চীনের পশ্চিমাঞ্চলীয় শিনজিয়াং অঞ্চলে পাঁচ বছরের সাজা ভোগকালীন লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে কারাগার বা বন্দিশালাতেই মারা গেছেন মুসলিম উইঘুর সম্প্রদায়ের এক ইমাম। গত ফেব্রুয়ারিতে তিনি মারা যান। ওই ব্যক্তি যে এলাকায় থাকতেন সেখানকার এক পুলিশ কর্মকর্তার বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে রেডিও ফ্রি এশিয়া (আরএফএ)।
মারা যাওয়া ওমর হুসেইন নামে ৫৫ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি জিনজিয়াংয়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর কোরলার কারায়ুলঘুন মসজিদের প্রাক্তন হাতিপ বা ইমাম ছিলেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৫ সালে মক্কায় যাওয়ার কারণে ইসলাম ধর্ম প্রচারক এবং প্রখ্যাত উইঘুর ব্যক্তিদের ওপর চীনের সাঁড়াশি অভিযানের মধ্যে ২০১৭ সালে হুসেইন গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তার অন্য তিন ভাইকেও গ্রেপ্তার করা হয় ২০১৭ সালে। তার মধ্যে একজনকে ধর্মী কর্মকাণ্ড যুক্ত থাকার অভিযোগে ১২ বছরের সাজা দেওয়া হয়েছিল এবং পরবর্তীতে তিনি কারাগারেই মারা যান।
ক্যাম্পে বন্দি করার আগে হুসেইন বেশ সুস্থ-সবল ছিলেন। শিনজিয়াংয়ের শতশত ‘পুনঃশিক্ষা ক্যাম্পে’ তার মতো আরও আনুমানিক ১৮ লাখ উইঘুরকে বন্দি রাখা হয়েছিল।
মাহমুত ময়দুন নামে এক ব্যক্তি যিনি নিজেও ক্যাম্পে আটক ছিলেন এবং পরে সেখান থেকে পালিয়ে আত্মগোপনে ছিলেন। আরএফএ-কে তিনি বলেন, ক্যাম্পের অবস্থা খারাপ হয়েছে। কারণ গত দুই বছরে ইমামসহ আরও অসংখ্য মানুষকে সেখানে বন্দি করা হয়েছে।
কোরলার এক বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করে আরএফএকে বলেন, নিম্নমানের খাবার, অতিরিক্ত শ্রম, দীর্ঘ রাজনৈতিক পাঠ এবং অবিরাম জিজ্ঞাসাবাদের কারণে কারা বন্দিদের স্বাস্থ্য নষ্ট হয়ে গেছে।
২০২১ ও ২০২২ সালে মারা যাওয়া বন্দিদের তালিকা পেতে কোরলার কারায়ুলঘুন থানায় যোগাযোগ করার কথা জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি। কিন্তু রাজনৈতিক কমিশনার তা দিতে অস্বীকার করেছেন বলে জানানো হয়েছে এর প্রতিবেদনে।
হুসেইন সম্পর্কে জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তা আরএফএকে বলেন, “সেই ইমাম যে জেলায় থাকতেন সেই থানার পুলিশ তার তথ্য দিতে পারে। আমি আপনাকে ওই তথ্য দিতে পারি না। সেরকম কিছু নেই।”
জেলা পুলিশের এক সদস্য পরে নিশ্চিত করেন, হুসেইন জেলা কারাগারে সাজা ভোগ করছিলেন এবং ২ ফেব্রুয়ারি তিনি মারা গেছেন।