Inqilab Logo

রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ০৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

কারাদাঙ্গায় আহত ৬০ পালিয়েছে ৭০ বন্দি

নির্বাচন নিয়ে ৩ বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে মিয়ানমারের বৈঠক

ইনকিলাব ডেস্ক : | প্রকাশের সময় : ৯ জানুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

মিয়ানমারের পশ্চিমে ইয়াঙ্গুনের একটি কারাগারে দাঙ্গা সংঘটিত হয়েছে। এতে এক বন্দি নিহতসহ ৬০ জনেরও বেশি আহত হয়েছে। শনিবার মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এই তথ্য জানিয়েছে। খবরে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে কারারক্ষীরা একজন বন্দীর কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন জব্দ করে। তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এরপর পাথেইনের কারাগারে দাঙ্গা শুরু হয়। শুক্রবার সকালে প্রায় ৭০ জন বন্দী তাদের সেল থেকে পালিয়ে যান। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, বন্দীরা নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর লাঠি, ইট এবং সিমেন্টের টুকরো দিয়ে আাক্রমণ করে। কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে কিন্তু সমঝোতা প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। এরপর তারা বলপ্রয়োগের আশ্রয় নেয়। জান্তা বলেছে, সংঘর্ষে একজন বন্দী নিহত, দুই পুলিশ ও নয়জন প্রহরীসহ ৬৩ বন্দী আহত হয়েছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম নিহত বন্দীকে রাজনৈতিক বন্দী হিসেবে বর্ণনা করেছে। ঘটনার তদন্ত শুরুর কথা জানিয়েছে জান্তা। ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। এ কারণে দেশটিতে দেখা দেয় রাজনৈতিক সংকট ও জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ। এর পর থেকে মিয়ানমারজুড়ে বিক্ষোভ দমনের নামে চলছে জান্তার দমন-পীড়ন। প্রাণ গেছে হাজারের বেশি মানুষের। জান্তার হাতে বন্দী আছেন দেশটির গণতন্ত্রকামী নেত্রী অং সান সু চিসহ অনেক রাজনীতিক। অপর এক খবরে বলা হয়, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে তিনটি জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে আলোচনা করেছে। এক সশস্ত্র গোষ্ঠীর মুখপাত্রের বরাতে সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এই খবর প্রকাশ করেছে। শুক্রবার মিয়ানমারের রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত এক সংবাদমাধ্যম জানায়, রাজধানী নেপিদোতে স্টেট প্রোগ্রেস পার্টি (এসএসপিপি), ইউনাইটেড ওয়া স্টেট পার্টি (ইউডব্লিউএসপি) ও ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সের সশস্ত্র কর্মকর্তাদের সঙ্গে জান্তা বাহিনী তিন দিন ধরে আলোচনা চালাচ্ছে। এই তিন সশস্ত্র গোষ্ঠী জান্তা বাহিনীকে ক্ষমতা থেকে সরাতে লড়াই করছে। মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলীয় শান রাজ্যের সশস্ত্র গোষ্ঠী এসএসপিপির এক মুখপাত্র জানান, সামরিক বাহিনী তাদের এলাকায় অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করার কথা বলেছে। তারা নির্বাচনের বিরোধিতা করবেন না বলে জানিয়েছেন। রাজধানী নেপিদোয় বুধবার স্বাধীনতা দিবসের প্যারেডে ভাষণ দিতে গিয়ে জন্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইং মিয়ানমারে বহু দলের অংশগ্রহণে ‘অবাধ ও সুষ্ঠু’ নির্বাচন আয়োজনের কথা বলেন। তবে কবে নির্বাচন হবে, সে বিষয়ে কিছু বলেননি তিনি। জান্তাপ্রধান বলেন, একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে মিয়ানমারের নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেছে। ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। এ কারণে দেশটিতে দেখা দেয় রাজনৈতিক সংকট ও জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ। এর পর থেকে মিয়ানমারজুড়ে বিক্ষোভ দমনের নামে চলছে জান্তার দমন-পীড়ন। প্রাণ গেছে হাজারের বেশি মানুষের। জান্তার হাতে বন্দী আছেন দেশটির গণতন্ত্রকামী নেত্রী অং সান সু চিসহ অনেক রাজনীতিক। খবরে বলা হয়, উত্তরাঞ্চলের শান রাজ্য নিয়ন্ত্রণ করে এসএসপিপি। এর এক মুখপাত্র বলেছেন, আমাদের এলাকায় অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে অনুরোধ জানিয়েছে সেনাবাহিনী। আমাদের দিক থেকে আমরা তাদের নির্বাচনে বাধা দেবো না। একই সঙ্গে রাষ্ট্র পরিচালিত গ্লোবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমারও এই বৈঠকের বিষয়ে রিপোর্ট করেছে। তবে বৈঠকের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি ইউডব্লিউএসপির মুখপাত্র। ইউডব্লিউএসপির সামরিক শাখা ইউনাইটেড ওয়া স্টেট আর্মির (ইউডব্লিউএসএ) আছে প্রায় ২৫০০০ সদস্য। তাদেরকে বিশ্বে রাষ্ট্রীয় নয় এমন সবচেয়ে বৃহৎ শক্তির অন্যতম হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ইউডব্লিউএসএ’র নিয়ন্ত্রণে আছে চীনের সঙ্গে মিয়ানমারের উত্তরের সীমান্তে শান রাজ্য। এই রাজ্যের প্রতিটি পরিবার থেকে কমপক্ষে একজন সদস্যকে নিয়ে গড়ে উঠেছে তাদের নিজস্ব বাহিনী ইউডব্লিউএসএ। মিয়ানমারের সামরিক জান্তা গত মাসেক্ষুদ্র ৫টি বিদ্রোহী জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে বৈঠক করেছে। পরে তারা একটি যৌথ বিবৃতি দিয়েছে। এতে জান্তা সরকারের নির্বাচনে সমর্থন দেয়ার কথা বলেছে তারা। মিয়ানমারে প্রায় ২০টি জাতিগত বিদ্রোহী বাহিনী আছে। তারা একে অন্যের বিরুদ্ধে লড়াই করে। আবার তাদের স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে দশকের পর দশক সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করছে। এ ছাড়া মাদক ও প্রাকৃতিক সম্পদের লোভনীয় ব্যবসাও নিয়ন্ত্রণ করে। এসব করেই তারা আন্দোলনের অর্থ সংগ্রহ করে। আল-জাজিরা, রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ