Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সঙ্গে ভারসাম্যমূলক সম্পর্ক রাখা চ্যালেঞ্জিং

বাংলাদেশের উন্নয়নের মহাসড়কে চীন সম্পৃক্ত থাকতে চায় সাংবাদিকদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১২ জানুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

চীন উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে বাংলাদেশের উন্নয়নের মহাসড়কে সম্পৃক্ত থাকতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
গত সোমবার দিবাগত রাতে ঢাকায় দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আলাপকালে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিন গাং এই আগ্রহের কথা জানান। আফ্রিকা যাওয়ার পথে ঢাকায় এক ঘণ্টার যাত্রাবিরতি করেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। রাত ২টার দিকে বিমানবন্দরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন ছিন গাংকে স্বাগত জানান।

গতকাল মঙ্গলবার তার দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারসাম্যের কূটনীতির কারণে অনেকে এখন আমাদের এখানে আসছেন। বাংলাদেশ বিশ্বের ৩৫তম দেশে পরিণত হওয়ায় ব্যবসা-বাণিজ্যের অনেক সুযোগ এখানে আছে। কেউ এগুলো হাতছাড়া করতে চান না। তিনি বলেন, এটা আমাদের জন্য সুখবর যে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিন গ্যাং ঢাকায় যাত্রাবিরতি করেছেন। চীনের কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃবৃন্দ এখন ঢাকায় আছেন। আমরাও সবার সঙ্গে যুক্ততা চাই। এই মুহূর্তে মার্কিন সরকারের একজন প্রতিনিধি ঢাকায় আছেন। এ মাসে আরো কয়েকজনের আসার কথা রয়েছে। তাঁদের সঙ্গেও আমাদের সম্পর্ক বেশ ভালো। আমরা সেই সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে চাই।

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তাঁদের সঙ্গে (যুক্তরাষ্ট্র ও চীন) ভারসাম্যমূলক সম্পর্ক রাখা চ্যালেঞ্জিং। আমরা দুই দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে চাই। বাংলাদেশ যেভাবে চলছে ও এর উন্নয়ন অভাবনীয় এবং চীন দেশটির সহযোগী হিসেবে কাজ করতে চায়। চীনের মন্ত্রী জানিয়েছেন, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে জোগান ব্যাহত হচ্ছে, আর্থিক লেনদেনে সমস্যা হচ্ছে এবং নতুন অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ২০১৬ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের ঢাকা সফরের সময়ে ছিন গ্যাং এসেছিলেন। ৩০ ডিসেম্বর দায়িত্ব নেওয়ার পর এটিই তার প্রথম বিদেশ সফর। দায়িত্ব নেওয়ার ১০ দিনের মধ্যে তিনি ঢাকা সফর করেছেন, এটি বাংলাদেশের জন্য ভালো খবর জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটি আমাদের প্রথম সাক্ষাৎ এবং ভাল খবর। আমাদের বড় ইস্যু হচ্ছে রোহিঙ্গা এবং এ বিষয়ে চীনারা আমাদের সাহায্য করেছে। সেই সহায়তা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি অঙ্গীকার করেছেন। চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, মিয়ানমারে কিছু অসুবিধা আছে। ড. মোমেন বলেন, আমরা বলেছি, জিনিসটা যদি তাড়াতাড়ি সমাধান না হয় তাহলে তারা উগ্রপন্থার দিকে ঝুঁকতে পারে। তারা রাষ্ট্রহীন মানুষ, তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। সে জন্য তারা উগ্রপন্থা ও সন্ত্রাসবাদে জড়িয়ে যেতে পারে। তাতে এই পুরো অঞ্চলের শান্তি বিঘ্নিত হবে। সেজন্য আপনারা বিশেষ উদ্যোগ নেন। যাতে এই সমস্যাটার তাড়াতাড়ি সমাধান হয়। অন্ততপক্ষে প্রক্রিয়া শুরু হয়।

পরারষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য প্রায় ১ হাজার ৪০০ কোটি ডলার। কিন্তু এর মধ্যে চীনের রপ্তানি ১ হাজার ৩০০ কোটি ডলার। বাংলাদেশকে ৯৮ শতাংশ পণ্য শুল্কমুক্ত সুবিধা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল চীন। কিন্তু এটির এখনো গেজেট না হওয়ার কারণে আমাদের ব্যবসায়ীরা এর সুবিধা পাচ্ছেন না। এ বিষয়ে আলোচনার পর চীনের মন্ত্রী জানিয়েছেন, এটি তিনি করবেন। বিভিন্ন বৃহৎ প্রকল্পে চীন যে কাজ করছে, সেটি যেন আরও ত্বরান্বিত হয়, সেটির জন্য আলোচনা করেছি।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের দেশটা গণতান্ত্রিক দেশ আর আপনারা দেখেছেন, গত ১৪ বছরে কত হাজার নির্বাচন হয়েছে এবং সুষ্ঠু হয়েছে। এই সেদিন একটি নির্বাচন হয়েছে এবং সুষ্ঠু হয়েছে। হ্যাঁ, অন্যরা আমাদের পরামর্শ দিতে পারে। এখন একটু দুঃখজনক নির্বাচনের সময় কেউ মারা যায়। আল্লাহর রহমত এবার কেউ মারা যায়নি। এগুলো আমাদের দূর করতে হবে, এটা কেউ সুপারিশ করে দূর করতে পারবে না। এটা আমাদেরই করতে হবে। দেশের জনগণ, সব দল; সরকারপক্ষ-বিরোধীপক্ষ আমরাই এই পরিবেশ উন্নত করতে পারি। অন্য কেউ হয়তো জিনিসটি ধরিয়ে দিতে পারে কিন্তু কাজটি আমাদেরই করতে হবে।

এর আগে, সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানের আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভবনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। ##



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ