Inqilab Logo

রোববার, ১২ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

শি জিনপিংয়ের অধীনে ২০২২ চীনের সবথেকে কঠিন বছর

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৯ ডিসেম্বর, ২০২২, ১০:১৮ পিএম
চীন তার সবথেকে অবসন্ন তৃতীয় শীতকালীন মহামারীতে যখন প্রবেশ করেছে, সে সময়েই কোভিড সংক্রমণের কঠোর শূন্য কোভিড নীতি শেষ হয়েছে। কিন্তু কঠোর এই নীতি থেকে সরে আসার ফলে আগামী বছরও দেশটি ভুগতে পারে।
 
সিএনএন জানিয়েছে, ২০২২ সাল চীন ও এর প্রেসিডেন্টের জন্য বিজয়ী বছর। কারণ প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং তার ক্ষমতার দ্বিতীয় দশক শুরু করেছেন এবং চীনের শৌর্যবীর্য ফেরানোর অঙ্গীকার করেছেন।
 
প্রতিবেদনে বলা হয়, মূলত প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের শূন্য কোভিড নীতির ফলে চীন সবথেকে কঠিন সময় পার করছে। মাসের পর মাস অতি উৎসাহীভাবে এই নীতি বাস্তবায়নে অর্থনীতি ‘ভেঙে পড়েছে’ এবং নজিরবিহীন জনঅসন্তোষ তৈরি করেছে। কিন্তু হঠাৎ করে এই নীতি পুরোপুরি উঠিয়ে নেওয়ার ফলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে। ভয়াবহ কোভিড সংক্রমণ মোকাবেলা করতে হতে পারে।
 
বছরের শুরুতেই সরকারের শীতকালীন অলিম্পিকে দেখানো কোভিড নিয়ন্ত্রণ পদক্ষেপের সাফল্য মূলত সেসময়ের বিশৃঙ্খলা আর নৈরাজ্যে পরিস্থিতির সম্পূর্ণ বিপরীত ছিলো। আর সারাদেশে এখন ব্যাপক কোভিড সংক্রমণ ও মৃত্যুর পরিস্থিতিতে অনেকে প্রশ্ন তুলছেন- শূন্য কোভিড নীতির অধীনে দীর্ঘ সময় পার করে এবং সবকিছু খুলতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে সরকার কেন শেষ পর্যন্ত কোনো ধরনের প্রস্তুতি ছাড়াই হাল ছেড়ে দিলো।
কঠোর শূন্য কোভিড নীতির পরও দ্রুত সংক্রমণ ছড়ানো ওমিক্রন ভেরিয়েন্টের সংক্রমণ হয়েছে। মার্চের মাঝামাঝি নাগাদ চীন মহামারীর সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির সঙ্গে লড়াই করছিলো। উত্তরে জিলিন প্রদেশ থেকে দক্ষিণে গুয়াংডং পর্যন্ত প্রতিদিন হাজার হাজার নতুন সংক্রমণের খবর এসেছিলো।
চীনের আর্থিক কেন্দ্র সাংহাই খুব দ্রুতই সংক্রমণের কেন্দ্রস্থল হয়ে ওঠে। স্থানীয় কর্মকর্তারা প্রথমে শহরব্যাপী লকডাউনের প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করেন। কিন্তু শহরটিতে দৈনিক সাড়ে ৩ হাজার সংক্রমণ ছড়ালে লকডাউন আরোপ করা হয়েছিলো।
টানা দুই মাসের লকডাউন শূন্য-কোভিডের অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রভাবের একটি উজ্জ্বল প্রতীক হয়ে ওঠে। দেশের সবচেয়ে ধনী এবং সবচেয়ে জমকালো শহরের বাসিন্দারা ব্যাপক খাদ্য ঘাটতি ও জরুরি চিকিৎসার অভাবে পড়েন।
লকডাউন অর্থনীতিতে ধ্বংসযজ্ঞ ডেকে আনে। চীনের জিডিপি জুন পর্যন্ত তিন মাসে ২ দশমিক ৬ শতাংশ কমে যায়। যুব বেকারত্বের হার বেড়ে যায় রেকর্ড ২০ শতাংশের কাছাকাছি। কিন্তু ব্যয়সাধ্য লকডাউন চীনকে তার জিরো-টলারেন্স নীতিকে সরে যেতে প্রভাবিত করেনি। বরং কর্মকর্তারা একে কোভিডের বিরুদ্ধে যুদ্ধে বিজয় বলে প্রশংসা করেন।
 
সিডনি মর্নিং হেরাল্ড এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিলো, চীনের জিডিপি ২০২২ সালে সাড়ে ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে অনুমান করা হচ্ছিলো, যা ৩০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম। এ বছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধির প্রত্যাশা ছিল ৮ দশমিক ১ শতাংশ। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল ২০২২ সালে চীনের অর্থনৈতিক ব্যবস্থার ৩ দশমিক ২ শতাংশ উন্নয়নের পূর্বাভাস দিয়েছে।
আর সেন্টার ফর ইকোনোমিক অ্যান্ড বিজনেস রিসার্চও (সিইবিআর) বলছে, চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ২০২২ সালে ৩ দশমিক ২ শতাংশ বেড়েছে। কিন্তু এ বছর দেশটির প্রবৃদ্ধির যে অনুমান বা পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল এই অর্জন তার চেয়ে অনেক কম। এর পেছনে কারণ হলো করোনাভাইরাস মোকাবিলায় কঠোর শূন্য কোভিড নীতি ও লকডাউন


 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ