Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হঠাৎ করোনা বেড়ে যাওয়ায় চীনে ওষুধের তীব্র ঘাটতি দেখা দিয়েছে

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৫ জানুয়ারি, ২০২৩, ১০:৫৩ এএম
চীনে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সূচক বৃদ্ধির মধ্যেই ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে কঠোর ‘শূন্য কোভিড নীতি’ শিথিল করার ঘোষণা দিয়েছে শি জিনপিং নেতৃত্বাধীন কমিউনিস্ট সরকার। আর এই শিথিলতা ঘোষণার পর থেকেই দেশটিতে বেড়েছে ওষুধের চাহিদা। এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করা ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। 
চীনা কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি করোনার কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল করে। এই পদক্ষেপের পর দেশটিতে বিভিন্ন পণ্যসামগ্রীর মজুত নিয়ে গুরুতর সংকট দেখা দেয়। সংকটের খবরে চীনের লোকজন করোনা পরীক্ষার কিট, ওষুধ, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্য কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়েন। এসব পণ্য কিনতে তারা অনলাইন-অফলাইনে ছোটাছুটি শুরু করছেন।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনে ওষুধের তীব্র ঘাটতির কারণে অনেক লোক মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ খাওয়া শুরু করেছে।
ডিসেম্বরে সিএনএনের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনের ফার্মেসিগুলোতে টাইলিনল ও অ্যাডভিলের স্থানীয় সংস্করণ পাওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। যা সারা দেশে মানুষের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। আতঙ্কের কেনাকাটার পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য আঞ্চলিক সরকারগুলো বিক্রি সীমিত করতে এবং জ্বরের বহুল প্রচলিত ওষুধের সরবরাহ বাড়ানোর ব্যবস্থা নিয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এমনকি চীন প্রয়োজনীয় ওষুধের উৎপাদনে ব্যবহৃত বিভিন্ন কাঁচামালের রপ্তানিতে লাগাম টেনেছে। যার ফলে তাইওয়ান, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান এবং সিঙ্গাপুরের মতো দেশে এই ওষুধের ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
এদিকে, ৮ জানুয়ারি থেকে মহামারি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা শিথিল করার বিষয়ে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির ঘোষণা দেশজুড়ে আশঙ্কা তৈরি করেছে যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ভবিষ্যতে আরও বাড়তে পারে। 
সিনহুয়া জানিয়েছে, চীনের ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলো কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণের জন্য শুধুমাত্র মূল ওষুধের সরবরাহ নিশ্চিত করতে পূর্ণ সক্ষমতায় কাজ করছে। চীনের গানসু প্রদেশের ল্যানঝো ফোসি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি ঠান্ডা ও শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের ওষুধ তৈরির জন্য কাজ করছে।
চীনের শানডং প্রদেশের শানডং সিনহুয়া ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি লিমিটেড জ্বর কমানো এবং ব্যথা উপশমকারী ওষুধ উৎপাদনে বিশেষায়িত এবং চাহিদা মেটাতে এটি আইবুপ্রোফেনের উৎপাদন ২৪ ঘণ্টা বাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে সিনহুয়া।
সিনহুয়ার প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, শানডং সিনহুয়া ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি লিমিটেড জানিয়েছে, যে তারা এখন প্রতি মিনিটে ১০ হাজার আইবুপ্রোফেন ট্যাবলেট উৎপাদন করছে। সেই সঙ্গে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ এবং পরিমিত ওষুধ পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্যও প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। 
সিএনএন জানায়, চীনের ঝুহাই শহরের ৫০০টিরও বেশি ওষুধের দোকান আইবুপ্রোফেনসহ জ্বর কমানোর ওষুধ ‘নিরবচ্ছিন্নভাবে সরবরাহ’ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। গত ২০ ডিসেম্বর মিউনিসিপাল গভর্মেন্ট এক বিবৃতিতে এ কথা বলেছে। যাইহোক, মানুষ কী কিনতে পারে তার ওপর কঠোর সীমাবদ্ধতা রয়েছে সেখানে। মানুষ একটি নির্দিষ্ট জ্বরের ওষুধের একটি মাত্র ফর্ম কিনতে পারে। 
সিএনএনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওষুধ বিক্রি সর্বোচ্চ ছয়টি ট্যাবলেট বা ১০০ মিলিলিটার (৩ আউন্স) তরল প্রতি গ্রাহকের জন্য সীমাবদ্ধ করা হয়েছে। নানজিং, হেইলংজিয়াং থেকে হাইনান পর্যন্ত সব জায়গায় পরিস্থিতি একই। সূত্র : এএনআই।


 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ