পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক: ব্রিটিশ এমপি এবং যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশ বিষয়ক বাণিজ্যদূত রুশনারা আলী বলেছেন, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিমরা খুব কষ্টে আছে। বিশ্বের সেদিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া উচিত নয়। তাদের বিষয়ে বিশ্বকে আরো গুরুত্ব দেওয়া উচিত। ব্রিটিশ গণমাধ্যম ‘দ্য গার্ডিয়ান’-এ লেখা এক মতামত নিবন্ধে এ কথা বলেন তিনি।
সেই নিবন্ধে রুশনারা বলেন, অং সান সু চি নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় আসার মধ্য দিয়ে কার্যত রাষ্ট্রহীন এই সংখ্যালঘুদের মাঝে একটা নতুন আশার সঞ্চার হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে ৫০ বছর সামরিক শাসনের অবসানের পরও তাদের অবস্থা আগের চেয়ে আরো খারাপ হয়েছে। বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ রুশনারা লিখেছেন, ১৫ বছর গৃহবন্দী থাকার পর শান্তিতে নোবেল জয়ী সু চি সরকার গঠন করতে পারলেও দেশের সার্বিক নিয়ন্ত্রণ এখনো সেনাবাহিনীর হাতেই। দেশটিতে তেমন কিছুই বদলায়নি। বরং রোহিঙ্গাদের প্রতি সহায়তা ও তাদের নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। সাংবাদিকদেরও এখন আর ওইসব এলাকায় যেতে দেয়া হয় না।
নিবন্ধের প্রথমেই রুশনারা ২০১৪ সাল এবং চলতি বছরে দিনের একই সময়ে তোলা মিয়ানমারের একই গ্রামের দু’টি আলোচিত ছবির প্রসঙ্গ টানেন। যেখানে প্রথম ছবিতে দেখা যায়, গাছ আর মেঠো পথের মাঝে রোহিঙ্গাদের শতাধিক ছোটছোট ঘরবাড়ি। আর পরের ছবিতে সেখানে শুধু পুড়ে যাওয়া মাটির চারকোনা কিছু অবয়ব।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, জাতিসংঘসহ কিছু প্রতিষ্ঠানের দেয়া তথ্য ও মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও পুলিশের সেগুলো অস্বীকারের কথা তুলে ধরে ব্রিটিশ এমপি জানান, ১৯৮২ সালে মিয়ানমার যখন নাগরিকত্ব আইন পাস করে, সেখানে বলা হয়, ১৮২৪ সাল বা তার আগে থেকে যারা মিয়ানমারে অবস্থান করছে বলে মনে করা হবে, শুধু তারাই সে দেশের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃত হবে।
এ আইনের ফলে বহু প্রজন্ম ধরে মিয়ানমারে বসবাস করার পরও রোহিঙ্গারা দেশটির নাগরিক হতে পারেনি। ২০১৪ সালের আদমশুমারিতেও প্রথমে মুসলিম সংখ্যালঘুদের নিজেদেরকে ‘রোহিঙ্গা’ বলে পরিচয় দেয়ার সুযোগ দেয়া হয়। তবে কিছু সময় পরই সরকার সেই স্বাধীনতাটাও নিয়ে নেয় এবং নির্দেশ দেয়া হয় যে, এই জনগোষ্ঠীকে শুধু ‘বাঙ্গালি’ বলেই পরিচয় দেয়া যাবে।
২০১২ সালের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার পর রিফিউজিস ইন্টারন্যাশনাল ও মার্মা ক্যামপেইন ইউকে’র সঙ্গে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের বসতি দেখতে যান রুশনারা আলী। সেখানকার স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ‘রাখাইন রাজ্যে যে ক্যাম্পগুলোতে রোহিঙ্গাদের থাকতে বাধ্য করা হচ্ছিল সেগুলোর পরিবেশ ভয়াবহ। অনেক ক্ষেত্রেই জনগণ জীবন রক্ষাকারী মানবিক ত্রাণ এবং স্বাস্থ্যসেবা থেকে থেকে বঞ্চিত ছিল।’
‘আমি নৌকায় করে পাউকতাওয়ে ইউএনএইচসিআরের সমর্থনে তৈরি একটি ক্যাম্পে যাই। আমার স্পষ্ট মনে আছে, ক্যাম্প সংলগ্ন নদীর তীর মলমূত্রে ভরা। যেখানে ছোট ছোট বাচ্চারা অসহ্য গরম থেকে বাঁচতে পানিতে নেমে গোসল করছে তার কাছেই মরা ইঁদুর ভাসছে,’ জাতিগত বৈষম্য আর নিগ্রহে অধিবাসীদের চোখেমুখে ভেসে ওঠা ক্লান্তি আর আতঙ্কের স্মৃতিচারণ করেন এমপি রুশনারা।
সপ্তাহ দুয়েক আগে ৭০ জন ব্রিটিশ সংসদ সদস্য যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র সচিব বোরিস জনসনের কাছে লিখিতভাবে অনুরোধ জানিয়েছেন, যেন রোহিঙ্গাদের কাছে ত্রাণ ও মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে পুরো সুযোগ দিতে মিয়ানমার সরকারের ওপর চাপ বাড়ানো হয়। এ ব্যাপারে এমপিরা সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছেন বলে নিজের লেখায় জানান রুশনারা আলী। দ্যা গার্ডিয়ান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।