মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে ইসরাইলে আগামী ২ জানুয়ারি গঠিত হতে যাচ্ছে নতুন জোট সরকার। যা দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে উগ্রডানপন্থি সরকার হবে। এখন আশঙ্কা করা হচ্ছে, নেতানিয়াহুর উগ্রবাদী জোট মুসলিমদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় স্থাপনা আল-আকসা মসজিদের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিতে পারে। বর্তমানে আল-আকসার সব দায়িত্ব জর্ডানের রাজার হাতে। এমন আশঙ্কার মধ্যে জর্ডানের রাজা আব্দুল্লাহ ইসরাইলকে ‘সীমা লংঘন’ না করতে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি সরাসরি বলেছেন, যদি এ নিয়ে ইসরাইল কোনো যুদ্ধে জড়াতে চায় এর জন্যও জর্ডান প্রস্তুত আছে। যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে এসব হুঁশিয়ারি দেন রাজা আব্দুল্লাহ। তিনি বলেছেন, ‘ইসরাইলের দখলকৃত পূর্ব জেরুজালেমে মুসলিম এবং খ্রিষ্টানদের ধর্মীয় স্থাপনাগুলোর জিম্মাদারি পরিবর্তন করার আশঙ্কা রয়েছে। কিন্তু আমাদের একটি সীমা আছে।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘যদি তারা আমাদের সঙ্গে যুদ্ধে জড়াতে চায়্, আমরা প্রস্তুত আছি। আমি বলব অর্ধেক পূর্ণ একটি গ্লাসের দিকে তাকান, কিন্তু আমাদের একটি নির্দিষ্ট সীমা আছে। কেউ এ সীমা অতিক্রম করার চেষ্টা করলে আমরা জবাব দেব।’ নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে গঠিত সরকারে এমন কিছু ব্যক্তি আছেন যারা চরম উগ্রপন্থী। আর এ বিষয়টি ইসরাইল-ফিলিস্তিনের মধ্যে নতুন সংঘাতের আশঙ্কা তৈরি করেছে। এছাড়া ইসরাইল-আরব বিশ্বের ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নিয়েও আশঙ্কা চলছে। গত কয়েক বছরের তুলনায় ২০২২ সালটি ফিলিস্তিনিদের জন্য ছিল রক্তক্ষয়ী একটি বছর। প্রায় প্রতিদিনই ফিলিস্তিনিদের গুলি করে হত্যা করেছে ইসরাইলি সেনারা। জর্ডানের রাজা আব্দুল্লাহ বলেছেন, যদি এমনটি চলতে থাকে তাহলে নতুন করে বিদ্রোহে জড়িয়ে পড়তে পারেন ফিলিস্তিনিরা। এদিকে ১৯৬৭ সালে আরব-ইসরাইল যুদ্ধের পর পূর্ব জেরুজালেম দখল করে ইসরাইল। ১৯২৩ সাল থেকে জেরুজালেমে অবস্থিত আল-আকসা মসজিদসহ অন্যান্য ধর্মীয় স্থাপনাগুলোর জিম্মাদারি রয়েছে জর্ডানের হাতে। কিন্তু যুদ্ধের পর সেটির নিয়ন্ত্রণ তাদের হাত থেকে চলে গিয়েছিল। এরপর ১৯৯৪ সালে একটি শান্তি চুক্তির মাধ্যমে জর্ডানের কাছে আবারও এর নিয়ন্ত্রণ বুঝিয়ে দেয় ইসরাইল। অপর এক খবরে বলা হয়, ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপনকে অগ্রাধিকারের তালিকার শীর্ষে রেখেছে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর কট্টরপন্থি নতুন ইসরাইলি সরকার। আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ নেওয়ার একদিন আগে তারা এই তথ্য জানিয়েছে। বুধবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নেতানিয়াহুর লিকুদ পার্টি বুধবার নতুন সরকারের নীতি নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে। যেখানে প্রথমেই গ্যালিলি, নেগেভ, গোলান হাইটস এবং জুডিয়া ও সামারিয়াসহ ‘ইসরাইলের ভূখণ্ডে সকল অংশে বসতি সম্প্রসারণ আরও এগিয়ে নেওয়া ও বিকাশের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। মূলত গ্যালিলি, নেগেভ, গোলান হাইটস এবং জুডিয়া ও সামারিয়া অধিকৃত ফিলিস্তিনি পশ্চিম তীরের এলাকা এবং বাইবেলের নামানুসারে ইসরাইল এসব ফিলিস্তিনি অঞ্চলকে এই নামেই ডেকে থাকে। আল জাজিরা বলছে, এই ধরনের প্রতিশ্রুতি নতুন সরকারকে ইসরাইলের ঘনিষ্ঠ মিত্রদের সঙ্গে দেশটিকে সংঘর্ষের পথে ফেলতে পারে। কারণ যুক্তরাষ্ট্রসহ ইসরাইলের অনেক ঘনিষ্ঠ মিত্রই অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলে বসতি নির্মাণের বিরোধিতা করে থাকে। ইসরাইল ১৯৬৭ সালে গাজা উপত্যকা এবং পূর্ব জেরুজালেমসহ পশ্চিম তীর দখল করে নেয়। যদিও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ পশ্চিম তীরকে তাদের ভবিষ্যৎ স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে চায়। যাইহোক, আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে অবৈধ হলেও অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরাইল কয়েক ডজন ইহুদি বসতি নির্মাণ করেছে এবং সেগুলো এখন প্রায় ৫ লাখ ইসরাইলির আবাসস্থল। অবশ্য আনুমানিক ২৫ লাখ ফিলিস্তিনি অধিকৃত পশ্চিম তীরে বাস করে এবং ইসরাইলি সামরিক বাহিনী তাদের চলাচল ও গতিবিধি কঠোরভাবে সীমিত করে রেখেছে। নেতানিয়াহুর নতুন সরকার ইসরাইলের ইতিহাসে সবচেয়ে ধর্মীয় এবং কট্টরপন্থি অতি-অর্থোডক্স দল, অতি-ডান-আল্ট্রান্যাশনালিস্ট ধর্মীয় উপদল এবং তার লিকুদ পার্টি নিয়ে গঠিত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার এই সরকারের শপথ নেওয়ার কথা রয়েছে। এর আগে ইসরাইলে গত ১ নভেম্বরের নির্বাচনে জয় পান দেশটির সাবেক কট্টরপন্থি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। এবার ক্ষমতায় যেতে তিনি চরম কট্টরপন্থি এবং অবৈধ বসতি স্থাপনের পক্ষে থাকা দলের সঙ্গে জোট বেঁধেছেন। নেতানিয়াহুর জোটে থাকা উগ্রপন্থি এসব দলগুলোর মধ্যে রিলিজিয়াস জায়োনিজম নামে একটি দলও রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ফিলিস্তিনিরা আগেই আশঙ্কা করেছিলেন, নেতানিয়াহুর অধীনে ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীর এবং পূর্ব জেরুজালেমে সম্ভবত আরও অবৈধ ইসরাইলি বসতি গড়ে উঠবে। বুধবারের ঘোষণায় ফিলিস্তিনিদের সেই আশঙ্কায় সত্যি হলো। এর আগে ২০২১ সাল পর্যন্ত নেতানিয়াহু একটানা ১২ বছর ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন এবং ওই সময়কালে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরাইলি অবৈধ বসতির রেকর্ড সম্প্রসারণ হয়েছিল। ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে এই ধরনের ইসরাইলি অবৈধ বসতি আন্তর্জাতিক আইনে বেআইনি বলে বিবেচিত হয় এবং সংকট সমাধানে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের অংশ হিসাবে ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠার প্রতিবন্ধক হিসাবে মনে করা হয়। এছাড়া নেতনিয়াহুর জোটে থাকা রিলিজিয়াস জায়োনিজম নামক ওই উগ্রবাদী দলটি ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে অবৈধ বসতি সম্প্রসারণকে সমর্থন করে এবং ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করে থাকে। এদিকে বাইডেন প্রশাসন বলেছে, তারা অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে বসতি সম্প্রসারণের তীব্র বিরোধিতা করে এবং অতীতে এর জন্য ইসরাইলি সরকারকে তিরস্কার করেছে। সিএনএন, রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।