Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

হিজরতের উদ্দেশ্য ঘরছাড়া ৯ তরুণ-তরুণীকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর র‌্যাবের

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশের সময় : ২ জানুয়ারি, ২০২৩, ৩:৩৩ পিএম | আপডেট : ৩:৩৩ পিএম, ২ জানুয়ারি, ২০২৩

ধর্মের ভুল ব্যাখ্যায় উদ্বুদ্ধ হয়ে কথিত হিজরতের জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ৯ তরুণ- তরুণী একযোগে ঘর ছেড়েছিল। তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের মুসলিম নারী ও শিশুদের নির্যাতনের ভিডিও ও ছবি দেখে তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়। এরপর নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে ফিরে আসতে চায় পরিবারের কাছে। এরপর তাদের হেফাজতে নিয়ে ডি-রেডিক্যালাইজেশন এর মাধ্যমে তাদের পরিবারের কাছে হিজরতের নামে ঘর ছাড়া ৯ তরুণ- তরুণীকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)।

সোমবার দুপুরে রাজধানীর কুর্মিটোলায় র‌্যাব সদরদপ্তরে কথিত হিজরতের নামে ঘরছাড়া ৯ তরুণ-তরুণীকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাহিনীর অতিরিক্ত মহাপরিচালক (এডিজি-অপরারেশনস) কামরুল হাসান এসব তথ্য জানান।

র‍্যাব জানায়, গত ২২ ডিসেম্বর ৯ তরুণ-তরুণী কথিত হিজরতের নামে ঘর ছেড়েছিল। তাদের অনেকের পরিবার থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন। অনেকে র‌্যাবের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। বিভিন্ন তথ্যের মাধ্যমে আমরা চট্টগ্রাম থেকে নয়জনকে আমাদের হেফাজতে নিই। তাদের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। তাদের আমরা কাউন্সিলিং করেছি। পরে সবাই ভুল বুঝতে পেরে পরিবারের কাছে ফিরে যেতে ইচ্ছা পোষণ করেছে।

র‍্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক বলেন, আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছিলেন, নিশ্চয় দ্বীন সহজ। দ্বীন নিয়ে যে বাড়াবাড়ি করে সে কখনো জয়ী হতে পারে না। কাজেই তোমরা মধ্যপন্থা অবলম্বন করো, মধ্যপন্থার নিকটে থাকো। কিন্তু সারাবিশ্বে অনেকেই ধর্মের অপব্যাখায় উদ্বুদ্ধ হয়ে মধ্যপন্থা থেকে সরে এসে উগ্রবাদী চিন্তা-চেতনায় উদ্বুদ্ধ হচ্ছে। তারা অরাজকতা, বিশৃঙ্খলার মতো কাজ করছে।

আমরা এ ধরনের অরাজকতা এড়ানোর জন্য কাজ করছি। র‌্যাব বিভিন্ন জঙ্গিগোষ্ঠী, তাদের নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন পর্যায়ের সদস্যদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসছে।

কামরুল হাসান বলেন, ২০১৬ সালে হলি আর্টিসান হামলার পর আমরা জঙ্গিদের আইনের আওতায় আনতে পেরেছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতার কারণে জঙ্গিবাদ স্থবির হয়ে যায়। অভিযানের পাশাপাশি যারা বিভিন্নভাবে বিভ্রান্ত হয়ে প্রাথমিক পর্যায়ে থাকে তাদের ডি-রেডিক্যালাইজেশনের মাধ্যমে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করি। যেন তারা স্বাভাবিক জীবনে ফেরত আসতে পারে।

র‍্যাবের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, এই ধারাকে বেগবান করতে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী র‌্যাব ডি-রেডিক্যালাইজেশন শুরু করে। আমরা এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে ২০ জনকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছি। তাদের সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ রাখি, যেন তারা কোনোভাবে পূর্বের যে ভ্রান্ত ধারণা ছিল, সেটিকে পুনরুজ্জীবিত করতে না পারে।

অভিযান আমাদের সামগ্রিক কার্যক্রমের একটি ক্ষুদ্র অংশ উল্লেখ করে র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক বলেন, যাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিচ্ছি তাদের উদ্দেশে বলবো- ব্যক্তিগতভাবে আমরা একজন ব্যক্তি হতে পারি, কিন্তু পরিবারের কাছে আমরা কিন্তু গোটা পৃথিবী। পিতার কাছে একজন সন্তান, স্বামীর কাছে স্ত্রী বা স্ত্রীর কাছে স্বামী অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এ বিষয়গুলো মাথায় রেখে আমরা যদি পরিবারের কাছে থাকতাম তাহলে কখনো ভুল ধারণা থেকে বিপদগামী হতাম না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ