বেইজিং এবং অন্যান্য স্থানে গুরুতর অসুস্থ কোভিড রোগীর সংখ্যা হু হু করে বাড়তে থাকায় চীনের চিকিৎসা ব্যবস্থার ওপর ব্যাপক চাপ তৈরি হয়েছে। এই অবস্থা সামাল দিতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে দেশটির স্বাস্থ্য ব্যবস্থা।
এনএইচকে ওয়ার্ল্ড এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গত ৭ ডিসেম্বর দেশটির সরকার মহামারি সংক্রান্ত কঠোর বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার পর চীনের বিভিন্ন অঞ্চলে দ্রুত গতিতে
করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। যদিও চীন সরকার
করোনায় সংক্রান্ত মৃত্যুর তথ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে ক্রমাগত লুকোছাপা করছে। এমনকি দেশটির হাসপাতালগুলো
করোনা রোগীতে উপচে পড়া স্বত্ত্বেও মৃত্যুর ব্যাপারে সঠিক তথ্য দিচ্ছে না দেশটি।
শুধু তাই নয় মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা গোপন করতে সরকার গত ২০ ডিসেম্বর থেকে কেবল নিউমোনিয়া এবং শ্বাসকষ্টে মৃত ব্যক্তিদের
করোনার মৃত্যু হিসেবে গণনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যদিও নিউমোনিয়া এবং শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার রোগীর সংখ্যাও চীনের অভ্যন্তরীণ প্রদেশগুলো ব্যাপক হারে বাড়ছে।
এদিকে
করোনার নতুন এই প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় চীনের চিকিৎসা ব্যবস্থা এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা তেমন কোনো সরঞ্জাম পাচ্ছেন না। যেমন আনহুই প্রদেশের একটি হাসপাতালের জরুরি সেবা বিভাগের সব চিকিৎসা কর্মী
করোনায় আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন। কিন্তু ব্যাকআপ না থাকায় জ্বরের ওষুধ সেবন করে বাধ্য হয়ে কাজ করে যাচ্ছেন।
এনএইচকের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, হাসপাতালটির ওই বিভাগ দৈনিক এক হাজার মানুষের
করোনা পরীক্ষা করছে। নানান স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকা বয়স্ক ব্যক্তিদের এই ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।
অন্যদিকে সামনে চীনা নতুন বছর লুনার নিউ ইয়ার আসছে। তাই ধারণা করা হচ্ছে, সামনে
করোনা সংক্রমণের আরও নতুন পর্যায়ের সাক্ষী হতে পারে দেশটি। আবার উচ্চহারে টিকা দেওয়ার পরও ওমিক্রম ধরনের বিরুদ্ধে সিনোফার্মা এবং করোনোভ্যাক টিকা তেমন কার্যকর না হওয়ায় দেশের ৮০ শতাংশ মানুষ
করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিতে রয়েছে।
সরকার এখন পর্যন্ত হাসপাতালগুলোকে তেমন কোনো সহায়তা দেয়নি বা কোনো পদক্ষেপও নেয়নি। এ ছাড়া সংক্রমণ রোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা বা চলাচলের উপর কোনো বিধিনিষেধও দেয়নি। বরং এই অবস্থায় চীনা কমিউনিস্ট পার্টি স্বাস্থ্যকর্মীদের সবচেয়ে বেশি বিপর্যস্ত বেইজিংয়ের হাসপাতালগুলোতে সহায়তা দিতে সেখানে পাঠিয়েছে। এসব নিয়ে চীনের বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমগুলোতেও সরকারে কঠোর সমালোচনা করা হচ্ছে। তবে দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং
করোনা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য দেশের জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন।
বর্তমানে দেশটির বেইজিংয়ের চ্যাওয়াং, শিজিয়াজহুয়াং, গুয়ানংঝু, চংকিং, সাংহাই এবং তিয়াংজিনে
করোনা পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়াবহ।