Inqilab Logo

সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অনলাইনে ভিডিও কনটেন্ট দেখে আল-কায়দার মতাদর্শে উদ্বুদ্ধ তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশের সময় : ২ জানুয়ারি, ২০২৩, ১:৪০ পিএম

অনলাইনে বিভিন্ন ভিডিও কনটেন্ট দেখে আল-কায়দার মতাদর্শে উদ্বুদ্ধ হয় কিছু বাংলাদেশী হিজরতকারী। এই সদস্যরা বাংলাদেশে সশস্ত্র জিহাদ করার পরিকল্পনা নিয়ে সংঘটিত হচ্ছিল। আল কায়েদা মতাদর্শে অনুপ্রাণিত হিজরতকারী ৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেররিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম বিভাগ।


রোববার রাজধানীর সায়েদাবাদ বাস টার্মিন্যাল, চট্টগ্রাম ও টেকনাফ থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তাররা হলো- সৌদি প্রবাসী দল নেতা আব্দুর রব, সাকিব, শামীম হোসেন, নাদিম শেখ, আবছার ও সাইদ উদ্দিন।

 

সোমবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (সিটিটিসি) মো. আসাদুজ্জামান।

 

সংবাদ সম্মেলন সিটিটিসি জানায়, গ্রেপ্তার আব্দুর রব সমন্বয়ক হিসেবে সবাইকে অনলাইনে একত্রিত করে শরিয়াহ ভিত্তিক রাষ্ট্র গঠন ও জিহাদ প্রভৃতি বিষয় নিয়ে আলোচনা করতো। পরবর্তীসময়ে অনলাইনে বিদেশে অবস্থানরত এক বাংলাদেশি সহযোগীর সঙ্গে তাদের পরিচয় হয় এবং অডিও-ভিডিও কলের মাধ্যমে তারা ভার্চুয়ালি যোগাযোগ স্থাপন করে। বিদেশে অবস্থানরত ওই ব্যক্তি সবাইকে হিজরত করে জিহাদের জন্য উদ্বুদ্ধ করে।

 

অতিরিক্ত কমিশনার আসাদুজ্জামান বলেন, লিবিয়ায় অবস্থানরত আরও একজন বাংলাদেশি এবং টেকনাফের স্থানীয় একজনের সঙ্গে সবার পরিচয় করিয়ে দেয়। সম্মিলিত আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয় আব্দুর রব, শামীম, সাকিব, নাদিম, সাইদসহ অন্য যারা হিজরতে রাজি তারা প্রথমে টেকনাফ গিয়ে তাদের স্থানীয় সহযোগীদের মাধ্যমে ট্রেনিং নেবে। পরে তারা বাংলাদেশে ইসলামী শাসন কায়েমের জন্য জিহাদ করবে।

 

সিটিটিসি প্রধান বলেন, গত বছর নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে সবাইকে নিজ নিজ ব্যবস্থাপনায় টেকনাফে যাওয়ার পরামর্শ দেন। সে অনুসারে গত ১৬ নভেম্বর সাকিব ও নাদিম টেকনাফ যায় এবং স্থানীয় সহযোগী ও গ্রেপ্তার আবছার তাদের টেকনাফে ভাড়া বাসায় থাকার ব্যবস্থা করে দেন।


তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তার আব্দুর রব ছুটি না পাওয়ায় যথাসময়ে দেশে আসতে ব্যর্থ হলে তারা টেকনাফের বাসায় অবস্থান করে তার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। গত ২২ নভেম্বর আব্দুর রব দেশে এলে তার সহযোগী শামীম শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে রিসিভ করে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী তাদের অন্য সহযোগীর ভাড়া বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে অবস্থানকালে তাদের মধ্যে বিভিন্ন শলাপরামর্শ হয়। দুদিন পর তারা দুজন সাকিবদের সঙ্গে মিলিত হয়ে তাদের অন্যান্য সহযোগীদের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে।

 

গ্রেপ্তারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের এই কর্মকর্তা জানায়, গ্রেপ্তাররা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও অনলাইনভিত্তিক অ্যাপসে যোগাযোগ স্থাপনের মাধ্যমে দল গঠন করে। পরে স্থানীয় সহযোগীদের নিয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশে জঙ্গিবাদের জন্য টেকনাফে হিজরত করে অবস্থান করছিল।

 

তারা সংঘটিত হচ্ছিল, সশস্ত্র জিহাদের প্রস্তুতি নিচ্ছিল এটা কি কোনো সাংগঠনিক ব্যক্তি ছাড়া সম্ভব সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সিটিটিসি প্রধান বলেন, এখনো তারা সাংগঠনিক কাঠামো দাঁড় করাতে পারেনি। এটা ছিল তাদের প্রথম প্রচেষ্টা। তারা নিজেদের মধ্যে সশস্ত্র জিহাদের আলোচনা করে, এভাবে হিজরত করছিল। এদের প্রথমই তেমন সদস্য সংখ্যা থাকে না, এরা আস্তে আস্তে সদস্য সংখ্যা বাড়ায়। তারা টেকনাফের পাহাড়ি এলাকায় অবস্থান নেয়ার পরিকল্পনা করে।


আল-কায়েদার সঙ্গে গ্রেপ্তার জঙ্গিদের কোনো যোগাযোগ আছে কি না, জানতে চাইলে সিটিটিসি প্রধান বলেন, আল-কায়েদার সঙ্গে তাদের কোনো যোগাযোগ নেই। গ্রেপ্তার জঙ্গিরা আল-কায়দার মতাদর্শ অনুসরণ করে। অনলাইনে বিভিন্ন ভিডিও কনটেন্ট দেখে তারা মতাদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি।


সিটিটিসি জানায়, জঙ্গিবাদ সংশ্লিষ্টতায় গ্রেপ্তার আব্দুর রব একজন কোরআনে হাফেজ এবং কওমি মাদরাসায় পড়াশোনা করেন। ২০১৯ সালে জুনে সৌদি-আরব যান। সেখানে একটি মসজিদের ইমামতির পাশাপাশি হেফজ শিক্ষা দিতেন। সৌদিতে অবস্থানকালে তিনি অনলাইনে বিভিন্ন জিহাদি পোস্ট ও ভিডিও দেখে জিহাদের জন্য অনুপ্রাণিত হন। অনলাইনে রোহিঙ্গা নির্যাতনের একটি ভিডিও কমেন্টের সূত্র ধরে সাঈদের সঙ্গে তার পরিচয়। একইভাবে শামীম, সাকিব, নাদিমসহ ও আরও কয়েকজনের সঙ্গে পরিচয় হয়।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ