Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এক মাস পর আরো ১৭৪ রোহিঙ্গা ইন্দোনেশিয়ায়

ইনকিলাব ডেস্ক : | প্রকাশের সময় : ২৯ ডিসেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

প্রায় এক মাস সাগরে ভাসার পর রোহিঙ্গা শরণার্থীদের একটি নৌকা ইন্দোনেশিয়ার তীরে ভিড়েছে। নৌকাটিতে প্রায় ২০০ রোহিঙ্গা শরণার্থী ছিলেন। ইন্দোনেশিয়ার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, উপকূলে ভেড়ার পর তাঁদের জরুরি চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। সমুদ্রে ভাসমান অবস্থায় তাদেরকে উদ্ধার করে ইন্দোনেশিয়ার জেলেরা। নৌকায় এসময় ১৭৪ রোহিঙ্গা ছিল বলে জানা গেছে। যাত্রাপথে ২০ রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়েছে। তাদের মরদেহ সমুদ্রে ভাসিয়ে দেয়া হয়েছে। এ খবর দিয়েছে আরব নিউজ। খবরে জানানো হয়, উদ্ধার হওয়া নৌকায় মোট ৩৬ জন পুরুষ, ৩১ জন নারী এবং ১০৭ শিশু ছিল। তারা বর্তমানে ইন্দোনেশিয়ার উত্তর আচেহ প্রদেশের পিডি জেলার উপকূলীয় এলাকায় রয়েছেন। এর একদিন আগেই সেখানে ৫৭ জন রোহিঙ্গার আরেকটি দল আশ্রয় নিয়েছে। জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) আরব নিউজকে একটি লিখিত বিবৃতিতে জানিয়েছে, উদ্ধার হওয়া রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্যের অবস্থা খুব খারাপ। অনেকেরই মারাত্মক ডিহাইড্রেশন এবং অপুষ্টিতে ভুগছে। আইওএম-এর মেডিকেল টিম বর্তমানে রোহিঙ্গাদের সুস্থ করার চেষ্টা করছে। ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় শরণার্থী টাস্ক ফোর্সের সদস্য ইরোস শিদকি পুত্রা আরব নিউজকে বলেছেন যে, আপাতত শরণার্থীদের স্থানীয় সরকারের তত্ত্বাবধানে রাখা হবে। এর পরে আমরা তাদের এমন একটি প্রদেশে নিয়ে যাব যেখানে ইতিমধ্যেই শরণার্থীদের আবাসন রয়েছে। আচেহ প্রদেশে শরণার্থীদের স্থায়ীভাবে আশ্রয় দেয়া হয়না। শত শত শরণার্থী বহনকারী অন্তত পাঁচটি নৌকা নভেম্বরের শেষের দিকে আন্দামান সাগর পাড়ি দেয়ার চেষ্টা করে। এরমধ্যে ১৫৪ জন শরণার্থী বহনকারী একটি নৌকা ভিয়েতনামের একটি অফশোর কোম্পানি উদ্ধার করেছিল। তাদেরকে পরে মিয়ানমারে পাঠিয়ে দেয়া হয়। গত ১৮ই ডিসেম্বর শ্রীলঙ্কা নৌবাহিনী ১০৪ জনকে বহনকারী একটি রোহিঙ্গা নৌকা উদ্ধার করে। আইওএম এর আগে বলেছিল যে, তারা ১৮০ জন রোহিঙ্গাকে বহনকারী একটি নৌকা ডুবে গেছে বলে খবর পেয়েছিল। যদিও সে খবরের কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা সমুদ্রে আটকা পড়া শরণার্থীদের উদ্ধারের জন্য কয়েক সপ্তাহ ধরে এই অঞ্চলের দেশগুলির প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছিল। কিন্তু সাহায্যের জন্য একাধিক আবেদন সত্ত্বেও কোনও দেশের সরকারই সাহায্য করেনি। সোমবার ইন্দোনেশিয়ায় আসা নৌকায় মোহাম্মদ রেজুয়ান খান নামের এক রোহিঙ্গা বলেন, এক মাসেরও বেশি সময় ধরে যোগাযোগহীন থাকার পর মঙ্গলবার তিনি তার বোনের সঙ্গে কথা বলতে পেরেছেন। তার বোন নিজের মেয়েকে নিয়ে ওই নৌকায় বিদেশ যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। ইন্দোনেশিয়া থেকে বোনের ফোন পাওয়ার পর রেজুয়ান বলেন, আমার মনে হচ্ছে আজ একটি নতুন দুনিয়া পেলাম। তার বোন হাতমোনেসা জানিয়েছে, নৌকায় থাকা ২০ জন মারা গেছেন এবং তাদেরকে সমুদ্রে ফেলে দেয়া হয়েছে। তিনিও আশঙ্কা করছিলেন যে, সমুদ্রের যাত্রায় তিনি মারা যাবেন। তার উদ্দেশ্য ছিল মালয়েশিয়ায় পৌঁছানো এবং নিজের জন্য একটি দারুণ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা। ২০১৭ সালে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নৃশংস দমন-পীড়নের পর সাত লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। জাতিসংঘ এই হত্যাযজ্ঞকে গণহত্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছে। গত পাঁচ বছর ধরে এই রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে বাস করছে। অনেকেই এখান থেকে উন্নত জীবন খোঁজার আশায় সমুদ্রপথে ঝুঁকি নিয়ে বিদেশ যাওয়ার চেষ্টা করছে। আরব নিউজ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ