করোনাভাইরাস চীনের উহানের ল্যাবে তৈরি হয়েছে-এটা নিয়ে বিতর্ক কম ছড়ায়নি। আবার অনেকে দাবি, এটি প্রাণীর মাধ্যমে ছড়িয়েছে।
করোনাভাইরাস মানবসৃষ্ট নাকি প্রাকৃতিক তা নিয়ে আলোচনা থেকেই গেছে। এবার মার্কিন একটি গোয়েন্দা প্রতিবেদন নতুন বোমা ফাটিয়েছে। প্রতিবেদনে অনুসারে, বিশ্বে কোভিড-১৯ মহামারি আঘাত করার অনেক আগেই চীন তার জৈবিক অস্ত্রের উচ্চাকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছিল!
দুই বছর তদন্তের পর গত ১৫ ডিসেম্বর হাউস ইন্টেলিজেন্স কমিটি প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে।
ইন্দো-প্যাসিফিক সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক কমিউনিকেশনের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০৫ সালে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর প্রকাশ্যে তাদের মূল্যায়ন তুলে ধরে বলেছিল যে চীন একটি আক্রমণাত্মক জৈবিক অস্ত্র কর্মসূচিও পরিচালনা করে। বিশেষভাবে দুটি চীনা প্রতিষ্ঠানকে সম্ভাব্য জড়িত হিসেবে চিহ্নিত করে; যার মধ্যে একটি হল ফিফথ ইনস্টিটিউট। ২০০৬ সালে জৈবিক ও বিষাক্ত অস্ত্র কনভেনশন মেনে চলার ঘোষণায় চীন স্বীকার করে যে ফিফথ ইনস্টিটিউট বিশেষভাবে সার্স করোনভাইরাস নিয়ে গবেষণা করে।
মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদনে ২০১৫ সালে এএমএমএস প্রকাশিত ‘দ্য আনন্যাচারাল অরিজিন অব সার্স অ্যান্ড নিউ স্পেসিস অব আর্টিফিসিয়াল হিউম্যানাইজড ভাইরাসেস অ্যাস জেনেটিক উইপনস’ বইটির কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।
বইটিতে বর্ণনা করা হয়েছে কীভাবে বিভিন্ন প্রাণী থেকে সার্স
করোনাভাইরাস অস্ত্র তৈরি করা যায়। ঐতিহ্যগত জৈব অস্ত্রের তুলনায় সেগুলোর ব্যবহারের সম্ভাব্য বিস্তৃত সুযোগ এবং এ ধরনের অতিপ্রাকৃত করোনভাইরাসগুলো প্রাকৃতিকভাবে না ঘটিয়ে কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয়েছিল তা বিশ্বাসযোগ্যভাবে অস্বীকার করতে সক্ষম হওয়ার বিভিন্ন সুবিধা তুলে ধরা হয়েছে বইটিতে।
করোনা মহামারির শুরুতে বার বার আলোচনায় আসে বায়োলজিক্যাল উইপনস অর্থাৎ জীবাণু অস্ত্রের বিষয়টি। জীবাণু অস্ত্র বানাতেই নাকি ভাইরাসটি তৈরি করেছিল চীন এমন কথাও ওঠে। এমন প্রশ্ন ওঠার নেপথ্যে রয়েছে ১৯৮১ সালে প্রকাশিত একটি রহস্য উপন্যাস। সেই উপন্যাসে ‘উহান-৪০০’ নামে একটি ভাইরাসের প্রসঙ্গ রয়েছে। ‘আইজ অব ডার্কনেস’ নামের ওই থ্রিলার উপন্যাসে লেখক ডিন কুনত্জ লিখেছেন, ‘বায়োলজিক্যাল উইপন প্রোগ্রামের’ আওতায় চীনের সামরিক গবেষণাগারে এ ভাইরাসটি তৈরি করা হয়।
গত সপ্তাহে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান টেড্রোস আধানম গ্যাব্রিয়েসুস চীনকে কোভিড-১৯ মহামারির উৎস আরও ভালোভাবে বোঝার জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার চাওয়া তথ্য সরবরাহের আহ্বান জানিয়েছেন।
ডব্লিউএইচও প্রধান সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে সেসময় বলেন, কোভিড-১৯ পরবর্তী অবস্থা সম্পর্কে আমাদের বোঝার ঘাটতি মানে আমরা বুঝতে পারছি না যে সংক্রমণের দীর্ঘমেয়াদী পরিণতি নিয়ে ভুগছেন এমন লোকেদের সঙ্গে কীভাবে সর্বোত্তম আচরণ করা যায়। কীভাবে এই মহামারি শুরু হয়েছিল তা আমাদের বোঝার ঘাটতি আমাদের ভবিষ্যতের মহামারি প্রতিরোধ নিয়েও ভাবাবে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চীনকে তথ্য সরবরাহের জন্য অবিরত আহ্বান জানাচ্ছি; যেগুলো আমরা চেয়েছি। যেমন আমি আগেও অনেকবার বলেছি, এই মহামারির উৎস সম্পর্কে সমস্ত অনুমান টেবিলেই রয়ে গেছে।’ সূত্র : এএনআই।