মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ডোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিকের (ডিপিআর) ফ্রন্ট লাইনের সমস্ত এলাকায় রাশিয়ান সৈন্যরা কার্যত অগ্রসর হচ্ছে, ভারপ্রাপ্ত ডিপিআর প্রধান ডেনিস পুশিলিন গতকাল রসিয়া-২৪ টেলিভিশন চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচারে বলেছেন। ‘(রাশিয়ান বাহিনী) ফ্রন্ট লাইনের সমস্ত এলাকায় কার্যত অগ্রসর হচ্ছে,’ তিনি সংবাদ উপস্থাপকের একটি সংশ্লিষ্ট প্রশ্নের উত্তরে বলেছিলেন।
ডিপিআর আঞ্চলিক প্রতিরক্ষা সদর দফতর সোমবারের শুরুতে জানিয়েছে যে, রাশিয়ান সৈন্যরা সোলেডারের কাছে ক্রাসনোপোলিভকা এবং ডভুরেচিয়ে শহরকে মুক্ত করেছে। ডিপিআর নেতা পুশিলিন ৭ ডিসেম্বর তাস-এর সাথে একটি সাক্ষাতকারে বলেছিলেন যে, ২০২২ সালের ফেব্রæয়ারি থেকে প্রজাতন্ত্রে প্রায় ৩৪০টি গ্রাম মুক্ত করা হয়েছে।
পুশিলিন জানান, রাশিয়ান বাহিনী আর্টিওমভস্কের দক্ষিণে (ইউক্রেনের বাখমুত নামে পরিচিত) ক্লেশচেয়েভকা বসতির চারপাশের উচুঁ এলাকাগুলো দখল করেছে, ডোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিকের (ডিপিআর) ভারপ্রাপ্ত প্রধান ডেনিস সোমবার রসিয়া-২৪ টেলিভিশন চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচারে বলেছেন। ‘(ক্লেশচেয়েভকা} এর চারপাশে বড় বড় পাহাড় ছিল এবং সেগুরোও ইতিমধ্যে ওয়াগনার ইউনিট দ্বারা কার্যত নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে,’ তিনি বলেছিলেন। সেই এলাকার কাছাকাছি উচুঁ এলাকাগুলো দখল কিছু সুবিধা দেয়, বিশেষ করে, ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর সরবরাহ রুটের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার জন্য, তিনি বলেছিলেন।
‘আমাদের জন্য সেভারস্ক-আর্টিওমোভস্ক সরবরাহ রুটগুলো সম্প‚র্ণভাবে বন্ধ করা গুরুত্বপূর্ণ, যা আমাদের ইউনিটগুলির জন্য অতিরিক্ত সুযোগও প্রদান করবে,’ ডিপিআর নেতা বলেছিলেন। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট-জেনারেল ইগর কোনাশেনকভ গত সপ্তাহে রিপোর্ট করেছেন যে, রুশ বাহিনী ক্লেশচেয়েভকা শহরকে ইউক্রেনীয় সেনাদের হাত থেকে মুক্ত করেছে।
ইউক্রেনে সংঘর্ষে উভয় পক্ষকে সমর্থন করা প্রয়োজন : ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাউরো ভিয়েরা রোববার ফোলহা দে সাও পাওলো সংবাদপত্রের সাথে একটি সাক্ষাতকারে বলেছেন, একটি কার্যকর শান্তি সংলাপের প্রচারের মূল শর্ত হল ইউক্রেনের সংঘাতে শুধুমাত্র একটি পক্ষকে সমর্থন করা থেকে বিরত থাকা।
ব্রাজিলের শীর্ষ ক‚টনীতিকের মতে, প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা প্রথম থেকেই রাশিয়ার কর্মকাÐের নিন্দা জানিয়ে একেবারে সুনির্দিষ্ট অবস্থান নিয়েছিলেন। সংবাদপত্রটি তাকে উদ্ধৃত করে বলেছে, ‘তিনি সবসময় বলেছেন যে শান্তি আলোচনার কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে এখন উভয় পক্ষকে সমর্থন করা প্রয়োজন।’ ইউক্রেনীয় সঙ্কটের প্রতি বর্তমান ব্রাজিলীয় নেতার মনোভাব তার পূর্বসূরি জাইর বলসোনারোর প্রতিধ্বনি, যিনি চলমান সংঘাতের মধ্যে রাশিয়ার ক‚টনৈতিক এবং অর্থনৈতিক বিচ্ছিন্নতার নীতির বিরুদ্ধে ছিলেন।
গত বছর টাইমকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে, লুলা দা সিলভা ইউক্রেনের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য ন্যাটোর পূর্ব দিকে সম্প্রসারণের নীতির দায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের উপর চাপিয়ে দিয়ে বলেছিলেন যে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি প্রাথমিকভাবে তার দেশে একটি সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি করতে আগ্রহী ছিলেন।
সামরিক জোটগুলোর মধ্যে ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি বিরক্তি’ দেখা দিতে পারে : পশ্চিমারা রাশিয়াকে আঘাত বা ধ্বংস করার জন্য অবিরাম প্রচেষ্টা করতে প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং এর প্রতিক্রিয়ায় একটি নতুন সামরিক জোট বিশ্বব্যাপী আবির্ভ‚ত হতে পারে, রাশিয়ান নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভ রোববার তার টেলিগ্রাম চ্যানেলে লিখেছেন।
মেদভেদেভ বলেন, ‘রামস্টেইনে (জার্মানিতে অবস্থিত মার্কিন বিমান ঘাঁটি) ইউক্রেনকে সমর্থনকারী দেশগুলোর মিটিং এবং কিয়েভে ভারী অস্ত্র সরবরাহের ফলে কোনো সন্দেহ নেই যে আমাদের শত্রæরা আমাদেরকে ধ্বংস করার চেষ্টা করবে বা শেষ পর্যন্ত আঘাত করে যাবে। এবং এর জন্য তাদের কাছে পর্যাপ্ত অস্ত্র রয়েছে। প্রয়োজনে তারা নতুন অস্ত্র তৈরি করাও শুরু করতে পারে,’ মেদভেদেভ বলেছেন। তিনি দুটি সিদ্ধান্তের কথা বলেন। প্রথমত, ‘এটি খুব কঠিন হবে,’ রাজনীতিবিদ বলেছিলেন, দ্বিতীয়ত, ‘দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতের ক্ষেত্রে, একটি নতুন সামরিক জোট সময়ের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট মুহুর্তে তাদের মিত্রদের নিয়ে আবির্ভ‚ত হতে পারে, যে দেশগুলো আমেরিকানদের প্রতি বিরক্ত হবে।’ তার মতে, বিশ্ব আবার একটি স্থিতিশীল জায়গা হয়ে উঠবে যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপকে পরিত্যাগ করবে।
গত শুক্রবার, প্রায় ৫০ টি দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীরা কিয়েভকে আরও সহায়তার বিষয়ে আলোচনা করতে জার্মানির রামস্টেইন বিমান ঘাঁটিতে বৈঠক করেছেন। জার্মানির প্রতিরক্ষা প্রধান বরিস পিস্টোরিয়াস ফিনিক্স টিভি চ্যানেলকে বলেছেন যে, ইউক্রেনে লেপার্ড ট্যাঙ্ক সরবরাহ করতে আগ্রহী কোনও ঐক্যবদ্ধ জোট নেই। তবে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে এমন সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে জানান তিনি।
ইউক্রেন সফরে বরিস জনসন, সহায়তার অঙ্গীকার : সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন রোববার হঠাৎ ইউক্রেন সফরে গিয়েছিলেন। সফরে তিনি প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন এবং যতদিন প্রয়োজন ইউক্রেনকে সহায়তা দেয়ার অঙ্গীকার করেছেন।
বিভিন্ন কেলেঙ্কারির জেরে গত সেপ্টেম্বরে পদত্যাগ করেন বরিস জনসন। তবে গত বছরের ফেব্রæয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণ চালালে জনসন দৃঢ়ভাবে কিয়েভকে সমর্থন দিয়ে দেশটির পাশে দাঁড়ান। যুদ্ধ শুরুর পরপর তিনিই প্রথম বিশ্বনেতা হিসেবে কিয়েভ সফরে যান। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় তিনি কয়েকবার কিয়েভ সফর করেছেন এবং জেলেনস্কির সঙ্গে ফোনে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, রোববার জনসন কিয়েভের উপকণ্ঠের দুই শহর বোরোদিয়াঙ্কা ও বুচা সফর করেছেন। সেখানে জনসন বুকার মেয়রকে জানান, যতদিন প্রয়োজন পড়বে ইউক্রেনের পাশে থাকবে যুক্তরাজ্য।
তিনি বলেন, ‘যুদ্ধে আপনারা জয়ী হতে চলেছেন। আপনারা সব রুশ নাগরিককে দেশ থেকে বিতাড়িত করতে চলেছেন। তবে আমরা সেখানে দীর্ঘমেয়াদে থাকব। আমরা আপনাদের দেশ পুনর্গঠনে সহযোগিতা করতে চাই।’ এ ছাড়া কিয়েভে বরিস জনসনকে স্বাগত জানান জেলেনস্কি, ইউক্রেনীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের প্রধানসহ বিভিন্ন শীর্ষ কর্মকর্তারা। সূত্র : তাস, রয়টার্স, বিবিসি নিউজ, আল-জাজিরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।