করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে দীর্ঘদিন ধরে চলা চীনের কঠোর শূন্য কোভিড নীতিকে ‘যৌক্তিক এবং সুচিন্তিত’ বলে মন্তব্য করেছেন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। নতুন বছরে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে শূন্য কোভিড নীতির পক্ষে চীনা কমিউনিস্ট সরকারের (সিসিপি) অবস্থান তুলে ধরেন তিনি।
জিও পলিটিক জানিয়েছে, ভাষণে সরকারের অপ্রস্তুত পদক্ষেপ এবং হঠাৎ করে শূন্য কোভিড নীতি বাতিলের প্রসঙ্গ তোলেননি চীনা প্রেসিডেন্ট, মূলত যে কারণে চীনে কোভিডের সংক্রমণ বাড়ছে ব্যাপকভাবে। সরকার কোভিড সংক্রমণ প্রতিরোধে ‘বিজ্ঞানভিত্তিক এবং লক্ষ্যভিত্তিক পদ্ধতি’ অনুসরণ করে কোভিড নীতি গ্রহণ করেছে।
শি জিনপিং বলেন, “একটি বিজ্ঞানভিত্তিক পদ্ধতির অনুসরণ করে আমরা মানুষের জীবন ও স্বাস্থ্যকে যতটা সম্ভব রক্ষা করতে ক্রমবর্ধমান পরিস্থিতির আলোকে আমাদের কোভিড প্রতিক্রিয়াকে মানিয়ে নিয়েছি। সাধারণ জনগণ ও কর্মকর্তারা, বিশেষ করে চিকিত্সার সঙ্গে যুক্ত পেশাদার ও কমিউনিটির কর্মীরা সাহসিকতার সঙ্গে নিজেদের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।”
তিনি আরও বলেন, “অসাধারণ প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমরা অভূতপূর্ব সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে জয়লাভ করেছি। আর এটি কারও জন্য সহজ যাত্রাও ছিল না।”
চীনা প্রেসিডেন্ট তার বক্তব্যে জনগণের দুর্ভোগ, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে জনঅসন্তোষ এবং এসবের ফলে সরকারকে যে কোভিড নীতি থেকে সরে এসেছে সে সম্পর্কে কোনো কথা বলেননি তিনি।
কোভিড-১৯ সংক্রমণের বিস্তার রোধে দীর্ঘদিন ধরে দেশজুড়ে ‘শূন্য কোভিড নীতি’ বাস্তবায়ন করে আসছিল শি জিনপিং সরকার। কঠোর কোভিড নীতি নিয়ে জনমনে অসন্তোষ আগে থেকেই ছিল। কিন্তু সম্প্রতি পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ শিনজিয়াংয়ে একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভবনে অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের ঘটনায় সরকারের কোভিড নীতিকে দায়ী করে বিক্ষোভ দানা বাঁধে।
আগুনে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ার পেছনে কঠোর লক্ডাউনকে দায়ী করা হয়। কারণ ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে দেরি করেছিল বলে অভিযোগ ওঠে। জনমনে অসন্তোষ বাড়লে মানুষ সড়কে নেমে বিক্ষোভ করে। অনেকেই ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির নেতাদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বিক্ষোভ-প্রতিবাদ চলার মধ্যে কঠোর কোভিড নীতি সরে আসার ঘোষণা দেয় সরকার।