Inqilab Logo

বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ০১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৬ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

মমতার নতুন স্লোগান : মোদী হটাও, দেশ বাঁচাও দেশ চালাচ্ছে আলিবাবা আর চার চোরে

| প্রকাশের সময় : ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

কোলকাতা থেকে কালীপদ দাস : ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ‘আলিবাবা’ অভিহিত করে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বললেন, ‘আলিবাবা আর চার চোরে এখন দেশ চালাচ্ছে’। তবে, মোদীকে আলিবাবা বলে সম্বোধন করলেও  তার চার সঙ্গী চোর কে কে, তা অবশ্য মমতা এদিন খোলাসা করেননি। তবে আকারে ইঙ্গিতে তিনি এটা স্পষ্টই বুঝিয়ে দিয়েছেন এই চার চোরের অন্যতম হলেন দেশের অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি।
বিমুদ্রীকরণকে কেন্দ্র করে মমতা বনাম মোদীর যুদ্ধ শুক্রবার থেকে স্বভাবতই তাই এক নতুন মাত্রা নিয়েছে। মমতা ব্যানার্জি তার আন্দোলনকে আরও তীব্র করেছেন। এখন থেকে ‘মোদী হটাও, দেশ বাঁচাও’, তার এই নতুন স্লোগানের মধ্যে দিয়ে তিনি তার আন্দোলনের সুরকে সপ্তম মাত্রায় বেঁধে  নিয়েছেন।  মমতা বলেছেন, ‘কারও সাথে আমার ব্যক্তিগত শত্রুতা নেই। তবে দুঃখের সঙ্গেই বলতে হচ্ছে নরেন্দ্র মোদী দেশের প্রধানমন্ত্রী, কিন্তু দেশে এখন কোনও নিরাপত্তা নেই। দেশের মানুষ মোটেই  এখন সুরক্ষিত নয়। বর্তমানে মোদী যেভাবে দেশে স্বেচ্ছাচারিতা চালাচ্ছেন তাতে তিনি,  না তার দলের পরোয়া করছেন, না সরকারের পরোয়া করছেন, না দেশের রাজনৈতিক দল বা দেশের আমজনতার পরোয়া করেছেন।’
আলিবাবার সঙ্গে মোদীর তুলনা করে মমতা বৃহস্পতিবার বলেছেন, ‘মনে হচ্ছে যেন তিনি আর তার সঙ্গীই ভোটে জিতে এসেছেন এবং তারাই দেশ চালাচ্ছেন। বাকিরা সব তার হাতের কাঠের পুতুল। কালো টাকার ব্যাপারীদের কাছে মোদী এখন খুব ভালো মানুষ হয়ে উঠেছেন আর অন্য দিকে তার এই বিমুদ্রীকরণ নীতির জন্য দেশের আমজনতা এক এক পয়সার জন্য খাবি খাচ্ছেন। তাদের এই নিত্য সমস্যার দিকে তার কোনও নজরই নেই। মোদীর পদত্যাগ চেয়ে মমতা আরও বলেছেন, ‘টাকা বাতিল কর্মকা-ের আড়ালে তিনি স্বাধীনোত্তর কালের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি করেছেন।  নোট বদলের সিদ্ধান্তকে সামনে রেখে প্রতিদিন এত এত নতুন নিয়ম-কানুন মানুষের ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে যে সাধারণ মানুষ টেরই পাচ্ছেন না যে আসলে দেশটা কে চালাচ্ছে। মোদী  না রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। যে ব্যাঙ্ক নিয়ে  সাধারণ মানুষের এতদিন গর্বের শেষ ছিল না সেই ব্যাঙ্ক সম্পর্কে এখন দিনে দিনে সাধারণ মানুষের আস্থাই উঠে যাচ্ছে।
মমতা এদিন বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে দেশের বড় শিল্পপতিদের  বিরুদ্ধে নই তারা এক দেশ থেকে অন্য দেশে প্রায়শই যাতায়াত করেন। তারা প্লাস্টিক মানির ব্যবহার করতেই পারেন  কিন্তু  দেশে ৯২ শতাংশ মানুষ আছেন যাদের এলাকাতে কোনো ব্যাঙ্কই নেই।  সেখানে তো ক্যাশলেশ-এর কল্পনা করাই যায় না। গ্রামীণ এলাকাগুলোতে মানুষ তাদের টাকাই তুলতে পারছেন না। ব্যাঙ্কগুলো নিজেরাই এখন প্রায়     ‘ক্যাশলেশ’ হয়ে গেছে। আর কেন্দ্রীয় সরকার ‘ফেসলেশ’ হয়ে মানুষের থেকে এখন মুখ লুকোচ্ছে। মোদীজি বলুন কালো টাকার পরিভাষা কী? আর বিদেশ থেকে কালো টাকা আনারই বা কী হলো? মমতা চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেন, ‘এত বড় কেলেঙ্কারি দেশের স্বাধীনতার পর আজ পর্যন্ত হয়নি এবং ভাবষ্যতেও আর হবে বলে মনে হয় না। বিমুদ্রীকরণের আড়ালে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকার কারচুপি করা হয়েছে। এই মুহূর্তে সেইসব কারচুপির তদন্ত হওয়া দরকার। সে দিন আর বেশি দূরে নয় যখন মানুষ সব একজোট হয়ে এর বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামবে। এই টাকা টাকা করে বড় বড় কোম্পানিগুলো তাদের খরচের ৪০ শতাংশ  পর্যন্ত কাটছাঁট করেছে। রাজ্যের চাষীরা তাদের জমিতে চাষ করতে পারছেন না। খুব শিগগির এমন দিন আসছে যেদিন দেশের মানুষ আলু পর্যন্ত খেতে পাবেন না। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন মনরেগার (মহাত্মা গান্ধী ন্যাশনাল রুরাল এমপ্লয়মেন্ট গ্যারান্টি অ্যাক্ট) অধীনে যারা কাজ করেন তারা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মমতা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ