নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
এল ক্লাসিকো নাকি হেল ক্লাসিকো! কয়েক বছর আগেও রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনার চিরায়ত দ্বৈরথের পর দেখা মিলত এমন শিরোনামের। এল ক্লাসিকো মানেই যে রুদ্ধশ্বাস উত্তাপ ও রোমাঞ্চ। দুই দলেরই মনোভাব ‘বিনা যুদ্ধে নাহি দেব সূচ্যগ্র মেদিনী’।
প্রায় ১০ বছর এই ম্যাচের অন্য নাম হয়ে ছিল লিওনেল মেসি বনাম ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। এই দুই মহাতারকাকে বাদ দিলেও রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনায় ছিল তারকার মেলা। যে কারণে ইউরোপীয় শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চেও পালা করে দাপট ছিল এই দুই দলের। গতকাল রাতেই স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনালে দেখা গেছে আরেকটি এল ক্লাসিকো। সউদী আরবের রাজধানী রিয়াদের কিং ফাহাদ স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয় এ দুদল। এতক্ষণে নিশ্চয়ই যেনেও গেছে কি ঞটেছিল ম্যাচের ভাগ্যে। তবে প্রশ্ন হচ্ছে, রিয়াল-বার্সার এই দ্বৈরথ কি এখনো আগের মতো উত্তাপ ছড়ায়?
রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনায় কখনো তারকার অভাব ছিল না। তবে ২০০৯ সালে রোনালদো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে রিয়ালে আসায় তা নতুন মাত্রা পায়। শুরু হয় ফুটবল ইতিহাসের অনবদ্য এক দ্বৈরথের। যেখানে চিরকালীন দুই ক্লাব প্রতিদ্বন্দ্বীর হয়ে নামতেন এই দুই মহাতারকা। মেসি-রোনালদোর এই দ্বৈরথ দেখার অপেক্ষায় দিন গুনত গোটা ফুটবল বিশ্বও। এ দুজনকে ঘিরে মাঠে দুটি দলই শুধু লড়ত না, তাদের ভক্ত-সমর্থকেরাও একে অপরের বিপক্ষে লড়াইয়ে নামতেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এই ম্যাচকে ঘিরে দুই দলের সমর্থকেরা জড়িয়ে পড়তেন বিরোধে। হাড্ডাহাড্ডি সেই লড়াই খেলাতে সীমাবদ্ধ ছিল না। এল ক্লাসিকোতে হাতাহাতি-মারামারি ছিল নিয়মিত ঘটনা। দেখা যেত হলুদ কার্ড-লাল কার্ডের ছড়াছড়িও। যা ম্যাচের রোমাঞ্চ ও উত্তেজনাকে নিয়ে যেত ভিন্ন এক উচ্চতায়। ২০১৮ সালে রোনালদো রিয়াল ছাড়ার পরই শেষ হয়ে যায় এই দ্বৈরথ। এরপর ২০২১ সালে মেসিও বার্সা ছেড়ে যান। এই দুজনের বিদায়ে এল ক্লাসিকোর উত্তাপও অনেকটা কমে যায়।
রোনালদো-মেসিকে বাদ দিলেও গত কয়েক বছর অনেক তারকাকে হারিয়েছে রিয়াল-বার্সা। এক সময় রিয়ালে রোনালদোর সঙ্গী ছিলেন কাকা, ওজিল, জাভি আলোনসো এবং ইকার ক্যাসিয়াসরা। তবে একটা সময় পর তারাও ক্লাব ছেড়ে গেছেন। ক্লাব ছেড়েছেন রিয়ালের সঙ্গে সমার্থক হয়ে যাওয়া বহু যুদ্ধের কান্ডারি সার্জিও রামোসও। এখন পর্যন্ত তারকা খ্যাতিতে তাদের পুরোপুরি বিকল্প আনতে পারেনি রিয়াল। তবে রিয়ালের চেয়ে বার্সার তারকা হারানোর মিছিলটা আরও দীর্ঘ। মেসির সঙ্গী হিসেবে একসময় মাঠ মাতিয়েছেন জাভি, ইনিয়েস্তা, নেইমার, লুইস সুয়ারেজ, দানি আলভেজ, পিকেরা। যাঁরা সবাই একে একে বিদায় নিয়েছেন। ধারাবাহিকভাবে তারকাদের বিদায়ে জৌলুশ হারিয়ে কিছুটা হলেও অনুজ্জ্বল হয়েছে এল ক্লাসিকো।
মেসি-রোনালদোকে হারিয়ে শক্তি হারায় দুই স্প্যানিশ পরাশক্তিও। ইউরোপে এমনকি ঘরোয়া লিগেও কমে আসে রিয়াল-বার্সার দাপট। তবে সম্প্রতি রিয়ালের চেয়ে বার্সাকে একটু বেশিই দুরবস্থায় পড়তে হয়েছে। যার প্রভাব পড়েছে এল ক্লাসিকোর ফলেও। সর্বশেষ ৬ ম্যাচের ৫টিতেই জিতেছে রিয়াল। এর আগে অবশ্য টানা কয়েক ম্যাচে রিয়ালের ওপর ছড়ি ঘুরিয়েছিল বার্সা। শক্তির এই ভারসাম্যহীনতাও এল ক্লাসিকোর রোমাঞ্চকে কমিয়ে দিয়েছে।
সাফল্য অনেক গুণগ্রাহী নিয়ে আসে, নিয়ে আসে সমর্থকও। রোনালদো-মেসির টানে এক সময় রিয়াল-বার্সার সমর্থকও বেড়েছিল তরতরিয়ে। বৈশ্বিকভাবে পছন্দের ফুটবল ক্লাব হিসেবে দুই দলই অবস্থান করছিল শীর্ষে। তবে এ দুজনের বিদায়ে সমর্থনেও দেখা গেছে ভাটার টান। মেসির বিদায়ের পর ভাইরাল হওয়া এক মিমে দেখা গেছে, ট্রেনে চড়ে বার্সা সমর্থকেরা ন্যু ক্যাম্প ছাড়ছেন।
এর আগে ব্লেচার রিপোর্টের একটি প্রতিবেদন জানিয়েছিল, রোনালদোর শেষ মৌসুমে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুয়ে গড়ে দর্শক উপস্থিতি ছিল ৬৫ হাজার ৮২৪ জন। রোনালদোকে ছাড়া প্রথম মৌসুমে যা নেমে আসে ৬২ হাজার ৫০০ জনে। মাঠের দর্শকের মতো বিশ্বজুড়ে দুই দলে সমর্থকের সংখ্যাও এমন কমেছে বলে অনুমান করাই যায়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।