানজট হচ্ছে।
এতে আটকা পড়ছে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের শহর কক্সবাজারমুখী হাজার হাজার যানবাহন। উত্তাল সাগরের নীল ঢেউ, প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন আর বান্দরবানের সুউচ্চ পাহাড় দেখার আনন্দ মহাসড়কেই মাটি হয়ে যাচ্ছে দেশি-বিদেশি ভ্রমণ পিয়াসীদের।
চালক ও সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মহাসড়কে চরম অব্যবস্থার কারণে সৃষ্ট বিশৃঙ্খলা ও যানজট অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত দেড়শ’ কিলোমিটার এই মহাসড়ক পাড়ি দিতে পাঁচ থেকে সাত ঘণ্টা সয়ম লেগে যাচ্ছে।
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে চট্টগ্রাম মহানগরীর কর্ণফুলী সেতুর পর থেকে দোহাজারী পর্যন্ত এলাকা একেবারেই সরু এবং এই অংশে রয়েছে অসংখ্য বাঁক। তার উপর অন্তত দশটি পয়েন্টে হাটবাজার উঠে এসেছে মহাসড়কে। মহাসড়কের কয়েকটি এলাকায় সড়কের অবস্থা বেহাল। আস্তর উঠে গেছে, রাস্তাজুড়ে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এসব গর্তে আছড়ে পড়ছে যানবাহন। মহাসড়কজুড়ে হালকা যানবাহনের ঢলের কারণে স্বাভাবিক যানবাহন চলাচল ব্যাহত হয়ে তীব্র যানজট হচ্ছে।
গ্রীন লাইন পরিবহনের বাস চালক আবুল হাশেম বলেন, এখন পাঁচ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা আসা-যাওয়া করা যাচ্ছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দূরত্ব সাড়ে তিনশ’ কিলোমিটার। অথচ দেড়শ’ কিলোমিটার চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক পার হতে সময় লাগছে ছয় থেকে সাত ঘণ্টা।
এস আলম বাস সার্ভিসের চালক ওয়াহিদুল আলম বলেন, মহাসড়কের উপর হাটবাজারের কারণে অন্তত দশটি পয়েন্টে যানজটে আটকা পড়ে এক ঘণ্টা সময় অপচয় হচ্ছে। এসব বাজারে শৃঙ্খলা আনা গেলে মহাসড়ক পার হতে এক ঘণ্টা সময় কম লাগবে বলেও জানান তিনি।
চালকরা বলছেন, চট্টগ্রাম মহানগীর থেকে বের হতে প্রথমে কর্ণফুলী সেতু এলাকায় চরম বিশৃঙ্খলার মুখোমুখি হতে হয়। সেতুর উত্তর প্রান্ত পার হতে আধা ঘণ্টার বেশি সময় যানজটে আটকা পড়তে হচ্ছে। গোল চত্বরের এই স্থায়ী যানজটের মূলে রয়েছে রাস্তার উপর গড়ে উঠা অবৈধ বাস, মিনিবাস ও টেম্পু স্ট্যান্ড। সেখানে সড়কে দাঁড় করিয়ে দক্ষিণ চট্টগ্রামমুখি সব গণপরিবহনে যাত্রী তোলা হয়।
সেতু পার হওয়ার পর প্রথম যানজটে পড়তে হয় মইজ্জ্যার টেকে, এরপর শান্তির হাট। পটিয়া পৌরসভা এলাকার প্রায় ১০ কিলোমিটার মহাসড়কে তীব্র যানজট এখন স্থায়ী রূপ নিয়েছে। মহাসড়কে চলাচলকারি যানবাহনগুলোকে পটিয়া পার হতে পৌনে এক ঘণ্টা থেকে সোয়া এক ঘণ্টা লেগে যায়।
দোহাজারী, কেরানীহাট, ঠাকুরদীঘির পাড়, পদুয়া বাজার, লোহাগাড়া আমিরাবাদ পার হয়ে ফের তীব্রজটের মুখোমুখি হতে হয় চকোরিয়ার চিরিংগা স্টেশনে। চিরিংগা বাজার পার হতে কোনো কোনো সময় আধা ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা লেগে যায় বলে জানান চালকেরা।
এখন পর্যটনের ভরা মৌসুম চলছে, সেই সাথে থার্টি ফাস্ট নাইটকে কেন্দ্র করে কক্সবাজারমুখি পর্যটকের ঢল নেমেছে। বড় বড় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান করপোরেট হাউজগুলোর বার্ষিক সম্মেলন হচ্ছে কক্সবাজারে। বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনও চলছে সেখানে। এসব আয়োজনকে ঘিরে প্রতিদিন দেশ-বিদেশের অংসখ্য মানুষে কক্সবাজারে যাচ্ছেন।
আকাশ পথে কক্সবাজার যাওয়া আসার সুযোগ এখনো সীমিত। হাতে গোনা কয়েকটি এয়ার লাইন্সের সার্ভিস রয়েছে কক্সবাজারে। ফলে কক্সবাজার আসা-যাওয়ার জন্য সড়ক পথই একমাত্র ভরসা। কিন্তু সড়ক পথে এই বিশৃঙ্খল অবস্থা পর্যটকদের চরম দুর্ভোগের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চট্টগ্রাম


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ