মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
গত ২৪ ফেব্রæয়ারি থেকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলছে। যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের অবারিত সমর্থন ছাড়া ইউক্রেনের টিকে থাকার প্রচেষ্টা অকল্পনীয়। শুধুমাত্র গত সপ্তাহেই, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেনের জন্য আরো ৪ হাজার ৫শ’ কোটি মার্কিন ডলার সমর্থনের প্রতিশ্রæতি দিয়েছেন, যা নিয়ে কংগ্রেস এখন আলোচনায় বসবে। প্রস্তাবটি পাস হলে এটি হবে ইউক্রেনের জন্য চতুর্থ মার্কিন সহায়তা কার্যক্রম এবং এর ফলে ফেব্রæয়ারি থেকে ইউক্রেনের জন্য এ পর্যন্ত বরাদ্দ মোট অর্থের পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ১০ হাজার কোটি ডলারে। ইউক্রেনকে এই বিপুল আর্থিক সাহায্য সরবরাহের কারণে অনেকেই দাবি করছে যে, ইউক্রেন যুদ্ধটি যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়ার মধ্যকার একটি ছায়াযুদ্ধে পরিণত হয়েছে।
সম্প্রতি ব্রিটিশ সংবাদপত্র দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট তার মার্কিন সংবাদদাতার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যার শিরোনাম ছিল ‘ইউক্রেনে যা ঘটছে, সেটিকে মার্কিন ছায়াযুদ্ধ ছাড়া অন্য কিছু বলে ভান করা বন্ধ করার সময় এসেছে।’
জার্মান গবেষণা প্রতিষ্ঠান কিইল ইনস্টিটিউট ফর দ্য ওয়ার্ল্ড ইকোনমি (আইএফডবøু) এর অর্থনীতিবিদ আন্দ্রে ফ্রাঙ্ক আল জাজিরাকে বলেছেন যে, ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তার সবচেয়ে বড় যোগানদাতা যুক্তরাষ্ট্র ২ হাজার ৪শ’ ৩৭ কোটি ডলার এবং দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থদানকারী যুক্তরাজ্য ৪শ’ ৪০ কোটি ডলার দেয়ার প্রতিশ্রæতি দিয়েছে। যুক্তরাজ্য ইউক্রেনের সবচেয়ে বড় অস্ত্র সরবরাহকারী। দেশটি ইউক্রেনকে অন্যান্য জিনিসের মধ্যে একাধিক এম২৭০ রকেট লঞ্চার, হাজার হাজার ট্যাঙ্ক ব্বিংসী অস্ত্র, শতাধিক স্বল্প-পাল্লার মিসাইল, সাঁজোয়া যান এবং কিছু বিমান বিধ্বংসী প্রযুক্তি সরবরাহ করেছে বা প্রতিশ্রæতি দিয়েছে।
এছাড়া, দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক ইউক্রেনকে আরও ১শ’ ২৫টি বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়ার প্রতিশ্রæতি দিয়েছেন। এদিকে, জার্মানি এখন পর্যন্ত ২শ’ ৪৯ কোটি ডলারের সাহায্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের পর তৃতীয় স্থানে রয়েছে। ইউক্রেনের ইউরোপীয় সমর্থনের সিংহভাগের জন্য লন্ডন এবং বার্লিন দায়ী। আইএফডবিøউর মতে, ইইউ সদস্য দেশগুলো সামরিক সহায়তার জন্য এ পর্যন্ত মোট ৯শ’ ১৮ কোটি ডলার প্রদান করেছে।
ফ্রাঙ্ক উল্লেখ করেছেন যে, ইউরোপীয়দের প্রতিশ্রæতি সামরিক সমর্থনের মধ্যেই সমাপ্ত নয়। যদি ইউরোপীয় ইউনিয়ন চালিত সামরিক প্রতিদান প্রকল্প ‘ইউরোপীয় শান্তি সুবিধা’ অন্তর্ভুক্ত করা হয়, তাহলে মোট ইইউ সামরিক সহায়তার পরিমাণ ৩শ’ ৩০ কোটি ডলার বেড়ে মোট ১২শ’ ৪৮ কোটি হবে। এর মধ্যে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত প্রতিশ্রæতিগুলিও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। জানুয়ারি থেকে ইউক্রেনকে আরো ১ হাজার ৯শ’ কোটি ডলার সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইউক্রেনকে সাহায্যের দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে।
আইএফডবিøউ বলেছে যে, সামরিক, আর্থিক ও মানবিক সহায়তার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ৫হাজার ১শ’ কোটি ডলারের তুলনায় ইউরোপ মোট ৫ হাজার ৫শ’ কোটি ডলার দিয়ে কিইভকে সহায়তা করবে।
তবে, ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ গোয়েন্দা তথ্য অনুসারে, রাশিয়া ২০২৩ সালে ইউক্রেনে যুদ্ধের জন্য ১৪ হাজার কোটি ডলারেরও বেশি ব্যয় করার প্রতিশ্রæতি দিয়েছে। রয়টার্সের সাম্প্রতিক তথ্য অনুসারে, ২০২৩ সালের জন্য রাশিয়ার মোট প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বাজেট ১৫ হাজার ৫শ’ কোটি ডলার রাখা হয়েছে। কিন্তু এ বিপুল পরিমাণ অর্থ এই যুদ্ধে কী পার্থক্য এনেছে এবং যুক্তরাষ্ট্রে রিপাবলিকান নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি পরিষদের অধীনে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তফ্রন্ট কতোটা অটল থাকতে পারে, সেটাই দেখার বিষয়। সূত্র : আল-জাজিরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।