নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
মাইলফলকের আগে অনেক সময় অপেক্ষা। সীমানায় বল থামাতে গিয়ে দুই পাশ থেকে ডাইভ দিয়ে মুখোমুখি লেগে গেল শ্রীলঙ্কার দুই ফিল্ডার জেফ্রি ভ্যান্ডারসে ও আশেন বান্দারার। বল চলে গেল বাউন্ডারিতে। বিরাট কোহলি অপরাজিত ৯৯ রানে। কিন্তু দুই ফিল্ডার আহত হয়ে পড়ে রইলেন মাঠেই। শেষ পর্যন্ত স্ট্রেচার আনতে হলো। সময় পেরিয়ে গেল অনেকটা। তবে আবার খেলা শুরু হতেই কাক্সিক্ষত মুহূর্তটি এলো কোহলির। সিঙ্গেল নিয়ে তিনি ডানা মেলে দিলেন। সিরিজের প্রথম ম্যাচে উদযাপনটা অনেক খ্যাপাটে ছিল। এ দিন তুলনায় অনেকটাই পরিশীলিত। ধারাভাষ্যকক্ষে হার্শা ভোগলে বললেন, ‘রাজা ফিরেছেন তার নিজের কাজে, যা করতে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসেন... আরও একটি সেঞ্চুরি!’ এই সেঞ্চুরি অবশ্য শুধুই আরেকটি সেঞ্চুরি নয়। একটি রেকর্ডে নিজেকে ছাড়িয়ে, শচিন টেন্ডুলকারকে পেরিয়ে কোহলি পা রাখলেন চূড়ায়। ওয়ানডেতে এক দেশের বিপক্ষে সবচেয়ে বেশি শতরানের রেকর্ড এখন এককভাবে তার।
গতকাল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচে থিরুভানান্থাপুরামে সেঞ্চুরি করেন কোহলি। শেষ পর্যন্ত ইনিংসের শেষ দুই বলেও চার-ছক্কা মেরে তিনি অপরাজিত থাকেন ১১০ বলে ১৬৬ রান করে। ওয়ানডেতে তার পঞ্চম দেড়শ ছোঁয়া ইনিংস এটি। সবশেষ এই স্বাদ পেয়েছিলেন তিনি ২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। ১৩ চারের সঙ্গে ইনিংসে ছক্কা ৮টি। ওয়ানডেতে এক ইনিংসে এত বেশি ছক্কা তিনি আগে মারেননি। ২০১৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৫২ বলে ১০০ করার পথে ছক্কা মেরেছিলেন ৭টি। কোহলির অপরাজিত ১৬৬ রানের সঙ্গে শুবমান গিলের ৯৭ বলে ১১৬ রানের ইনিংসে ভারত ৫০ ওভারে তোলে ৫ উইকেটে ৩৯০ রান। এই বিশাল রানপাহাড় ডিঙানোর কোনো সুযোগই দেয়নি ভারতীয় বোলারা। ২২ ওভারে মাত্র ৭৩ রানেই সফরকারীদের গুটিয়ে দিয়ে ৩১৭ রানে ম্যাচ জিতে নিয়েছে স্বাগতিকরা! ওয়ানডের ইতিহাসেই যা সর্বোচ্চ রানের ব্যবধানে জয়। এর আগেরটি ছিল আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের ২৯০ রানের জয়টি।
কোহলির ব্যাট থেকে শতরান এসেছিল তিন ম্যাচের এই সিরিজের প্রথম ম্যাচেও। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তার ওয়ানডে সেঞ্চুরি হলো ১০টি। রেকর্ডের দুইয়েও থাকছেন কোহলি, যেখানে তার সঙ্গী টেন্ডুলকার। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৯টি সেঞ্চুরি আছে কোহলির, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৯টি টেন্ডুলকারের। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৭০ ইনিংস খেলে ওই ৯ সেঞ্চুরি করেছিলেন টেন্ডুলকার। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কোহলির ১০টি হয়ে গেল ৪৯ ইনিংসেই। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে কোহলির ৯ সেঞ্চুরি এসেছে অবশ্য মাত্র ৪১ ইনিংসে। কোহলি আছেন এই রেকর্ডের তিন নম্বরেও। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তার সেঞ্চুরি ৮টি। অস্ট্রেলিয়ানদের বিপক্ষে সমানসংখ্যক সেঞ্চুরি আছে রোহিত শর্মারও। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৮টি সেঞ্চুরি টেন্ডুলকারের। সব মিলিয়ে এই তালিকায় ভারতীয়দেরই জয়জয়কার।
আরও একটি রেকর্ডে টেন্ডুলকারকে পেরিয়ে সবার ওপরে এখন কোহলি। ভারতের মাঠে তার ওয়ানডে সেঞ্চুরি হয়ে গেল ২১টি। কোনো এক দেশে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির কীর্তিতে এখন তিনি এককভাবে শীর্ষে। ভারতের টেন্ডুলকারের সেঞ্চুরি ২০টি। টেন্ডুলকারের ওই ২০ সেঞ্চুরি এসেছে ১৬০ ইনিংসে। তাকে পেরিয়ে যেতে কোহলির লাগল ¯্রফে ১০১ ইনিংস। এছাড়া অস্ট্রেলিয়ায় ১৪টি সেঞ্চুরি করেছেন রিকি পন্টিং, দক্ষিণ আফ্রিকায় ১৪টি হাশিম আমলা।
খুব বেশি দিন হয়নি, সেঞ্চুরির খরা চলছিল কোহলির। টেস্টে তো বটেই, যে সংস্করণে একসময় একের পর এক সেঞ্চুরি করেছেন, সেই ওয়ানডেতেও শতরানের দেখা পাচ্ছিলেন না তিন বছরের বেশি সময় ধরে! ৪০ মাস আর ২৫ ইনিংসের খরা কাটিয়ে অবশেষে গত মাসে বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের শেষ ম্যাচে সেঞ্চুরি করেন তিনি চট্টগ্রামে। ভাটা সরে যাওয়ার পর জোয়ার বয়েই চলেছে। চার ম্যাচের মধ্যে করে ফেললেন তিনটি সেঞ্চুরি। ওয়ানডেতে তার ৪৬তম সেঞ্চুরি এটি। টেন্ডুলকারের ৪৯ সেঞ্চুরির রেকর্ড, একসময় যেটিকে মনে হচ্ছিল সবার ধরাছোঁয়ার বাইরে, সেই রেকর্ড স্পর্শ করার দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেলেন কোহলি। তিন সংস্করণ মিলিয়ে তার শতরান হয়ে গেল ৭৪টি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।