Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সোলেডারে ইউক্রেনের পাঁচটি ব্রিগেড নিশ্চিহ্ন

আহত সৈন্যে পূর্ণ হাসপাতালগুলো

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৩ জানুয়ারি, ২০২৩, ১২:০১ এএম

বাখমুত দখলে বিশেষ সুবিধা পাবে রুশ সেনা :: ৮০ লাখ ইউক্রেনীয় শরণার্থী ইউরোপীয় দেশগুলিতে গিয়েছে : জাতিসংঘ
ডোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিকের সোলেডার শহরে প্রায় পাঁচটি ইউক্রেনীয় ব্রিগেড নিশ্চিহ্ন করা হয়েছে, তবে বিদেশী ভাড়াটেদের গণনা করা হলে ক্ষতির পরিসংখ্যান আরও বেশি হতে পারে, সামরিক-রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ ইয়ান গ্যাগিন বলেছেন।

ডোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিকের ভারপ্রাপ্ত প্রধানের উপদেষ্টা গ্যাগিন রসিয়া-১ টিভি চ্যানেলে বলেন, ‘সেখানে (সোলেডারে) প্রায় পাঁচটি ব্রিগেড ধ্বংস করা হয়েছিল। এই তথ্যটি বেশ উদ্দেশ্যমূলক, কিন্তু আমি মনে করি, ক্ষতির পরিসংখ্যান কিছুটা বড় হবে, কারণ এই ক্ষয়ক্ষতির মধ্যে ভাড়াটে সৈন্যরা অন্তর্ভুক্ত নয়। কারণ তাদের মধ্যে অনেকজন ভাড়াটে সেনা ছিল।’ গ্যাগিন স্মরণ করেছিলেন যে, আর্টিওমভস্কের (বাখমুত) মতো সোলেডার একটি কৌশলগত পরিবহন কেন্দ্র ছিল। তিনি বলেন, ‘ইউক্রেনীয় সেনাদের জন্য প্রচুর পরিমাণে গোলাবারুদ মজুদ ছিল। আমি মনে করি এখন আমাদের সশস্ত্র বাহিনী সেগুলো পাবে।’

রাশিয়ান ব্যবসায়ী ইয়েভজেনি প্রিগোজিন বুধবার বলেছেন যে, সাম্প্রতিক দিনগুলিতে ভারী লড়াইয়ের পরে ওয়াগনার পিএমসি যোদ্ধারা সোলেডার শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। এছাড়াও বুধবার, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইগর কোনাশেনকভ বলেছেন যে, রাশিয়ান সৈন্যরা উত্তর ও দক্ষিণ থেকে সোলেডারকে অবরুদ্ধ করেছে এবং শহরের ভিতরে শত্রæ সেনাদের নির্মূল করার অভিযান চলছে।
আহত সৈন্যে পূর্ণ ইউক্রেনের হাসপাতালগুলো : রাশিয়াকে সমর্থনকারী ইউক্রেনীয় ট্রয় স্বেচ্ছাসেবক বিশেষ বাহিনী ইউনিটের কমান্ডার ভ্লাদিমির নোভিকভ (কোডনাম আলাবে) জানিয়েছেন, ইউক্রেনের বেশ কয়েকটি শহরের হাসপাতাল ডোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিকের শহর সোলেডার থেকে আগত আহত সেনাদের দ্বারা উপচে পড়ছে।

‘জাপোরোজিয়া এবং ডিনেপ্রোপেট্রোভস্ক অঞ্চলের সমস্ত হাসপাতাল সত্যিই আহত সৈন্যে পূর্ণ, বেশিরভাগই সোলেডার থেকে ‘ তিনি বলেন, সোলেডারে কিয়েভের ক্ষতি অনুমান করা কঠিন কারণ ইউক্রেনীয় সশস্ত্র বাহিনীর কমান্ড নিহত সৈন্যদের তথ্য গোপন রখেছে। নোভিকভের মতে, ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী সোলেডারে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিল যদিও ইউক্রেনীয় কমান্ড সেখানে ‘সবচেয়ে সক্ষম বাহিনী পাঠিয়েছিল’। মস্কোতে লুহানস্ক পিপলস রিপাবলিকের সাবেক রাষ্ট্রদূত রডিয়ন মিরোশনিক এর আগে বলেছিলেন যে, সোলেডারের জন্য যুদ্ধে ইউক্রেন প্রায় ২৫ হাজার সেনাকে হারিয়েছে এবং সেই ক্ষতিগুলি অপূরণীয় ছিল।

বুধবার ভোরে, রাশিয়ান ব্যবসায়ী ইয়েভজেনি প্রিগোজিন বলেছিলেন যে, ডোনেৎস্কের অত্যান্ত গরুত্বপূর্ণ শহর সোলেডারের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে ওয়াগনার প্রাইভেট মিলিটারি কোম্পানির যোদ্ধারা। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইগর কোনাশেনকভ বুধবার পরে জানিয়েছেন যে, রুশ বাহিনী উত্তর ও দক্ষিণ থেকে সোলেদারকে অবরুদ্ধ করেছে এবং শহরে যুদ্ধ চলছে।

বাখমুত দখলে বিশেষ সুবিধা পাবে রুশ সেনা : ডোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিকের এমপি এবং পিপলস মিলিশিয়ার কর্নেল আন্দ্রে বেয়েভস্কি বৃহস্পতিবার সলোভিভ লাইভ টেলিভিশনে বলেছেন যে, সোলেডার দখলের প্রধান সুবিধা হল আর্টিওমভস্কে (ইউক্রেনে বাখমুত নামে পরিচিত) সরাসরি গুলি চালানোর সুযোগ।
‘সোলেডারের নিয়ন্ত্রণ দখল করার অর্থ হল সøাভিয়ানস্ক থেকে আর্টিওমভস্ক পর্যন্ত হাইওয়েটি সরাসরি দৃষ্টিগোচর হওয়া এবং কার্যত সেখানে সরাসরি গুলি চালানোর সুযোগ,’ তিনি বলেছিলেন। বায়েভস্কি আরও বলেছেন যে, আর্টিওমভস্ককে বিচ্ছিন্ন করার দৃষ্টিকোণ থেকে সোলেডারের উপর নিয়ন্ত্রণ গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এর অর্থ ‘আর্টিওমভস্ক গ্রæপিংয়ের জন্য সরবরাহের পথ কেটে দেয়া এবং কর্মী ও গোলাবারুদ সরবরাহ করার সমস্ত সুযোগ বন্ধ করা।’

৮০ লাখ ইউক্রেনীয় শরণার্থী ইউরোপীয় দেশগুলিতে গিয়েছে : জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার (ইউএনএইচসিআর) বুধবার জানিয়েছে, রাশিয়া তার বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু করার পর থেকে মোট ৭৯ লাখ ৬৭ হাজার ৪৯০জন ইউক্রেনীয় শরণার্থী ইউরোপীয় দেশগুলিতে পৌঁছেছে। ইউএনএইচসিআর-এর কাছে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, শুধুমাত্র গত সপ্তাহেই ইউরোপে গিয়েছে ইউক্রেনেরে ৫২ হাজার ১২২ জন শরণার্থী।

ইউএনএইচসিআর বলেছে যে ২৪ ফেব্রæয়ারী, ২০২২ থেকে ১০ জানুয়ারী ২০২৩ এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ২৮ লাখ ৫২ হাজার ৩৯৫ জন ইউক্রেনীয় রাশিয়ায় আশ্রয় চেয়েছিল। এর পরে রয়েছে পোল্যান্ড (১৫ লাখ ৬৩ হাজার ৩৮৬), জার্মানি (১০ লাখ ২১ হাজার ৬৬৭), চেক প্রজাতন্ত্র (৪ লাখ ৭৮ হাজার ৬১৪), ইতালি (১ লাখ ৬৭ হাজার ৯২৫), স্পেন (১ লাখ ৬১ হাজার ১২), যুক্তরাজ্য (১ লাখ ৫৪ হাজার ৬০০), বুলগেরিয়া (১ লাখ ৫০ হাজার ৫১০), ফ্রান্স (১ লাখ ১৮ হাজার ৯৯৪), রোমানিয়া (১ লাখ ৬ হাজার ৭৮৬), সেøাভাকিয়া (১ লাখ ৫ হাজার ৭৩২) এবং মলদোভা (১ লাখ ২ হাজার ১৬)। অন্যান্য দেশে এ সংখ্যা ১ লাখের বেশি নয়। জাতীয় অস্থায়ী সুরক্ষা এবং সহায়তা কর্মসূচিতে প্রায় ৪৯ লাখ ২৬ হাজার ৩৬৯ শরণার্থী অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ইউএনএইচসিআর অনুসারে, ২৪ ফেব্রæয়ারি থেকে ইউক্রেন থেকে ১ কোটি ৭৪ লাখ ৮ হাজার ৬৪৩ জন প্রতিবেশী দেশে গিয়েছেন। একই সময়ে, ৯৩ লাখ ৭৬ হাজার ৬৭৭ জন সীমান্ত অতিক্রম করে ইউক্রেনে প্রবেশ করেছে। সূত্র : তাস, রয়টার্স, বিবিসি নিউজ।

 

 

 



 

Show all comments
  • Abdullah Bin Jihade ১৩ জানুয়ারি, ২০২৩, ৯:১২ এএম says : 0
    এসব দেখে আর মায়া লাগে না। মায়া- মমতা সবই ফিলিস্তিন, ইয়েমেন, ইরাক, সিরিয়া ও লিবিয়ার মানুষের জন্য উজাড় করে দিয়েছি। এখন শুধু হাসি আসে।
    Total Reply(0) Reply
  • Daulat Khan ১৩ জানুয়ারি, ২০২৩, ৯:১১ এএম says : 0
    বাংলাদেশ ইউরোপের দেশ গুলির তুলনায় ত্রিশ গুন ছোট। বাংলাদেশ ১৬ লাখ রোহিঙ্গা জায়গা দিয়েছে এবং নিজ দেশের লোক সংখ্যা ১৭ কোটি।ইউরোপের প্রতিটি দেশের লোক সংখ্যা কম। তারা ৫০ লাখ ইউক্রেনিয় উদ্বাস্তু জায়গা দিলে তেমন সমস্যা হবে না।ফিলিস্তিন, লেবান,সিরিয়া,ইরাকে তো সারা জীবন তাদের কারনে কষ্ট পাচ্ছে।
    Total Reply(0) Reply
  • MD Junaid ১৩ জানুয়ারি, ২০২৩, ৯:১১ এএম says : 0
    স্বার্থপর জাতিসংঘ তোমরা যখন অন্য অন্য রাষ্ট্রে সিরিয়া ইরাক ফিলিস্তিনি লিবিয়া লেবানন স্থানে আফগানিস্তানের যখন মার ছিল তখন কোথায় আছিলা আর যে রাষ্ট্র এত কথা বলতাছে সেই রাষ্ট্র সিরিয়ার উপর হামলা করছে ইজরায়েলের সরকার এত বাচ্চারার লাইগ্যা নাকি খুব কষ্ট লাগে আক্রমণ করছে কি করছিল
    Total Reply(0) Reply
  • J S Shuvo ১৩ জানুয়ারি, ২০২৩, ৯:১২ এএম says : 0
    এরা যেই ভাবে ইউক্রেনের সমস্যা উপস্থাপন করে এদের কথায় বুঝা যায় সিরিয়া আফগানিস্থান লিবিয়া ইরাক এরা মনে খুব সুখে সীমান্ত পাড়ি দিয়েছে। মিডিয়া পশ্চিমাদের তৌরি সবসময় পশ্চিমাদের পক্ষে কথা কয়।
    Total Reply(0) Reply
  • Wadud Islam ১৩ জানুয়ারি, ২০২৩, ৪:১৩ পিএম says : 0
    Bustered western media always support the criminal USA and Europe.i am very excited about the win of rasa.destroy Ukraine and theirs alley.the scenario of Iraq, iran.psledtine, Afghanistan Syria I can't forget.long live Rasia.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ