Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মারণ রোগের অভিশাপ, আমাজনের শিশুদের ব্রাজিলে নিয়ে চিকিৎসা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৪ জানুয়ারি, ২০২৩, ৮:০৭ পিএম

সভ্য সমাজ থেকে বহু দূরে অরণ্যবাসী তারা। প্রাচীনকাল থেকে প্রায় একইরকম জীবনযাত্রা। দক্ষিণ আমেরিকায় বিশেষত আমাজনের গভীর অরণ্যে এমন বেশ কিছু প্রাচীন জনজাতির বাস। তাদের কাছে কোনওভাবেই আধুনিকতার আলো পৌঁছে দেয়া যায়নি। আর পরবর্তী সময়ে জঙ্গল সাফ করে তাদের বিপদের দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। সবমিলিয়ে অরণ্যের আশ্রয় শেষ পর্যন্ত তাদের জন্য ততটা নিরাপদ আর থাকছে না। ব্রাজিলের উত্তরে রোরেইমা অঞ্চলের ইয়োনোমামি জনজাতি ভুগছে মারণ ব্যধিতে। দ্রুত রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। পরিস্থিতি এতটাই সঙ্গীন যে জরুরি অবস্থা জারি করতে হয়েছে। এরপরই ব্রাজিলের লুলা প্রশাসন তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নিল। তাদের বিমানে করে উড়িয়ে আনা হয়েছে শহরে, চিকিৎসার জন্য।

ব্রাজিলের উত্তরে ভেনেজুয়েলা-গায়ানা সীমান্তে রোরেইমা। এখানে ইয়োনামামি জনজাতির ২৮ হাজার মানুষের বসবাস। শিকার, তীর-ধনুক, আগুন নিয়ে খেলা আর ছোটখাটো কৃষিকাজ করে দিন কাটে তাদের। কোনওক্রমে বানানো গ্রামগুলিতে থাকেন তারা। সেখানেই গত কয়েক বছর ধরে ছড়িয়ে পড়েছে দূষণের বিষ। ধীরে ধীরে শিশুদের গ্রাস করছে অপুষ্টি। রোরেইমা থেকে শয়ে শয়ে শিশুর মৃত্যু খবর পেয়ে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। এয়ারলিফট করে শহরে এনে তড়িঘড়ি ১৬ জনের চিকিৎসা করানো হয়েছে।

শুধুই অসুখ-বিসুখ, দূষণ নয়, আমাজনের গভীরে থাকা ইয়োনামামিদের এ পরিস্থিতির জন্য রাজনীতিকেও দায়ী করা হচ্ছে। বর্তমান বামপন্থী লুলা প্রশাসন আগের বলসোনারো প্রশাসনকে দুষেছে। ব্রাজিলের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর বিরুদ্ধে পরিবেশ সংগঠনগুলির অভিযোগ ছিল, কাঠ মাফিয়াদের হাত শক্ত করছেন তিনি। নির্বিচারে আমাজনের জঙ্গল নিধন করা হচ্ছে। বলসোনারো সব জেনেও তা রুখছেন না। এবার ইয়োনামামি জনজাতির অসুস্থতার নেপথ্যেও তাকেই দায়ী করলেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট লুলা। তিনি গত শনিবার রোরেইমা গিয়েছিলেন সরেজমিনে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে। তারপরই প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত হয়, শিশুদের ওখান থেকে আকাশপথে উড়িয়ে এনে শহরে চিকিৎসা করানো হোক।

রিপোর্ট বলছে, ইয়োনোমামিদের সংরক্ষিত এলাকায় ঢুকে পড়েছে মাফিয়ারা। এরা অবশ্য জঙ্গল সাফ করে কাঠ পাচারের চেয়েও বেশি আগ্রহী খননকাজে। এই এলাকা নাকি সোনা, হীর ও অন্যান্য খনিজ সম্পদের বিশাল সংগ্রহ। আর যথাযথ পদ্ধতি অবলম্বন না করে খননকাজের জন্য পানিতে মিশছে পারদ। বিষাক্ত হচ্ছে খাদ্যসামগ্রী। সেখান থেকেই শিশুদের শরীরে এত সমস্যা – অপুষ্টি, ত্বকের রোগ। সূত্র: রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ