যাদের নিজেদের নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ তাদের বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে মাতব্বরি মানায় না বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি আরো বলেন, আমেরিকার ৮০ থেকে ৭২ পার্সেন্ট জনগণ মনে করে আমেরিকার ডেমোক্রেসি খুব দুর্বল। আর দেশটির রিপাবলিকান পার্টির ৭৭ পার্সেন্ট মনে করে গত প্রেসিডেন্সি ইলেকশন ছিল ফ্রড ইলেকশন এবং দে হ্যাভ স্টোলেন দ্য ইলেকশন। এইরকম তাদের মনমানসিকতা। আমাদের দেশেও কিছু লোক আছে এই ধরনের। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র বাংলাদেশে আগামী জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণের ঘোষণা দিয়েছেন। নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষক নিয়ে কোনো সমস্যা নেই বলে মন্তব্য করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, বিদেশি পর্যবেক্ষক আমরা অ্যালাউ করবো। উই হ্যাভ নাথিং টু হাইড (আমাদের গোপন করার কিছুই নেই)। গতকাল সকালে সিলেটে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ই-গেট কার্যক্রমের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এমন মন্তব্য করেন ড. মোমেন।

গত শুক্রবার মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র নেড প্রেইসের বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে মন্তব্য প্রসঙ্গে ড. মোমেন আরো বলেন, ওই দেশে অ্যাভারেজ কতজন লোক ভোট দেয়? পঞ্চাশের নিচে ভোট দেয়। আর আমাদের দেশে ৭২ থেকে ৯০ পার্সেন্ট লোক ভোট দেয়। আমাদের দেশে ইলেকশন অংশগ্রহণমূলক হয়, স্বতঃস্ফূর্ত হয়। ওইসব দেশে ইলেকশনের এক মাস আগে ক্যাম্পেইন শুরু হয়, আমাদের শুরু হয়ে যায় এক বছর আগেই।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই দেশের সৃষ্টি হয়েছিল গণতন্ত্র, মানবাধিকার তথা ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য। যখন (সত্তরের নির্বাচনে) আওয়ামী লীগ মেজরিটি পেল, তাদেরকে সরকার গঠন করতে দেয়া হয়নি। তখনই তো আন্দোলন শুরু করলাম আমরা। তারপর জেনোসাইড হওয়ার পর স্বাধীনতা ঘোষণা করলাম। আমাদের দেশের জন্ম হয়েছে ন্যায়বিচার, গণতন্ত্র, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান জন্য। এই দেশের প্রত্যেক মানুষের রন্ধ্রে রন্ধ্রে এই প্রিন্সিপলগুলো আছে। সো, অন্যরা আমাদের মাতব্বরি করে দেয়ার দরকার নাই। উনারা নিজেদের আয়নায় দেখুক।

মন্ত্রী আরো বলেন, অন্যরা মাতব্বরি করতে পারেন। কিন্তু দে শুড ফলো আস, নির্বাচনের মাধ্যমে সবসময় সরকার গঠন করেছে আওয়ামী লীগ। সুতরাং ওই সম্পর্কে উনারা যে বিভিন্ন সন্দেহ পোষণ করেন, তাদের ইতিহাস সম্পর্কে অভিজ্ঞতার অভাব, জ্ঞানের অভাব। এবং তারা হয়তো জিনিসগুলো ঠিক মতো পর্যবেক্ষণ করছেন না বলে অনেক সময় অনেকগুলো অবান্তর বক্তব্য দিয়ে থাকেন।

এর আগে সিলেটে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাত্রীদের সুবিধার্থে ৬টি ই-গেট কার্যক্রমের উদ্বোধনকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, শেখ হাসিনার দিকনির্দেশনায় বাংলাদেশ পুরো বিশে^ প্রশংসিত হচ্ছে। এছাড়া সিলেটের বিরাট সংখ্যক মানুষের দ্বৈত নাগরিকত্ব আছে। আমাদের যাদের ডুয়েল সিটিজেন আছে তাদের নো সার্ভিস ভিসা আরো বেগবান করতে হবে। যাতে প্রবাসীরা দ্রুত এই সার্ভিস নিতে পারে।