Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শরণার্থীদের সরাসরি স্পন্সর হতে পারবেন মার্কিনিরা

ইনকিলাব ডেস্ক : | প্রকাশের সময় : ২০ জানুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

এখন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আনতে বা পুনর্বাসনের জন্য শরণার্থীদের সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতা (স্পন্সর) করতে পারবেন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকরা। জানা যায় স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার থেকে ‘ওয়েলকাম কর্পস’ কর্মসূচির আওতায় এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হতে যাওয়া ওয়েলকাপ কর্পস কর্মসূচির অধীনে শরণার্থীদের স্পনসর করতে হলে, মার্কিন নাগরিকদের কমপক্ষে পাঁচজনের একটি গ্রুপ তৈরি করতে হবে। কর্মসূচির সঙ্গে জড়িত তিন ব্যক্তি বলেন, সরকার পাঁচজনের ওই গ্রুপকে নির্দিষ্ট সংখ্যক শরণার্থী নির্ধারণ করে দেবে ও গ্রুপটি প্রত্যেক শরণার্থীর জন্য সর্বোচ্চ ২ হাজার ২৭৫ মার্কিন ডলার সংগ্রহ করতে পারবে। এছাড়া, পৃষ্ঠপোষক গ্রুপগুলোকেও ব্যাকগ্রাউন্ড চেক পরীক্ষায় পাস করতে হবে ও শরণার্থীদের নিয়ে তাদের কী পরিকল্পনা রয়েছে তা স্পষ্ট করে জানাতে হবে। অনেকের দাবি, এমন পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রে শরণার্থী প্রবেশের গতি-সংখ্যা আরও বাড়াবে ও এ সংক্রান্ত সরকারি খরচ কমাতে কার্যকরি ভূমিকা রাখবে। এ কর্মসূচির মূল লক্ষ্য হলো, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৫ হাজার শরণার্থীর জন্য মার্কিন পৃষ্ঠপোষক খুঁজে বের করা। মার্কিন এ অর্থবছর শেষ হবে ৩০ সেপ্টেম্বর। পুনর্বাসনের প্রয়োজন এমন ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা সংস্থা রিফিউজপয়েন্টের প্রতিষ্ঠাতা সাশা চ্যানফ বলছেন, নতুন এ কর্মসূচির মাধ্যমে ১৯৮০ সালে শুরু হওয়া মার্কিন শরণার্থী প্রোগ্রামের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হতে পারে। তাছাড়া, মার্কিন নাগরিকরাও এ সংক্রান্ত কাজ করার আরও বেশি সুযোগ পেতে চলেছেন। রয়টার্স বলছে, ইউএস রিফিউজি রিসেটেলমেন্ট প্রোগ্রামের মাধ্যমে শরণার্থীদের যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে আসা হবে। আর রিফিউজি রিসেটেলমেন্ট প্রোগ্রামটি জাতিসংঘ ও মার্কিন দূতাবাস থেকে সুপারিশ করা হয়। জানা যায়, কানাডাতেও শরণার্থীদের জন্য এমন পৃষ্ঠপোষক কর্মসূচি ব্যবহার করা হয়। তাই সুরক্ষা বা আশ্রয় চাওয়া বিদেশিদের সহায়তা করার জন্য ও মার্কিন নাগরিকদের শরণার্থীদের নিয়ে কাজ করার সুযোগ করে দিতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রেও এ ধরণের কর্মসূচি প্রণয়ন করলেন। চলতি মাসের শুরুর দিকে বাইডেন প্রশাসন জানায়, এখন থেকে প্রতি মাসে চারটি অনুন্নত দেশের ৩০ হাজার অভিবাসীকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের সুযোগ দেওয়া হবে। মানবিক সহায়তা কর্মসূচির আওতায় নেওয়া ওই পদক্ষেপের অধীনে প্রতি মাসে কিউবা, নিকারাগুয়া, হাইতি ও ভেনেজুয়েলা নির্দিষ্ট পরিমাণ বৈধ অভিবাসী এ সুযোগ পাবেন। জানা যায়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট চলতি অর্থবছরে ১ লাখ ২৫ হাজার শরণার্থীকে যুক্তরাষ্ট্রে লক্ষ নির্ধারণ করেছেন। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছরের ১ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এ অর্থবছরে এখন পর্যন্ত ৬ হাজার ৭৫০ জন শরণার্থী যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন। এর আগে চলতি মাসের শুরুর দিকে একটি এন্ট্রি প্রোগ্রাম চালু করেছিলেন বাইডেন। মানবিক সহায়তা কর্মসূচি প্রকল্পের আওতায় গৃহীত ওই পদক্ষেপের অধীনে প্রতি মাসে কিউবা, নিকারাগুয়া, হাইতি ও ভেনেজুয়েলা থেকে ৩০ হাজার পর্যন্ত অভিবাসী নেওয়ার ঘোষণা দেয় দেশটি। তবে কিউবা, হাইতি, নিকারাগুয়া এবং ভেনেজুয়েলা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে ইচ্ছুক অভিবাসীদের শর্ত দেওয়া হয় যে, তাদের মার্কিন স্পন্সর থাকতে হবে এবং আকাশপথে আসতে হবে। মার্কিন প্রশাসন আফগান ও ইউক্রেনীয়দের আনার জন্য এই ধরনের প্যারোল ব্যবহার করে এবং যুক্তরাষ্ট্রে তাদের সহায়তার জন্য স্পন্সর প্রোগ্রামগুলো চালানো হয়ে থাকে। অবশ্য সর্বশেষ এই প্রোগ্রামের বিষযে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি। রয়টার্স বলছে, ইউ.এস. রিফিউজি রিসেটেলমেন্ট প্রোগ্রামের মাধ্যমে শরণার্থীদের যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে আসবে ওয়েলকাম কর্পস প্রোগ্রাম। আর রিফিউজি রিসেটেলমেন্ট প্রোগ্রামটি জাতিসংঘ এবং মার্কিন দূতাবাস থেকে সুপারিশ গ্রহণ করে থাকে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন চলতি অর্থবছরে ১ লাখ ২৫ হাজার শরণার্থী আনার একটি সীমা নির্ধারণ করেছেন। তবে প্রোগ্রামের তথ্য অনুসারে- গত বছরের ১ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই অর্থবছরে অক্টোবর-ডিসেম্বর পর্যন্ত মাত্র ৬ হাজার ৭৫০ জন এসেছে। সংবাদমাধ্যম বলছে, সাবেক রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অধীনে যুক্তরাষ্ট্রে শরণার্থীদের প্রবেশ ব্যাপকভাবে কমানো হয়েছিল। মূলত শরণার্থীদের নিরাপত্তা হুমকি হিসাবে চিত্রিত করেছিল ট্রাম্প প্রশাসন। তবে বাইডেন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরও শরণার্থীদের আসা এখনও ট্রাম্প আমলের আগের স্তরে ফিরে যায়নি। পুনর্বাসনের প্রয়োজন এমন লোকদের চিহ্নিত করে থাকে রিফিউজপয়েন্ট নামক একটি সংস্থা। এই সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাতা সাশা চ্যানফ বলছেন, ১৯৮০ সালে শুরু হওয়ার পর থেকে মার্কিন শরণার্থী প্রোগ্রামের জন্য সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হতে পারে এই স্পনসরশিপগুলো। তার ভাষায়, ‘এটি আমেরিকানদের নতুন উপায়ে এই কাজে সংশ্লিষ্ট হওয়ার সুযোগ দিচ্ছে।’ রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ