Inqilab Logo

মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিএমইটিতে বাড়ছে জালিয়াতি

বিদেশি শ্রমবাজারে বিপর্যয়ের শঙ্কা... # হিমশিম খাচ্ছে ইমিগ্রেশন বিভাগ # অনুমতি ছাড়াই গ্রæপ ভিসার ছাড়পত্র মিলছে # মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে

শামসুল ইসলাম | প্রকাশের সময় : ১৭ জানুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

বিএমইটিতে বহির্গমন ছাড়পত্র ইস্যুতে প্রতারণা জাল জালিয়াতির ঘটনা দেদারসে বাড়ছে। বিএমইটির একশ্রেণির অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজসে প্রবাসী মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়াই গ্রæপ ভিসায় বহির্গমন ছাড়পত্র ইস্যু হচ্ছে অবাধে। এক এজেন্সীর চাহিদাপত্রের কর্মী অন্য এজেন্সীর মাধ্যমে বহির্গমন ছাড়পত্র নিয়ে সউদী চলে যাচ্ছে। এসব গ্রæপ ভিসার কর্মী সউদী গিয়ে অনেকেই কাজ পাচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠছে। প্রতারক চক্রের দৌরাত্ম্য রোধ করা সম্ভব না হলে বিদেশের শ্রমবাজারে বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে। একাধিক জনশক্তি রফতানিকারক এ অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

এদিকে, নতুন বছরে বিএমইটিতে জাল জালিয়াতি চক্রের অপতৎপরতা নির্মূলে সুদ্ধি অভিযান শুরু করা হয়েছে। অতিসম্প্রতি মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে বিএমইটিতে অভিযানকালে জাল জালিয়াতির সাথে জড়িত দু’টি অভিযুক্ত রিক্রুটিং এজেন্সির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। বিএমইটির উপসচিব পরিচালক (ইমিগ্রেশন) কাইজার মোহাম্মদ ফারাবী গতকাল সোমবার এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এইচ এ ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সিও গত ৪ জানুয়ারি ২১ জন মহিলা গৃহকর্মীর বহির্গমন ছাড়পত্র সংগ্রহে কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর জাল করার অভিযোগ উঠছে। এসব কর্মীর ২০ জনের মুছানেদের অনুমোদন অন্য রিক্রুটিং এজেন্সির বলে জানা গেছে। এ নিয়ে বিএমইটিতে তোলপাড় শুরু হয়েছে। ইমিগ্রেশনের পরিচালক ফারাবী বলেন, এইচ এ ইন্টারন্যাশনালের বিরুদ্ধে স্বাক্ষর জালের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও পরিচালক ফারাবী উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, মাঝখানে আমি ইমিগ্রেশন বিভাগে ছিলাম না। কতিপয় অসাধু রিক্রুটিং এজেন্সীর জাল জালিয়াতির ঘটনায় বিএমইটির সুনাম ক্ষুণœ হচ্ছে। তিনি বলেন, বিএমইটিকে দুর্নীতি ও জালিয়াতমুক্তকরণে ব্যাপক পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। বিদেশ গমনেচ্ছুদের বহির্গমন ছাড়পত্র ইস্যুতে দফায় দফায় যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এতে ছাড়পত্র ইস্যুতে কিছুটা জটলার সৃষ্টি হচ্ছে। এক প্রশ্নর জবাবে পরিচালক বলেন, দুর্নীতিবাজ চক্র যত ক্ষমতাশীলই হোক কারো সাথে আপোষ করা হবে না।
বিএমইটির সূত্র মতে, করোনা মহামারির পর সউদীসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে জনশক্তি রফতানি বাড়ছে। ২০২১ সালে বিভিন্ন দেশে ৬ লাখ ১৭ হাজার ২০৯ জন কর্মী চাকরি লাভ করেছে। সদ্য বিদায়ী বছর ২০২২ সালে সউদীসহ বিভিন্ন দেশে ১১ লাখ ৩৫ হাজার ৯৮৬ জন নারী পুরুষ কর্মী চাকরি লাভ করেছে। গত রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের হলনাগাদ পরিসংখ্যানের তথ্য অনুযায়ী চলতি মাসের প্রথম ১৩ দিনে প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীরা ৯২ কোটি ৮৬ লাখ ডলার দেশে পাঠিয়েছেন। দৈনিক হিসেবে যার পরিমাণ ৭ কোটি ১৪ লাখ ডলার। গত মাসে মোট রেমিট্যান্স এসেছিল ১৬৯ কোটি ৯৭ লাখ ডলার। দৈনিক হিসেবে যার পরিমাণ ছিল ৫ কোটি ৪৮ লাখ ডলার।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এক শ্রেণির অসাধু রিক্রুটিং এজেন্সির জাল জালিয়াতির ঘটনায় বিএমইটির কর্মকর্তারাও জিম্মি হয়ে পড়েছে। ওই জালিয়াত চক্রের সাথে বিএমইটির কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর দহরমহর সম্পর্ক রয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। প্রতারক সিন্ডিকেট চক্র প্রবাসী মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়াই বিধিবহিভর্‚তভাবে সউদীতে গ্রæপ ভিসার কর্মী পাঠিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। প্রতারক চক্র এতোটাই বেপরোয়া যে তাদের অপকর্মের ফাইল নিয়ে কেউ প্রশ্ন তোলার সাহস পাচ্ছে না। জাল জালিয়াতির মাধ্যমে সিন্ডিকেট চক্র এক এজেন্সীর চাহিদাপত্রের কর্মীর বহির্গমন ছাড়পত্রের জন্য অন্য এজেন্সীর মাধ্যমে ফাইল উপস্থাপন করে সহজেই স্মার্টকার্ড হাতিয়ে নিচ্ছে।
বিএমইটির ইমিগ্রেশন বিভাগের উপসচিব পরিচালক (বহির্গমন) কাইজার মোহাম্মদ ফারাবী জাল জালিয়াতি চক্রের অপতৎপরতা নির্মূলে সুদ্ধি অভিযান শুরু করেছেন। এতে বিদেশ গমনেচ্ছু প্রত্যেক কর্মীর ভিসাসহ কাগজপত্র পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই-বাছাই করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ইমিগ্রেশন বিভাগকে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় প্রতিদিন ইমিগ্রেশন পরিচালকের রুমে শত শত বহির্গমন ফাইলের স্ত‚প। ফলে বহির্গমন ছাড়পত্র ইস্যুতে অনেকটা ধীরগতি হচ্ছে। বহির্গমন ছাড়পত্র ইস্যুতে ধীরগতি অব্যাহত থাকলে বিদেশের শ্রমবাজারে বিপর্যয়ের শঙ্কা দেখা দিতে পারে। একাধিক জনশক্তি রফতানিকারক এ অভিমত ব্যক্ত করেছেন।
এই জালিয়াত চক্রের মাধ্যমে সউদী গিয়ে অনেক নিরীহ যুবক দেশটিতে কাজের নিশ্চিয়তা এবং আকামাও পাচ্ছে না। প্রতারণার শিকার এসব যুবক দেশের বাড়ির আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে খাবার কিনে খাচ্ছে। বিএমইটিতে এ ব্যাপারে বহু অভিযোগ দাখিল করার পরেও সৃষ্ট সঙ্কট নিরসন হচ্ছে না। পরিস্থিতি এমন দিকে গড়াচ্ছে যে এসব দেখার কেউ নেই।
এন এফ এস ওভারসীজ লিমিটেডের মাধ্যমে ২০২২ সালের ফেব্রæয়ারি মাসে নাটোরের বরাইগ্রামের বজলুর রহমান ও ২১ জানুয়ারি ফরিদপুরের মধুখালির এনামুল মোল্লা সাড়ে ৩ লাখ টাকা ব্যয়ে সউদী আরবে যায়। সউদী যাওয়ার পর তাদের কাছ থেকে পাসপোর্ট ছিনিয়ে নেয়া হয়। অদ্যবধি তারা নিয়মিত কাজ করলেও তাদের বেতন দেয়া হচ্ছে না। এ ব্যাপারে বিএমইটিতে লিখিত অফিযোগ দেয়ার পরেও দফায় দফায় শুনানির তারিখ দেয়া হলেও এন এফ এস ওভারসীজের মালিক ফজলুল হকে বিএমইটির শুনানিতে হাজির না হয়ে নানা টালবাহানা করছে। এসব কর্মী আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে খাবার কিনে খাচ্ছে। বজলুর রহমানের অভিভাবক জামান ও এনামুলের খালাতো ভাই শামীম আল বাবু ইনকিলাবকে জানান, এন এফ এস ওভারসীজের মালিক ফজলুল হকের প্রতারণার শিকার প্রবাসী কর্মীদের পরিবাররা চরম হতাশায় দিন কাটাচ্ছে। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপপরিচালক (কর্মসংস্থান) জোহরা মনসুর গত জুলাই মাসে এক চিঠিতে এন এফ এস ওভারসীজের মালিক ফজলুল হককে ১০ কর্মদিবসের মধ্যে এসব কর্মীদের সৃষ্ট সঙ্কট নিরসনের নিদের্শ দেন। অন্যথায় তার বিরুদ্ধে অভিবাসী আইন-২০১৩ মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। প্রতারণার শিকার এসব সউদী প্রবাসীর আত্মীয় স্বজনরা প্রতারণার বিচারের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
৭টি জাল ভিসায় তথ্য গোপন করে সুইজারল্যান্ডে মানবপাচারের লক্ষ্যে মেসার্স মল্লিক রিক্রুটিং এজেন্সি ইতিপূর্বে বিএমইটিতে আবেদনপত্র পেশ করে। ভিসাগুলো যাচাই বাছাই করার জন্য নিউজেল্যান্ডের দায়িত্বে নিয়োজিত অস্ট্রেলিয়াস্থ বাংলাদেশ হাই কমিশনের লেবার কাউন্সেলর প্রথম সচিব (শ্রম) মো. সালাহউদ্দিনের কাছে পাঠানো হয়। প্রথম সচিব যাচাই-বাছাই করে ভিসাগুলোর কোনো বৈধতা পাননি। তিনি এক জরুরি চিঠিতে বিএমইটির মহাপরিচালক শহীদুল আলম, বিএমইটির পরিচালক ইমিগ্রেশন ও প্রটোকল এবং প্রবাসী সচিবের একান্ত সচিবের কাছে অভিযুক্ত মেসার্স মল্লিক রিক্রুটিং এজেন্সির বিরুদ্ধে দ্রæত আইনানু ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ পেশ করেন।
বিএমইটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সিন্ডিকেট জালিয়াতি করে সংযুক্ত আরব আমিরাতগামী কর্মীদের ভুয়া বহির্গমন ছাড়পত্র (স্মার্ট কার্ড) দিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ অনুমতি ছাড়াই, অর্থাৎ চাকরি না দিয়ে রিক্রুটিং এজেন্সি ও দালালরা ভুয়া স্মার্ট কার্ডে কর্মীদের বিদেশ পাঠিয়েছে। ইতিপূর্বে বিএমইটির ৯ কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং ছয় রিক্রুটিং এজেন্সি জালিয়াতিতে জড়িত বলে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তদন্তে প্রমাণ পাওয়া গেছে। তবে তদন্ত হয়েছে আমিরাতে লোক পাঠানো মাত্র আটটি এজেন্সির বিরুদ্ধে। অন্য দেশগুলোর ক্ষেত্রেও স্মার্ট কার্ডে একই ধরনের জালিয়াতি ঘটেছে বলে আশঙ্কা করা হয়েছিল। গত ২৮ জুলাই তদন্ত প্রতিবেদন জমা হলেও এখনও ব্যবস্থা নেয়নি মন্ত্রণালয়। শুধু ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের কর্মচারী সাইদুল ইসলামকে বহিষ্কার করা হয়েছে। দুজন কর্মকর্তাকে শুধু ঢাকার বাইরে বদলি করা হয়েছে।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্মার্ট কার্ড জালিয়াতি সিন্ডিকেটে জড়িত বিএমইটির সিস্টেম অ্যানালিস্ট সাইদুল ইসলাম। তিনি ২০১৯ সালে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছিলেন ডাটাবেজের তথ্য মুছে ফেলার অপরাধে। আটটি এজেন্সির নিয়োগ অনুমতির বিপরীতে স্মার্ট কার্ড ইস্যুর জালিয়াতির তদন্তে ছয়টির বিরুদ্ধে প্রমাণ পাওয়া গেছে। প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আবদুল কাদেরের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির তদন্তে প্রমাণ হয়েছে, আরব আমিরাতে ২ হাজার ৯৬০ জন কর্মীর নিয়োগ অনুমতির বিপরীতে ৬ হাজার ৯৩৮টি স্মার্ট কার্ড দিয়েছিল বিএমইটি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৩ হাজার ৯৭৮টি স্মার্ট কার্ড দেয়া হয়েছে ন্যক্কারজনক ও অকল্পনীয় জাল-জালিয়াতি করে।
আব্দুল কাদের মিয়া রিক্রুটিং এজেন্সিকে চার লাখ টাকা দিয়ে ইতিপূর্বে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই যান। ভ্রমণ (ভিজিট) ভিসায় যাওয়ার পর সেখানে কাজ জুটবে বলে প্রতিশ্রæতি দিয়েছিল রিক্রুটিং এজেন্সি। দুবাইতে কাজ তো জোটেইনি, উল্টো জেল খেটে দেশে ফিরে আসতে হয়েছে টাঙ্গাইলের কাদেরকে। অথচ জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) বহির্গমন ছাড়পত্র (স্মার্টকার্ড) নিয়েই দুবাই যান কাদের। কাদের মিয়ার দুবাই যাওয়ার সমস্ত নথি যাচাই করে দেখা যায়, মিডলাইন ইন্টারন্যাশনাল নামের রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে আমিরাত যান তিনি। মিডলাইন ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী ফজলুল মতিন তৌহিদ গতকাল ইনকিলাবকে জানান, কাদেরের মামা তাকে দুবাই নিয়েছিল। আমরা শুধু টিকিট বিক্রি করেছিলাম তার কাছে। ৩০ হাজার টাকা তাকে দিয়ে এ ব্যাপারে মিটমাট করা হয়েছে বলেও তৌহিদ জানান।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, রাজ ওভারসিজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের সউদীর গ্রæপ ভিসার চাহিদাপত্র কয়েকটি অসাধু রিক্রুটিং এজেন্সি জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে বর্হিগমন ছাড়পত্র সংগ্রহ করছে। বিএমইটির কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে এই অনিয়ম হয় বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। রাজ ওভারসীজ ,এইচ এ ইন্টারন্যাশনাল, এস টি এস ওভারসীজ, ওয়েন্স ট্রাভেলসের মালিকদের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাদের পাওয়া যায়নি। বিএমইটি সূত্র জানায়, গত ২৩ নভেম্বর আরব আমিরাতের বহির্গমন ছাড়পত্র নেয়ার জন্য ২১ জন কর্মীর প্রয়োজনীয় নথি জমা দেয় এইচপি ওভারসিজ। যার মধ্যে ২০টির নথি ভুয়া বলে ধরা পড়ে। এর পরিপ্রেক্ষিতে এইচপি এজেন্সির বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিএমইটি। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়কে সংশ্লিষ্ট এজেন্সির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছে।
বিএমইটির সূত্র জানায়, প্রবাসী মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া জাল জালিয়াতির মাধ্যমে সউদীর গ্রæপ ভিসায় এস টি এস ওভারসীজ লিঃ, সেমার্স সাসকো ট্রেডিং, তাসনীম ওভারসীজ, হক এভিয়েশন সার্ভিসেস, মেঘনা ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, ওয়েন্স ট্রাভেলস রাজ ওভারসীজের গ্রæপ ভিসার কর্মীদের বর্হিগমন ছাড়পত্র নেয়ার জন্য বিএমইটিতে আবেদন পেশ করেছে। এদের মধ্যে দাখিরকৃত চাহিদাপত্রের কর্মীর সউদীতে চলে গেছে। বিএমইটির ইমিগ্রেশনের পরিচালক কাইজার মোহাম্মদ ফারাবী সম্প্রতি তার দপ্তরে এ প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে উল্লেখিত এজেন্সির জাল জালিয়াতির মাধ্যমে সউদীগামী কর্মীদের বর্হিগমন ছাড়পত্র সংগ্রহের চেষ্টার কথা স্বীকার করেন। এক প্রশ্নের জবাবে পরিচালক ফারাবী ইনকিলাবকে বলেন, এক শ্রেণির অসাধু রিক্রুটিং এজেন্সির অনিয়ম জাল জালিয়াতির ঘটনায় বিএমইটি দিশেহারা। বিএমইটির কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীরও যদি জাল-জালিয়াতি চক্রের সাথে জড়িত থাকে তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। পরিচালক ইমিগ্রেশন বলেন, বিএমইটি থেকে প্রতারক সিন্ডিকেট চক্র নির্মূলের লক্ষ্যে নতুন বছরে আমরা সুদ্ধি অভিযান শুরু করেছি। কোনো দুর্নীতিবাজকে প্রশ্রয় দেয়া হবে না। বায়রার যুগ্ম মহাসচিব এম টিপু সুলতান রাতে ইনকিলাবকে বলেন, দুর্নীতিমুক্ত বিএমইটি পরিচালিত হোক এটা আমরা চাই। বিএমইটিতে যারাই জাল জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে বহির্গমন ছাড়পত্র নিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নিতে হবে। অন্যথায় জনশক্তি রফতানিতে বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে এম টিপু সুলতান বলেন, কারো জাল জালিয়াতির দরুন শ্রমবাজারে অস্থিরতা মেনে নেয়া হবে না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিএমইটি

১৭ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ