Inqilab Logo

শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

মিরপুরে সন্ধ্যার আলো রনি

রাজার মতো শুরু মাশরাফিদের

স্পোর্টস রিপোর্টার, মিরপুর থেকে | প্রকাশের সময় : ৭ জানুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

সমালোচনা, সময় বিভ্রাট, মন্থর উইকেট- এইতো বিপিএলের নিয়মিত চিত্র। সেই সাথে এবার নতুন করে যোগ হয়েছিল অব্যবস্থাপনার চূড়ান্ত দৃষ্টান্ত। আগের দিনও টিকেট বিক্রির খরা দিচ্ছিল একটি আলোহীন বিপিএলেরই চিত্র, তবে সব কিছুকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে মিরপুরের সন্ধ্যার আলো কেড়ে নিলেন রনি তালুকদার। তার ব্যাটে ফুটে উঠলো টি-টোয়েন্টির সত্যিকারের স্বার্থকতা। আগ্রাসী ব্যাটসম্যান হিসেবে রনি বরাবরই পরিচিত। বিপিএলেও নানা সময়ে সেই পরিচয়ে নিজেকে মেলে ধরেছেন তিনি। তবে এবার ব্যাট হাতে এমন ঝড় তুললেন যে, শুধু নিজেকেই নয়, একটি কীর্তিতে ছাড়িয়ে গেলেন বাংলাদেশের সবাইকে। বিপিএলের নতুন আসরের উদ্বোধনী দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে ১৯ বলে ফিফটি করেন রনি। ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের এই আসরে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড এটিই।
দেশি-বিদেশি মিলিয়ে বিপিএলে সবচেয়ে কম বলে ফিফটির রেকর্ড সুনিল নারাইনের। গত আসরে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে এই ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটার ফিফটি করেন ¯্রফে ১৩ বলে। বিপিএলের বাইরে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে টি-টোয়েন্টিতে দ্রুততম ফিফটি শুভাগত হোমের। ২০১৯ সালে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ ফিফটিতে শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে ১৬ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করেন তিনি মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের বিপক্ষে। তার ইনিংস থামে নবম ওভারে। পাকিস্তানি খুশদিল শাহর বাঁহাতি স্পিনে স্টাম্পড হয়ে যান তিনি ৬৭ রানে। তার ৩১ বলের ইনিংসে ১১ চারের সঙ্গে ছক্কা একটি। বিধ্বংসী ইনিংস খেলে রনি যখন আউট হন, তার উদ্বোধনী জুটির সঙ্গী মোহাম্মদ নাঈম শেখের রান তখন ২২ বলে ১৫।
রংপুরের রান দুইশ ছাড়িয়ে যায়নি নাঈমের ৩৪ বলে ২৯ রানের ধীরগতির ইনিংসের কারণে। তিনে নামা শোয়েব মালিক করেন ২৬ বলে ৩৩ রান এবং অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান যোগ করেন ১১ বলে মূল্যবান ১৯ রান। সেই সুবাদে ৫ উইকেটে ১৭৬ রানের পুঁজি পায় রংপুর। ফারুকি, মুস্তাফিজ, খুশদিল ও মোসাদ্দেক শিকার করেন একটি করে উইকেট।
এদিকে দিনের প্রথম ম্যাচটা হল বড্ড একচেটিয়া। মাশরাফির সিলেট সিক্সার্সের কাছে পাত্তাই পেল না শুভাগত হোমের চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। তবে ধীর গতির ও অসম বাউন্সের উইকেটে এই ম্যাচের নায়ক কোন স্পিনার নন, রেজাউর রহমান রাজা নামের এক তরুণ পেসার। চার উইকেট নিয়ে এই ২৩ বছর বয়সী পেসার একাই ধসিয়ে দিলেন চট্টগ্রামের ব্যাটিং মেরুদন্ড। রাজার বোলিং তোপে গোটা ২০ ওভার ব্যাটিং করে বন্দর-নগরীর দলটি স্কোরবোর্ডে পুঁজি করল ৯ উইকেটের বিনিময়ে সর্বসাকুল্যে ৮৯ রান। নাজমুল হোসেন ও জাকির হাসানের ব্যাটিংয়ে সিলেট সে রান টপকে গেছে ৪৫ বল ও ৮ উইকেট হাতে রেখেই।
দুপুরে শুরু হওয়া ম্যাচের টসে জিতে অনুমিতভাবেই বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন বিপিএলের সবচেয়ে সফল অধিনায়ক মাশরাফি। অভিজ্ঞ এই অধিনায়ক মন্থর উইকেটেও মাত্র মাত্র ৫ ওভার ব্যবহার করলেন তার দুই স্পিনারকে। বাকি ওভারগুলোতে তার আস্থা ছিল পেসারদের উপরই। মাশরাফি ও মোহাম্মদ আমিরের প্রথম দুই ওভারে আসে মাত্র দুই রান। এই দুইজন আবার ক্রিকেট মাঠে নেমেছেন প্রায় আট মাস পর। বীপরিতে উল্টো চিত্র চট্টগ্রাম শিবিরে, শুরু থেকেই তারা ছিল খাপছাড়া। তাদের টপ অর্ডারের কোন ব্যাটারই পারলেন না একশ স্ট্রাইকরেট রেখে ব্যাট করতে। মেহদি মারুফ পান ১৪ বলে ১১ রান এবং আল আমিন ২০ বলে করেন ১৮ রান।
কাপ্তান শুভাগত যখন ফিরে যান তখন চট্টগ্রামের দলীয় সংগ্রহ ৩ উইকেটের বিনিময়ে ২২ রান। সেখান থেকে আল আমিনের সঙ্গে ২২ রানের ও যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব উন্মুক্ত চাদের সঙ্গে ১৫ রানের জুটিতে প্রাথমিক ধাক্কা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন আফিফ হোসেন। আফিফ ২৫ রান করে আমিরের শিকারে পরিণত হলে শেষ হয়ে যায় চট্টগ্রামের শেষ আশাটুকুও। সিলেট বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে শেষ পর্যন্ত তিন অংক থেকে ১১ রান দূরে থামে শুভাগতর দল। সিলেটের ৪ পেসারের বাকি ১৫ ওভারে দিলেন মাত্র ৫৮ রান, তাদের ইনিংসে ডট দিয়েছে ৬৪টি! রাজার ১৪ রানে ৪ উইকেটের পাশাপাশি, আমির ২ উইকেট নেন মাত্র ৭ রানে। বিপিএলে ৪ ওভার বোলিং করে এটিই আমিরের সবচেয়ে মিতব্যয়ী বোলিং-ফিগার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ