মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : জাতিসংঘের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্মূল্যায়ন করছে ইসরাইল। পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে অবৈধ বসতি স্থাপন বন্ধের আহ্বান রেখে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব পাস হওয়ার পর এ উদ্যোগ নিয়েছে ইসরাইল। গত শনিবার ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জাতিসংঘের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্মূল্যায়নের বিষয়টি জানিয়েছেন। শুক্রবার নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্যের মধ্যে ১৪ সদস্য ইসরাইলের বসতি স্থাপনের বিরুদ্ধে ভোট দেয়। ভেটো ক্ষমতার অধিকারী যুক্তরাষ্ট্র ভোটদানে বিরত থাকে। ফলে ইসরাইলের বসতি স্থাপনের বিরুদ্ধে এই প্রথম শক্তিশালী কোনো পদক্ষেপ নিতে সক্ষম হলো জাতিসংঘ। প্রস্তাব পাস হওয়ার পর একে লজ্জাজনক হিসেবে অভিহিত করেছেন নেতানিয়াহু। ফিলিস্তিনি ভূখ-ে অবৈধ ইসরাইলি বসতি স্থাপন বন্ধে নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব পাস হওয়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে ইসরাইল। এ ঘটনায় প্রস্তাব উত্থাপনকারী সেনেগাল ও নিউজিল্যান্ড থেকে ইসরাইলি রাষ্ট্রদূতদের দেশে ফেরার নির্দেশ দিয়েছে তেল আবিব। নিরাপত্তা পরিষদে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব পাসের পর গত শনিবার এ সিদ্ধান্ত নেয় ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দফতর। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে ফক্স নিউজ। সেনেগাল ও নিউজিল্যান্ডে থাকা ইসরাইলি রাষ্ট্রদূতরা দেশে ফিরলে তাদের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করবেন নেতানিয়াহু। এরইমধ্যে সেনেগালকে দেওয়া ইসরাইল সরকারের সব ধরনের সাহায্য বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন ক্ষুব্ধ ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী। সেনেগালের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পূর্বনির্ধারিত ইসরাইল সফর বাতিলেরও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। খবরে বলা হয়, ফিলিস্তিনি ভূখ-ে ইসরাইলি বসতি স্থাপন বন্ধের পক্ষে নিরাপত্তা পরিষদে পাস হওয়া প্রস্তাবও প্রত্যাখ্যান করেছে ইসরাইল। এই প্রস্তাবের নিন্দা জানানো পাশাপাশি তারা জানিয়েছে, প্রস্তাবের কোনও শর্ত মানতে বাধ্য নয় ইসরাইল। ২৩ ডিসেম্বর ২০১৬ শুক্রবার ১৫ সদস্যবিশিষ্ট জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে এ সংক্রান্ত প্রস্তাবটি তুলে ধরা হয়। ইসরাইলি বসতি স্থাপনের বিরুদ্ধের ওই প্রস্তাবে বলা হয়, ১৯৬৭ সাল থেকে ফিলিস্তিনি ভূখ-ে ইসরাইল যে বসতি স্থাপন করে যাচ্ছে, তার কোনও আইনি ভিত্তি নাই। ভোট দান থেকে বিরত থাকে যুক্তরাষ্ট্র। বাকি ১৪টি দেশ এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিলে তা পাস হয়। প্রস্তাবটিকে আন্তর্জাতিক আইনের বিজয় এবং ইসরাইলি চরমপন্থার প্রত্যাখ্যান বলে উল্লেখ করেছে ফিলিস্তিন। আর ইসরাইল বলছে, তারা এর তোয়াক্কা করে না। প্রস্তাবের কোনও শর্তই মানবেন না তারা। এক বিবৃতিতে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, এমন এক অদ্ভুত প্রস্তাব যেন কোনও খারাপ প্রতিক্রিয়া না ফেলতে পারে, এ লক্ষ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত ট্রাম্পের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত ইসরাইল। তিনি আরও বলেন, জাতিসংঘে পাস হওয়া ওই লজ্জাজনক ইসরাইল-বিরোধী প্রস্তাব ইসরাইল প্রত্যাখ্যান করে। ইসরাইল তা মানতে দায়বদ্ধ নয়। ইসরাইলকে রক্ষার জন্য জাতিসংঘে গড়ে ওঠা দলবাজি রুখতে ব্যর্থ হয়েছে ওবামা প্রশাসন। দৃশ্যপটের বাইরেই কেবল তারা সংঘাতে জড়ায়। সিরিয়া গৃহযুদ্ধের প্রসঙ্গ টেনে নেতানিয়াহু বলেন, একই সময়ে যখন সিরিয়ায় পাঁচ লাখ মানুষের হত্যা রুখতে নিরাপত্তা পরিষদ কিছুই করেনি, তখন মধ্যপ্রাচ্যে সত্যিকারের গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে তারা লজ্জাজনক দলবাজি করছে। জাতিসংঘে ইসরাইলি দূত ড্যানি ড্যানন বলেন, তাদের সরকার আশা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র এই প্রস্তাবে ভেটো দেবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, নতুন মার্কিন প্রশাসন এবং জাতিসংঘের নতুর মহাসচিব এসে নতুন কিছু করবে। এর আগে বুধবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে মিসর একটি খসড়া প্রস্তাব উত্থাপন করে। তাতে দাবি জানানো হয়, পূর্ব জেরুজালেমসহ অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখ-ে ইসরাইলি বসতি নির্মাণ জরুরি ভিত্তিতে ও পূর্ণাঙ্গভাবে বন্ধ করতে হবে। মিসরের ওই প্রস্তাবেও একইভাবে বলা হয়েছিল, ইসরাইলের ওইসব বসতির কোনও বৈধতা নেই। আর তা আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় গত বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় জাতিসংঘে এ নিয়ে ভোটাভুটির কথা ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের কয়েক ঘণ্টা আগে হঠাৎ মিসর প্রস্তাবটি প্রত্যাহার করে নেওয়ায় ভোটাভুটি স্থগিত করা হয়। পরে নিউজিল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ভেনেজুয়েলা, সেনেগালের পক্ষ থেকে একই প্রস্তাব তুলে ধরা হলে যুক্তরাষ্ট্রের ঐতিহাসিক নীরবতায় তা পাস হয়। এ প্রস্তাব পাসের প্রতিক্রিয়ায় জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের প্রধান প্রতিনিধি ব্রিটিশ বার্তা সংস্থাকে বলেন, আজ আন্তর্জাতিক আইনের বিজয়ী হওয়ার দিন। সুসভ্য ভাষা এবং সংকট নিরসন প্রক্রিয়ার জয়। এটি ইসরাইলি চরমপস্থার সুস্পষ্ট প্রত্যাখ্যান। তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ইসরাইলকে বার্তা দিয়েছে, দখল কায়েমের মধ্য দিয়ে শান্তি আর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায় না। বরং শান্তি আনতে দরকার দখল বন্ধ করা এবং ১৯৬৭ সালের সীমানা অনুযায়ী ইসরাইল রাষ্ট্রের পাশাপাশি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে শান্তিতে থাকতে দেওয়া। প্রসঙ্গত, ফিলিস্তিনিরা চায় পশ্চিম তীরে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে এবং পূর্ব জেরুজালেমকে এর রাজধানী বানাতে। ফক্স নিউজ, আনাদোলু, আল-জাজিরা, রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।