গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
আধুনিক বিশ্বের সামনে ইসলামি সংস্কৃতি ও সভ্যতার সক্ষমতাকে তুলে ধরতে রাজধানী ঢাকায় ‘বিশ্বায়নের ক্ষেত্রে নয়া ইসলামিক সভ্যতার সক্ষমতা’ শীর্ষক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার ঢাকাস্থ ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের আয়োজনে রাজধানীর পল্টনে ফারস হোটেল এন্ড রিসোর্টসের রিক্রিয়েশন লাউঞ্জে এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
সেমিনারে ইরানের রাষ্ট্রদূত মানসুর চাভুশি বলেন, ‘বর্তমান বিশ্বের সামনে মুসলিম সভ্যতা ও সংস্কৃতির অনেক বিষয় ভুলভাবে ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে, ইসলামের ইমেজকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। এই বিষয়গুলোকে সঠিক ও সুষ্ঠুভাবে ইতিবাচক উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে বিশ্বের সামনে তুলে ধরা প্রয়োজন। ইসলাম ও মুসলিম সভ্যতা ও সংস্কৃতির প্রকৃত চিত্র সকলের সামনে তুলে না ধরলে এই বিশ্বায়নের যুগে আমরা সম্মুখ সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিতে পারব না। ইসলামি সভ্যতার সক্ষমতাকে পুরো বিশ্বের সামনে তুলে ধরার এই গুরু দায়িত্বটি জ্ঞান ও প্রজ্ঞার আলোকে আলোকিত ব্যক্তিদের, অর্থাৎ আজকের এই সেমিনারে যারা উপস্থিত আছেন, সম্মানিত শিক্ষকমন্ডলী ও জ্ঞানী-গুণী ব্যক্তিবৃন্দ আপনাদের।’
অনুষ্ঠানে ইরানের রিলিজিয়নস এ্যান্ড ডেনোমিনেশন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টি মেম্বার প্রফেসর ড. সাইয়্যেদ মাহদী মুসাভী বলেন, ‘দিন দিন মুসলিম বিশ্বকে অর্থনৈতিক সংকট ও সাংস্কৃতিক সীমাবদ্ধতার বেড়াজালে আবদ্ধ করে ফেলা হচ্ছে। এ কারণেই আমাদের সংঘবদ্ধ হওয়া দরকার। এখানেই নয়া ইসলামিক সভ্যতার সক্ষমতার মূল ভূমিকা পালিত হবে। আমরা বিশ্বাস করি ইসলামই সকল সমস্যার সমাধান করতে পারে। এই বক্তব্যটা তুলে ধরাই আমাদের আজকের সেমিনারের মূল উদ্দেশ্য।’
ড. মুসাভী আরও বলেন- ‘পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেছেন, কোরআনে সকল ধরনের মানবীয় সমস্যার উল্লেখ আছে এবং তার সমাধানও দেয়া আছে। আর এ কারণেই আমরা বিশ্বাস করি ইসলামই সকল সমাধানের মূল উৎস। ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের অবিসংবাদিত নেতা ইমাম খোমেনীর হাত ধরে মুসলিম সভ্যতার যে নবজাগরণ ঘটেছে, তাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে বৈশ্বিকভাবে তা ছড়িয়ে দেয়া প্রয়োজন।’
অনুষ্ঠানে গ্লোবাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ এর মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান বলেন, ‘যদিও পশ্চিমা বিশ্ব গ্লোবালাইজেশন শব্দটিকে বিশ্বব্যপী ছড়িয়ে দিয়েছে, কিন্তু এই শব্দের আড়ালে মূল সত্যটি হচ্ছে আমেরিকানাইজেশন। আমি আমেরিকার সাধারণ জনগণের বিপক্ষে নই, বরং বিশ্বে প্রভাব খাটানোর কাজে ব্যবহৃত আমেরিকার বেশ কিছু পলিসির বিপক্ষে। আমি এই আমেরিকানাইজেশন-কে ইসলামাইজেশনে বদলে দেয়ার পক্ষে। কারণ ইসলাম মানে ন্যায়বিচার, ইসলাম মানে সততা এবং সাম্য।’
বৈশ্বিক নানামূখী চাপ ও প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও ইরানের নিজ নীতি ও বিশ্বাসে অটল থাকার প্রশংসা করে তিনি বলেন-‘ইরান দেখিয়ে দিয়েছে ন্যায়নিষ্ঠার সাথে অবিচল থাকলে সব বাধার মুখেও টিকে থাকা যায়। আমরা এখন চোখে চোখ রেখে কথা বলতে পারি। সুতরাং আমাদের কোন ধরনের হীনমন্যতায় ভোগা উচিত নয়।’ অনুষ্ঠানে উপস্থিত সম্মানিত শিক্ষক ও জ্ঞানীজনের প্রশংসা করে তিনি বলেন এ ধরনের একটি সেমিনারে এই শ্রেণীর অডিয়েন্সদেরই উপযুক্ত। তাদের স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণকে তিনি আন্তরিক সাধুবাদ জানান। তার বক্তব্যের শেষে তিনি সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে ও ন্যায়ের পক্ষে লড়াই করতে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ঢাকাস্থ ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কালচারাল কাউন্সেলর ড. সাইয়্যেদ হাসান সেহাত। তিনি সেমিনারে আগত সকল বিশিষ্ট ব্যক্তিদের স্বাগত জানান এবং বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে নতুন ইসলামিক সভ্যতার জাগরণ ও বিকাশের গুরুত্ব তুলে ধরেন। সাংস্কৃতিক ও সাধারণ বৈশ্বিক ভাষা হিসেবে ইংরেজী ভাষার একচ্ছত্র আধিপত্যের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন- ‘কেনো ফারসি বা বাংলা ভাষাসহ বিশ্বের অন্যান্য সমৃদ্ধ ভাষাগুলোকে আমরা ইংরেজির মত এমন উচ্চতায় তুলে ধরছি না? মুসলিম বিশ্বের ভাষা হিসেবে, সেখানকার সাহিত্য ও সংস্কৃতির ভাষা হিসেবে কেনো আমরা ফারসির মত সমৃদ্ধ ঐতিহ্যের ভাষা ব্যবহার করছি না?’ বর্তমান সময়ে নানান প্রতিকূলতার মধ্যে নিমজ্জিত বিশ্বকে সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে ইসলামি সভ্যতাকে পরিপূর্ণভাবে সক্ষম হিসেবে উল্লেখ করে তিনি এ বিষয়ে সকলের মূল্যবান মতামত ব্যক্ত করার আহবান জানান।
সেমিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার স্বনামধন্য বক্তিবর্গ এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।