Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আওয়ামী লীগকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করতে হবে

এত নেতা, নেতার ভিড়ে কর্মী চেনা মুশকিল আলোচনা সভায় ওবায়দুল কাদের

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৮ জানুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বাংলাদেশের জন্য সুশৃঙ্খল আওয়ামী লীগ চাই। আওয়ামী লীগকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করতে হবে। যারা চাঁদাবাজি-মাস্তানি করবে তাদের সঙ্গে কোনও আপস নয়। তাদের বিরুদ্ধে আপসহীন লড়াই চলবে।

গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে এ সভায় তিনি একথা বলেন। আলোচনা সভার আয়োজন করে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ। ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এতো নেতা, নেতার ভিড়ে কর্মী চেনা মুশকিল। নেতার ভিড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্চ পর্যন্ত ভেঙে যায়। মুখে বলি বঙ্গবন্ধুর সৈনিক। নেতা হয়ে মঞ্চে উঠলে আদর্শের কথা মনে থাকে না। নেতাদের ভিড়ে আসল কর্মী চেনা দায়। মুখে আওয়ামী লীগের আদর্শ লালন করবেন, অন্তরে সে আদর্শ লালন করবেন না, তেমন নেতার দরকার নেই। সব সময় দলের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহŸান জানান।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের শত্রæ আওয়ামী লীগ হলে আওয়ামী লীগকে বাঁচাবে কে? ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করার শক্তি বাংলাদেশের কোনও রাজনৈতিক দলের নেই। এতো নেতার তো দরকার নেই। স্মার্ট বাংলাদেশের জন্যে স্মার্ট কর্মীবাহিনী দরকার, স্মার্ট বাংলাদেশের জন্যে সুশৃঙ্খল আওয়ামী লীগ দরকার। কোথায় আজ শৃঙ্খলা?
ঢাকা সফরে আসা মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কথা শুনে বিএনপি অসুস্থ হয়ে গেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, বিএনপির হতাশা থেকে অসুস্থতার শুরু হয়েছে। আসল নেতারা হাসপাতালে। পাতি নেতারা বলছে সুনামি নামিয়ে সরকার হটাবে। আন্দোলনের সাগরের উত্তাল ঢেউয়ের কথা বলে নদীর ঢেউও তুলতে পারলো না।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ৫৪ দলের মধ্যে ৫৪ মতে বিভক্ত। হতাশায় বিএনপির বাজার ভেঙে যাচ্ছে, বিএনপির জোটের বাজার ভেঙে যাচ্ছে। এ হতাশার জোট দিয়ে শেখ হাসিনা সরকার হটানো দূরাশার বাণী। সরকারের পরিবর্তন চাইলে বিরোধীদের নির্বাচনে আসার আহŸান জানিয়ে তিনি বলেন, সরকার নির্বাচন নিয়ে মাথা ঘামাবে না। নির্বাচন করবে নির্বাচন কমিশনার। তত্ত¡াবধায়ক সরকার ব্যবস্থার কথা ভুলে যান। আইন দ্বারা গঠিত নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগের প্রশ্নই আসে না। বিএনপির অস্বাভাবিক আবদার পূরণে সাপোর্ট না দেওয়ার কারণেই তারা এই নির্বাচন কমিশন চায় না। বিএনপি নির্বাচনে আসবেই সব হারিয়ে আসবে। বিএনপির আন্দোলনের টাকা আসে কোথা থেকে সেটা আমরা জানি। যারা শেখ হাসিনা সরকারকে হটানোর জন্য টাকা দিচ্ছে তাদের খবর আছে।

ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজীর আহমদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান ও আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য আব্দুল বাতেন, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণ।

দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি দিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আওয়ামী লীগের পরিচয় ব্যবহার করে যারা মাস্তানি করবে, জমি দখল করবে, মাদক ব্যবসা করবে তাদের সঙ্গে কোনো আপস নেই। তাদের বিরুদ্ধে আপসহীন লড়াই চলবে।

এ সময় মঞ্চে উপস্থিত আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের নেতারা মঞ্চে বসেন, বক্তৃতা করতে না পারলে মুখের উপরে শ্রাবণ বর্ষার আকাশে মেঘ এসে পড়ে। মন খারাপ হবে কেন? সবার বক্তৃতা করতে হবে কেন? ভাগ ভাগ করতে হবে। অমুক দিন আমি, অমুক দিন সে। তিনি বলেন, মঞ্চে নেতা বসে আছেন, সবাইকে বিশেষণ দিয়ে দিয়ে নাম বলতে হবে কেন? সভাপতি, প্রধান অতিথির কথা বলে বক্তব্য শুরু করতে হবে।

মন্ত্রী বলেন, তৃতীয় বার সাধারণ সম্পাদক হয়ে আমার অঙ্গীকার আওয়ামী লীগকে সুশৃঙ্খল করতে হবে, কলহমুক্ত করতে হবে। আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধ করার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের শত্রæ আওয়ামী লীগ হলে, আওয়ামী লীগকে বাঁচাবে কে? আওয়ামী লীগের বিজয় ঠেকাবে কে? আমাদের কলহ আমাদের সমস্যা! মিটিংয়ে একজন অন্যজনকে কতো প্রশংসা করেন। আর মিটিং থেকে বের হলেই গড়মিল! ঐক্যবদ্ধ আওয়ামীলীগকে কেউ ঠেকাতে পারবে না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ওবায়দুল কাদের


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ