পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, সংস্কৃতিচর্চা দেশকে কখনো পথ হারাতে দেয় না।
আজ বাংলা একাডেমীর আব্দুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সহযোগী সংগঠন ‘জাগরণ সাংস্কৃতিক স্কোয়াড’র প্রথম জাতীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ৩১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
আসাদুজ্জামান কামাল আরো বলেন,‘আমি মনে করি উগ্রবাদ- জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে নির্মূল কমিটির যে অগ্রযাত্রা, সেই অগ্রযাত্রায় আমরা ভবিষ্যতে এই সংগঠনের পাশে থাকব।’
তিনি বলেন,‘১৯৭৫ সালের পর আমরা দেখেছি রাজাকারদের গাড়িতে বাংলাদেশের পতাকা উড়ছে। এরপর শেখ হাসিনার প্রচেষ্টায় এবং নির্মূল কমিটির সহযোগিতায় রাজাকারদের বিচার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। নির্মূল কমিটির জঙ্গিবাদ ও উগ্রবাদীদের বিরুদ্ধে যে লড়াই তাকে আমরা সাধুবাদ জানাই।’
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।
উদ্বোধনী অধিবেশনে সম্মানিত আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইন্সটিটিউট-এর সাম্মানিক সভাপতি, নাট্যজন বীর মুক্তিযোদ্ধা রামেন্দু মজুমদার, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সহসভাপতি শিক্ষাবিদ শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটারের সভাপতি চলচ্চিত্রনির্মাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দিন ইউসুফ, ১৯৭১: গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর ট্রাস্টের সভাপতি ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব গোলাম কুদ্দুছ এবং ফরিদা পারভীন ফাউন্ডেশনের সভাপতি সঙ্গীতশিল্পী ফরিদা পারভীন।
নির্মূল কমিটির আইটি সেল-এর সভাপতি শহীদ সন্তান আসিফ মুনীর অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে নির্মূল কমিটির সাংস্কৃতিক স্কোয়াডের শিল্পীবৃন্দ জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেন। জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন নরওয়ের লোকসঙ্গীত গবেষক, লেখক ও আলোকচিত্রশিল্পী ওয়েরা সেথের। এরপর আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
কে এম খালিদ বলেন,সংস্কৃতিক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেছে সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় দেশের তৃণমূল পর্যায়ে সাংস্কৃতিক নানা কার্যক্রমের পাশাপাশি যাত্রাপালা পরিবেশন আরো ছড়িয়ে দিতে হবে।
এসময় তিনি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চকে যাত্রামঞ্চ হিসেবে ব্যবহার করার জন্য সংশিষ্টদের প্রতি আহবান জানান।
শাহরিয়ার কবির বলেন,‘বহু বাধাবিঘœ ও জেল-জুলুম-হত্যা মোকাবেলা করে গত তিন দশকে নির্মূল কমিটি ধর্মনিরপেক্ষ মানবিক রাষ্ট্র ও সমাজ গঠনের বৃহত্তম নাগরিক আন্দোলনে পরিণত হয়েছে এবং বিস্তার লাভ করেছে পাঁচটি মহাদেশে।’
নরওয়ের লোকসঙ্গীত গবেষক, লেখক ও আলোকচিত্রশিল্পী ওয়েরা সেথের বলেন,‘এই বাঙালির সঙ্গীত ও সংস্কৃতি যদি না থাকতো, এই সাংস্কৃতিক চেতনা যদি মনের গভীরে না থাকতো- তবে বাংলাদেশ হতো না। এখানকার ভাষা জানতাম না। শুধু সুর জানতাম। এই সুর হৃদয় থেকে আসে। যেখান থেকে আপনাদের জন্ম হয়েছে সেই হৃদয়ের সুর আপনারা হারিয়ে ফেলবেন না।
রামেন্দু মজুমদার বলেন, বাঙালির আত্মাটা আছে লোকসংস্কৃতির মধ্যে, এটা আমরা ভুলে যাই। অবকাঠামোগতভাবে অনেক উন্নতি হয়েছে, কিন্তু হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের সংস্কৃতি।
নাসির উদ্দিন ইউসুফ বলেন, ‘১৯৭১ সালে আমাদের একটি সাংস্কৃতিক স্কোয়াড ছিল যেখানে শাহরিয়ার কবিরের লেখা ‘রূপান্তরের গান’ ভারতের বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত হতো যা মুক্তিযোদ্ধাদের দারুনভাবে অনুপ্রাণিত করেছিল।
গোলাম কুদ্দুছ বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ নানা দিক থেকে সমৃদ্ধি অর্জন করলেও মনোজগতে উন্নতির দিক থেকে আমরা পিছিয়ে পড়েছি। এর থেকে উত্তরণের জন্য নির্মূল কমিটির সাংস্কৃতিক স্কোয়াড গঠিত হয়েছে, যা অন্ধকারের মাঝে আলোর সঞ্চার করবে।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।