Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

যৌনাচারের গুরু নারীদের পণ্যের মতো ব্যবহার করত

প্রথমে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে শুরু হত যৌন উৎপীড়ন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১০ জানুয়ারি, ২০২৩, ১২:০১ এএম

ছিলেন পেশাদার ক্রীড়াবিদ, সেখান থেকে স্বঘোষিত নারীবিদ্বেষী গুরু। রোমানিয়ার ধনকুবের অ্যান্ড্রু টেটকে নিয়ে বিতর্ক ছিল বহু দিন ধরেই। প্রকাশ্যে বার বার কটু কথা বলেও কী ভাবে পার পেয়ে যান টেট, তা নিয়ে প্রশ্ন ছিল অনেকের মনেই। ২৯ ডিসেম্বর ধর্ষণ ও নারী পাচারের মতো মারাত্মক অভিযোগে বুখারেস্ট থেকে গ্রেফতার হন তিনি। রীতিমতো ওয়েবসাইট খুলে নারীদের যৌনাচারের ভিডিয়ো প্রচার করতেন অ্যান্ড্রু ও তার ভাই ত্রিসতান। সঙ্গে চলত নিজেদের নারীবিদ্বেষী মতবাদের প্রচার। ‘হাসলার ইউনিভার্সিটি’ নামে একটি ওয়েবসাইট থেকে সেই মত প্রচার করতেন দুই ভাই। অভিযোগ এ সবের সঙ্গে চলত নারী পাচারও। এ ভাবেই অন্তত আটশো কোটি টাকার মালিক হয়ে ওঠেন অ্যান্ড্রু টেট। ডিসেম্বর মাসে এক মহিলা পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন, টেট দিনের পর দিন তাঁকে আটকে রেখে যৌন হেনস্থা করেছেন। বলপূর্বক যৌনাচারের ভিডিয়োও তোলেন। তার পরই তদন্ত শুরু করে রোমানিয়া প্রশাসন। প্রাথমিক তদন্তের পর রোমানিয়া প্রশাসনের অভিযোগ, অন্তত ৬ জন মহিলাকে আটকে রেখেছিলেন টেট এবং তার সঙ্গীরা। প্রাথমিক তদন্তের পর রোমানিয়া প্রশাসন জানিয়েছে, এর আগে ২০১৫ সালেও ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল টেটের বিরুদ্ধে। সে সময় ব্রিটেনে ছিলেন তিনি। অভিযোগ থেকে বাঁচতে তিনি পালিয়ে রোমানিয়া চলে যান বলে অভিযোগ। ৬ জন অভিযোগকারিণী প্রশাসনকে জানিয়েছেন, প্রেমের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ফাঁসানো হয় তাঁদের। প্রথমে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে তার পর শুরু হত যৌন উৎপীড়ন। এর পর তাঁদের নিয়ে যাওয়া হত বুখারেস্টের একটি অট্টালিকায়। সেখানেই জোর করে তাঁদের পর্ন ছবিতে নামতে বাধ্য করা হত বলে অভিযোগ।টেট সমাজমাধ্যমে নিজের বিলাসবহুল জীবনযাত্রার ছবি এবং ভিডিয়ো প্রকাশ করতেন নিয়মিত। চুরুট হাতে বিলাসবহুল গাড়িতে চেপে ছবিও দিতেন তিনি। সমাজমাধ্যমে টেট এক সময় দাবি করেন, ফেরারি বুগাত্তি-সহ তার ৩৩টি বিলাসবহুল গাড়ি রয়েছে। ইতিমধ্যেই তার ১০টির বেশি গাড়ি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। প্রভাবী হওয়ার আগে পেশাদার কিকবক্সার ছিলেন অ্যান্ড্রু। ২০০৫ সালে ‘কিং কোবরা’ নামে ওই খেলায় বেশ নাম করেন তিনি। লাইট হেভিওয়েট বিভাগে টেট দু’টি বিশ্ব খেতাবও জিতেছেন। পড়ে এমএমএ-তেও নামের তিনি। গ্রেফতার হওয়ার আগেও রোমানিয়ার একটি এমএমএ সংস্থার হয়ে ধারাভাষ্য দিতেন তিনি। শুধু ধনসম্পদ কিংবা শরীর নয়, নিজেকে পুরুষতান্ত্রিকতার গুরু হিসাবে নেটমাধ্যমে প্রচার করা শুরু করেন টেট। বিভিন্ন নারীবিদ্বেষী ভিডিয়ো প্রচার করতে শুরু করেন তিনি। নিজেকে প্রকাশ্যেই নারীবিদ্বেষী বলেও ঘোষণা করেন টেট। নিজের এই মতবাদ যাতে আরও ছড়িয়ে পড়ে তাই কী ভাবে ‘দাদাগিরি’ করতে হবে তার পাঠ দিতে শুরু করেন নেটমাধ্যমে। নারীরা পুরুষদের কেনা পণ্যের মতো, টেট কার্যত এমন কথাই প্রচার করতেন বলে অভিযোগ। প্রশাসনের অভিযোগ, যে মহিলাদের আটকে রেখেছিলেন টেট এবং তার সঙ্গীরা, তাঁদের যৌনদাসীর মতো ব্যবহার করা হত। এমনকি, বন্দি মহিলাদের শরীরে ‘টেটের গোলাম’ বলে ট্যাটুও করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ঘটনাচক্রে তার পরই টেটের বিরুদ্ধে নড়েচড়ে বসে রোমানিয়া প্রশাসন। এক মহিলা পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছিলেন, টেট দিনের পর দিন তাঁকে আটকে রেখে যৌন হেনস্থা করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই অ্যান্ড্রু টেট, ত্রিসতান টেট-সহ মোট ৪ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। দ্য মিরর।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ