টমোমি শিমিজু জাপানের বিথ্যাত লেখক ও চিত্রকর। তিনি চীনের উইঘুর বন্দিশিবিরে থাকা এক উজবেক নারীর অভিজ্ঞতার আলোকে একটি বই লিখেছেন। জিনজিয়াং অঞ্চলের উইঘুর বন্দিশিবর যেটিকে চীনা কর্তৃপক্ষ ‘পুনঃশিক্ষা’ ক্যাম্প বলে— সেখানে ওই নারী মান্দারিন ভাষা শেখাতেন। তাকে ভাষা শেখানোর জন্য বাধ্য করা হয়েছিল। তার বন্দিশিবিরের অভিজ্ঞতাই ছবি ও লেখায় তুলে ধরেছেন শিমিজু। খবর রেডিও ফ্রি এশিয়া।
লেখক বইটিতে জিনজিয়াংয়ের বন্দিশিবির থেকে জীবিত ফেরা নারীদের অভিজ্ঞতার চিত্র তুলে ধরেন। ওই বন্দিশিবিরগুলোতে ১৮ লাখ উইঘুর এবং অন্যান্য তুর্কি সংখ্যালঘুদের ধরে রেখেছে বলে মনে করা হয়।
শিমিজুর বইয়ে কেলবিনুর সিদিক (৫৩) নামে এক নারী, যিনি কালবিনুর সিদিক নামেও পরিচিত—তার ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করা হয়েছে। সিদিক জিনজিয়াংয়ের রাজধানী উরুমকির একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় তিন দশক মান্দারিন ভাষা শেখান। ২০১৭ সালে চীনা কর্তৃপক্ষ তাকে জিনজিয়াংয়ের ‘পুনঃশিক্ষা’ শিবিরে মান্দারিন শেখাতে বাধ্য করে। জিনজিয়াংয়ে মুসলিম নারীদের জন্মহার দমনের সরকারি কর্মসূচির ফলে সিদিকও জোরপূর্বক গর্ভপাত ও বন্ধ্যাকরণের শিকার হন।
এর আগে ২০২১ সালে লন্ডনের একটি স্বাধীন গণ আদালতে সিদিক সাক্ষী দিয়েছিলেন। ওই সাক্ষীর ভিত্তিতে বইটি লিখেন শিমিজুর। গত ডিসেম্বরে বইটি প্রকাশ হয়।
এই প্রসঙ্গে লেখক বলেন, আমি যখন উইঘুরদের পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে পারি, তখন হতবাক হয়ে যাই। ভাবলাম শিবিরের লোকদের উদ্ধারের জন্য তাদের পরিস্থিতি সম্পর্কে মানুষকে জানানোটা গুরুত্বপূর্ণ। আমি আরও ভেবেছিলাম যদি সহজে বোঝা যায় এমন ছবিযুক্ত কমিক দিয়ে তাদের কঠোর অভিজ্ঞতাকে চিত্রিত করি, তাহলে বিশ্ব এটি আরও ভালোভাবে বুঝতে পারবে।
এদিকে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে ওই আদালত ঘোষণা করে, চীন জিনজিয়াংয়ে উইঘুর এবং অন্যান্য জাতিগত সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালিয়েছে।
সম্প্রতি ৫৫টি উইঘুর সংগঠন ৯ ডিসেম্বরকে উইঘুর গণহত্যা স্বীকৃতি দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। এ ছাড়া ২০টি দেশের উইঘুর সংগঠন বিশ্ব নেতাদেরকে উইঘুর মুসলিমদের বিরুদ্ধে চীনা সরকারের এ নৃশংসতা বন্ধে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানায়।