Inqilab Logo

রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সোনা-রুপার দামে রেকর্ড, সোস্যাল মিডিয়ায় সমালোচনা

রুহুল আমিন | প্রকাশের সময় : ৯ জানুয়ারি, ২০২৩, ১:৩৪ পিএম

দেশের বাজারে সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে। স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার (পাকা সোনা) দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম বাড়ানো হয়েছে। এর ফলে দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এক ভরি সোনার দাম ৯০ হাজার টাকা ছাড়িয়েছে। সব থেকে ভালো মানের সোনার দাম ভরিতে ২ হাজার ৩৩৩ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে ভালো মানের প্রতি ভরি সোনার দাম বেড়ে হয়েছে ৯০ হাজার ৭৪৬ টাকা। আজ রোববার (৮ জানুয়ারি) থেকে সোনার এই নতুন দাম কার্যকর করা হয়েছে বলে জানান বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।

এর আগে গত ৩০ ও ৪ ডিসেম্বর এবং ১৮ ও ১৩ নভেম্বর দেশের বাজারে সোনার দাম বাড়ানো হয়। ফলে দুই মাসের কম সময়ের মধ্যে দেশের বাজারে পাঁচ দফা সোনার দাম বাড়লো। এতে দেশের বাজারে ইতিহাসের সর্বোচ্চ দামে পৌঁছে গেছে দামি এই ধাতুটির দাম। এর আগে কখনো দেশের বাজারে সোনার ভরি ৯০ হাজার টাকা স্পর্শ করেনি। গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর সব থেকে ভালো মানের সোনার দাম ভরিতে ১ হাজার ১৬৬ টাকা বাড়ানো হয়। এতে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম দাঁড়ায় ৮৮ হাজার ৪১৩ টাকা। দেশের বাজারে এতদিন এটিই সোনার সর্বোচ্চ দাম ছিল।

নতুন বছর ২০২৩ সালের প্রথম সপ্তাহেই সেই রেকর্ড ভেঙে নতুন উচ্চতায় পৌঁছালো সোনার দাম। ভালো মানের সোনার পাশাপাশি বাড়ানো হয়েছে সব ধরনের সোনার দাম। মান অনুযায়ী প্রতি ভরি সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে ১ হাজার ৫৭৫ থেকে ২ হাজার ৩৩৩ টাকা পর্যন্ত।

সোনার পাশাপাশি দাম বাড়ানো হয়েছে রুপার। মান অনুযায়ী ভরিতে রুপার দাম বাড়ানো হয়েছে ১১৭ টাকা থেকে ১৯৯ টাকা পর্যন্ত। বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটি শুক্রবার (৭ জানুয়ারি) বৈঠক করে এই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। পরে মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান এম এ হান্নান আজাদ সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে দাম বাড়ানোর এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার দাম বেড়েছে। তাই সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতি সোনার ও রুপার নতুন দাম নির্ধারণ করেছে। নতুন মূল্য অনুযায়ী, সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেট প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম ২ হাজার ৩৩৩ টাকা বাড়িয়ে ৯০ হাজার ৭৪৬ টাকা করা হয়েছে।

এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ২ হাজার ২১৬ টাকা বাড়িয়ে ৮৬ হাজার ৬০৫ টাকা করা হয়েছে। ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ১ হাজার ৯২৪ টাকা বাড়িয়ে ৭৪ হাজার ২৪১ টাকা করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির সোনার দাম ভরিতে ১ হাজার ৫৭৫ টাকা বাড়িয়ে ৬১ হাজার ৮৭৮ টাকা করা হয়েছে।

সোনার পাশাপাশি বাড়ানো হয়েছে রুপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ১৯৯ বাড়িয়ে এক হাজার ১ হাজার ৭১৫ টাকা করা হয়েছে। ২১ ক্যারেটের রুপার দাম ১৯৮ টাকা বাড়িয়ে এক হাজার ৬৩৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের রূপার দাম ১৭৫ টাকা বাড়িয়ে এক হাজার ৪০০ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির রূপার দাম ১১৭ টাকা বাড়িয়ে ভরি ১ হাজার ৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এর আগে ২৫ অক্টোবর এবং ২৭, ১৯ ও ১৫ সেপ্টেম্বর দেশের বাজারে সোনার দাম কমানো হয়। তার আগে ১১ সেপ্টেম্বর এবং ২২ আগস্ট সোনার দাম বাড়ানো হয়। এর আগে ১৮ আগস্ট সোনার দাম কিছুটা কমানো হয়েছিল। তবে তার আগে ৪ ও ৭ আগস্ট এবং ২৭ ও ২৯ জুলাই সোনার দাম বাড়ানো হয়।

গতকাল শনিবার থেকেই এ নিয়ে সোস্যাল মিডিয়ায় বিরূপ মন্তব্য করতে থাকে অনেকেই। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অবিবাহিত তরুণ-তরুণীদের মন্তব্য লক্ষ্য করা যায়। অনেকেই আবার বলেন, বিয়েটা বুঝি আর করা হলো না।

মামুন আহমেদ নামে একজন লিখেছেন, বিয়ে করার ইচ্ছে চলে যাচ্ছে। একদিকে বিয়ের খরচ বাড়ছে, অন্যদিকে স্বর্ণের বাজার আকাশচুম্বী। এমন হলে কীভাবে বিয়ে করবো বুঝতে পারছি না।

রাসেল নামে একজন লিখেছেন, বিয়ে বুঝি আরো কয়েকটা বছর পিছিয়ে গেলো।

রোহান রাজীব নামে একজন লিখেছেন, স্বর্ণের দাম রেকর্ড করছে। এখন সিঙ্গেলদের মানবিক বিয়ে করা ছাড়া উপায় নেই।

জাহিদুল ইসলাম নামে একজন লিখেছেন, কীভাবে বিয়ে করবো। কাবিনের টাকার ভ্যাট বাড়ছে, সোনার দাম বাড়ছে, বাজারের সব জিনিসের দাম বাড়তেছে। আমাদের কথা চিন্তা করার কেউ কী আছে। বিয়ে বুঝি আর করা হলো না।

নিরুপমা দাস নামে একজন লিখেছেন, মানুষের উচিত এসবের ব্যবহার এবং ক্রয় কমিয়ে দেওয়া, তাহলে এমনিতেই দাম কমে যাবে।

শামীম রেজা নামে একজন লিখেছেন, যে হারে সোনার দাম বাড়তাছে তাতে মনে হচ্ছে যে-সোনার বদলে হবু বউকে শাপলা ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে আনতে হবে।

আসমা ইসলাম নামে একজন লিখেছেন, চিন্তার কোনো কারণ নেই, বিয়ে তো আর করতেছি না।

গাজী নামে একজন লিখেছেন, স্বর্ণ মানুষ কিনবে না এক সময়। আমাদের উচিত স্বর্ণ পরা বন্ধ করা। এসব দেখলে মনে হয় দেশে কোনো সরকার নেই। যেভাবে সব কিছুর দাম বাড়তেছে, সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে সব কিছু চলে যাচ্ছে। সরকারের উচিত অনতিবিলম্বে দাম কমানো, নয়তো পদত্যাগ করা।

 

খাদিজা আক্তার নামে একজন লিখেছেন, ভা¹িস বিয়েটা আগেই করছিলাম, নয়লে সোনার অভাবে বিয়েটা করা হতো মনে হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ