Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সুইডেনে কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় মুসলিম উম্মাহ চরমভাবে ক্ষুব্ধ

বিভিন্ন ইসলামী দলের নেতৃবৃন্দ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৪ জানুয়ারি, ২০২৩, ৬:৪৫ পিএম

সুইডেনে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় উগ্রবাদীদের দ্বারা পবিত্র কোরআন পোড়ানোর ধৃষ্টতার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে বিভিন্ন ইসলামী দলের নেতৃবৃন্দের বিবৃতি অব্যাহত রয়েছে। বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, পবিত্র কোরআন পুড়িয়ে ফেলার ঘটনায় মুসলিম উম্মাহ চরমভাবে ক্ষুব্ধ। অবিলম্বে সুইডেন সরকারকে মুসলমানদের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে এবং বিতর্কিত ব্যক্তিকে কঠোর শাস্তি দিতে হবে। নতুবা মুসলিম বিশ্ব সুইডেনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। পীর সাহেব চরমোনাই ঃ সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় উগ্রবাদীদের দ্বারা পবিত্র কোরআন পোড়ানোর ধৃষ্টতা এবং কোরআনে অগ্নিসংযোগ করে পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলদেশের আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই।

আজ এক বিবৃতিতে পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, সুইডেনে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় উগ্র ডানপন্থী রাজনৈতিক দল হার্ড লাইনের বিতর্কিত নেতা রাসমুস পালুদান পবিত্র কোরআনে অগ্নিসংযোগ করেছেন। যা শুধু কোরআন নয়; বরং বিশ্বের সকল মুসলমানসহ শান্তিকামী প্রতিটি মানুষের কলিজাকে দগ্ধ করার শামিল। তিনি বলেন, আল কোরআন মুসলমানের কাছে নিজ জানের চেয়েও প্রিয়। এক বর্ণবাদী ও ইসলামবিদ্বেষী ব্যক্তিকে পবিত্র কোরআন পোড়ানো অনুমতি দিয়ে সুইডেন সরকার চরম অন্যায় করেছে। তিনি বলেন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার নামে এমন ইসলামবিরোধী কাজের অনুমতি কোনোমতেই মেনে নেয়া যায় না। অবিলম্বে সুইডেন সরকারকে মুসলমানদের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে এবং বিতর্কিত ব্যক্তিকে কঠোর শাস্তি দিতে হবে। নতুবা মুসলিম বিশ্ব সুইডেনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। ইসলামী আন্দোলনের আমীর আরো বলেন, পৃথিবীর কোনো সভ্য জাতি বা দেশ কারো মৌলিক বিশ্বাসের ওপর এভাবে আঘাত হানতে পারে না। এর আগেও ২০২০ সালে সুইডেনে একই কাজ করেছিল উগ্রপন্থীরা। এ নীতিহীন ন্যাক্কারজনক অপকর্মের ফলে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতার সৃষ্টি হয়েছিল, যাতে বহু মানুষ নিহত হয়েছিল। ফলে শুধু মুসলমান নয়; বরং বিশ্বের শান্তিকামী দেশ ও মানুষ থেকে ধিক্কার ও ঘৃণা কুড়িয়েছিল সুইডেন। এগুলো কোনোভাবেই বাক-স্বাধীনতা নয়; বরং বাক-স্বাধীনতার নামে চরম ধৃষ্টতা। এক্ষেত্রে সুইডেন সরকারের নীরব ভূমিকা বিশ্ববাসীকে হতবাক করেছে। তিনি মুসলিম নেতৃবৃন্দসহ বিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, এমন নিকৃষ্ট কর্মকা- বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে জাতিসঙ্ঘ, ওআইসি, আরবলীগসহ সকল মুসলিম দেশ, নেতৃবৃন্দ ও শান্তিকামী মানুষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
সম্মিলিত সংগ্রাম পরিষদ ঃ সুইডেনে কোরআন পোড়ানোর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে সম্মিলিত সংগ্রাম পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ মোস্তফা খান, ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জোহরা খাতুন ও মহাসচিব মাওলানা আনোয়ার হোসাইন বলেছেন, সারা বিশ্বে মুসলমানদের নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। মুসলমানদের ওপর গণহত্যা, দখল, নির্যাতন, লুটপাট চালানোর সাথে সাথে তথাকথিত সভ্য দেশগুলো মুসলমানদের কলিজায় আঘাত দিয়ে যাচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে সুইডেনে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় উগ্রবাদীদের দ্বারা পবিত্র কোরআন পোড়ানো হয়েছে। যা মুসলমানদের প্রতি চরম ধৃষ্টতা। এ গর্হিত কাজ কোনোভাবেই মত প্রকাশের স্বাধীনতা হতে পারে না; বরং মত প্রকাশের স্বাধীনতার আড়ালে পরিকল্পিতভাবে মুসলমানদের পবিত্র মূল্যবোধকে অবমাননা করা হয়েছে। এসব দেশ নিজেদের সভ্য বলে দাবি করে এবং অন্য দেশকে মানবাধিকারসহ নানা বিষয়ে ছবক দেয়। কিন্তু পৃথিবীর প্রায় ২০০ কোটি মুসলমানদের প্রাণের চেয়ে প্রিয় কোরআন পুড়িয়ে, মুসলমানদের কলিজা দগ্ধ করে সুইডেন কোন সভ্যতার পরিচয় দিচ্ছে। তা বিশ্বের শান্তিকামী ও বিবেকসম্পন্ন মানুষের বোধগম্য নয়। আজ মঙ্গলবার এক যৌথ বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ইতোপূর্বে ২০২০ সালে সুইডেনে একই কাজ করেছিল উগ্রপন্থিরা। কিন্তু সুইডেন সরকার বা জাতিসংঘ কেউ-ই তার বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। ফলে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়েছে।
বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি ঃ বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি ও ইসলামী ঐক্য জোটের চেয়ারম্যান মাওলানা অ্যাডভোকেট আব্দুর রকিব আজ মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে সুইডেনে পবিত্র কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, সুইডেনে কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় নিজেদের মর্যাদা, অধিকার ও মূল্যবোধকে টিকিয়ে রাখতে মুসলমানদেরকেই দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কোরআন ও মুসলমানদের জাতিসত্তার প্রশ্নে সকল মুসলিম নেতাকে ঐক্যবদ্ধ হওয়া এখন ঈমানের দাবি। আমরা অবিলম্বে পবিত্র কোরআনে অগ্নিসংযোগকারীদের গ্রেফতার ও সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত এবং এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার পুণরাবৃত্তি রোধে সুইডেন সরকার ও একই সাথে ওআইসি, আরবলীগ, জাতিসংঘসহ বিশ্বের বিবেকবান সকল মানুষকে এহেন ঘৃণ্য কর্ম বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। তিনি ইসলাম বিদ্বেষী মুসলমানদের দুশমন সুইডেনের সকল প্রকার পণ্য বর্জন করতে হবে। পবিত্র কোরআন পুড়িয়ে ইসলামের অগ্রযাত্রাকে দমিয়ে রাখা যাবে না বলেও তিনি উল্লেখ করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ