পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বান্দরবানের রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলার দুর্গম পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার আরও ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭। গত বুধবার রাতে এক সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের মিডিয়া উইং এর সহকারী পরিচালক খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার যে ৫৫ জন সদস্য পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফের কাছে জঙ্গি প্রশিক্ষণ নিচ্ছিল। তাদের মধ্যে ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে সালেহ আহমেদ ওরফে সাইহা, সাদিকুর রহমান সুমনকে এবং ইমরান বিন রহমান শিথিলকে থানচির দুর্গম এলাকা থেকে, বাইজিদ ওরফে বাইরু, নিজামুদ্দিন হিরনকে রোয়াংছড়ির দুর্গম এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গ্রেফতারকৃত নিজামুদ্দীন হিরণ ২০১৯ সালে ওমান থেকে দেশে ফিরে এসে ব্যবসার সুবাদে জহির নামে এক ব্যক্তির মাধ্যমে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে সংগঠনে যোগদান করে। ২০২১ সালের সে হিজরতের প্রস্তুতি গ্রহণ করা শুরু করে। ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে সে সামরিক প্রশিক্ষণের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রামে আসেন।
গ্রেফতার সালেহ আহমেদ ওরফে সাইহা কুমিল্লার একটি নূরানী মাদরাসায় শিক্ষকতা করতো। পাহাড়ে অবস্থানরত অপর এক জঙ্গি নেতা মো. দিদার হোসেন ওরফে মাসুম ওরফে চম্পাইয়ের মাধ্যমে সে এই জঙ্গি সংগঠনের সাথে যুক্ত হয়। ২০২১ সালের ২৭ ফেব্রæয়ারি সেসহ আরো ৭ জন সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করার জন্য বান্দরবানে অবস্থিত কেএনএফ প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে গমন করেন।
গ্রেফতার সাদিকুর রহমান সুমন ওরফে ফারকুন সিলেট জেলার একটি জিমনেশিয়ামের ট্রেইনার হিসেবে কর্মরত ছিল। সাদিকুর রহমান সুমন নব্য জঙ্গি সংগঠনের সামরিক শাখার প্রধান রনবীরের মাধ্যমে জঙ্গি সংগঠনে যোগদান করে। বহুল প্রচারিত ৪ জন জঙ্গি যারা সিলেট থেকে সেচ্ছায় গৃহত্যাগ করে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে আত্মগোপন করে সে তাদের মধ্যে একজন। সে জঙ্গি সংগঠনটির দ্বিতীয় ব্যাচের একজন প্রশিক্ষণার্থী ছিল। ২০২১ সালের ১৫ নভেম্বর সে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করার জন্য বান্দরবান গমন করে। গ্রেফতার বাইজিদ ইসলাম ওরফে বাইরু ২০১৯ সালে সংগঠনটির আমীর আনিছ ওরফে মাহমুদের মাধ্যমে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ে। ২০২১ সালের নভেম্বরের সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করার জন্য মাহমুদের তত্ত¡াবধানে সে বান্দরবান গমন করে অদ্যাবধি সেখানে অবস্থান করে আসছিল।
গ্রেফতার ইমরান বিন রহমান শিথিল ওরফে বিল্লাল কুমিল্লা থেকে নিখোঁজ হওয়া ৮ জন তরুণের মধ্যে একজন। ২০২২ সালের ২৩ আগস্ট নিখোঁজ হওয়ার পর ২৫-২৮ আগস্ট পর্যন্ত আব্দুল্লাহ নাফিস নামক এক ব্যক্তির তত্ত¡াবধানে নারায়ণগঞ্জে অবস্থান করেছিল। ২৯ আগস্ট থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ এলাকায় শহীদ নামের এক ব্যক্তির তত্ত¡াবধানে অবস্থান করেছিল। ওই বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর সে বান্দরবান গমন করে। গ্রেফতার সালেহ তাকে বান্দরবানে রিসিভ করে। গ্রেফতারের আগ পর্যন্ত ইমরান বিন শিথিল পাহাড়ে আত্মগোপনকৃত জঙ্গিদের সাথে অবস্থান করছিল।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানায়, তারা জামায়াতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার সাংগঠনিক ব্যবস্থাপনায় পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফের তত্ত¡াবধানে ২০২১ সালের ফেব্রæয়ারি মাস থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময়ে বান্দরবানের গহীনে জঙ্গি আস্থানায় আসে। কেএনএফ তাদের বিভিন্ন ক্যাম্পে তাদের সামরিক প্রশিক্ষণ প্রদান করেছে। কেএনএফের তত্ত¡াবধানে পাহাড়ে ৫০-এর অধিক জঙ্গি সদস্য সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছে।
তারা আরো জানা যায়, কেএনএফের প্রধান নাথান বম, সামরিক কমান্ডার কথিত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ভাঙচুং লিয়ান বম, কথিত লে. কর্নেল সলোমন, কথিত লে. কর্নেল লালজং মুই ওরফে মাওয়াইয়া এবং কথিত লে. কর্নেল লাল মুন ঠিয়াল ওরফে চির চির ময়সহ অন্যান্য নেতৃস্থানীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীদের নির্দেশনায় কেএনএফ সদস্যরা পাহাড়ে অবস্থানরত জঙ্গিদেরকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতে সহায়তা করছে এবং এখনো জঙ্গিদেরকে প্রশিক্ষণ, খাবারসহ বিভিন্ন রসদ ও সরঞ্ছাম সরবরাহ করে যাচ্ছে।
র্যাবের মিডিয়া উইং খন্দকার আল মঈন আরও বলেন, ২০২২ সালের ২০ অক্টোবর রাঙামাটির বিলাইছড়ির সাইজামপাড়া ও বান্দরবানের রোয়াংছড়ি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে র্যাব এই জঙ্গি সংগঠনের ৭ জন ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদল কেএনএফের ৩ সদস্যকে গ্রেফতার করেন। এ অভিযানের ফলে জঙ্গি ও বিচ্ছিতাবাদী দলের সদস্যরা বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে দুর্গম পাহাড়ে পালিয়ে যায়। সেনাবাহিনীর দিবা-রাত্রি রুটিন টহল ও র্যাবের সাঁড়াশি অভিযানের ফলে জঙ্গিরা আত্মগোপনে থেকে নিয়মিত স্থান পরিবর্তন করেও আটক এড়াতে পারেনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।