Inqilab Logo

সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

নৌকা নিখোঁজ, প্রায় ১৮০ রোহিঙ্গা শরণার্থীর মৃত্যুর আশঙ্কা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৭ ডিসেম্বর, ২০২২, ১:০৮ পিএম

আন্দামান সাগরে টানা কয়েক সপ্তাহ ধরে ভেসে থাকার পর রোহিঙ্গাদের বহনকারী একটি নৌকা ডুবে গেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। নৌকাটিতে বাংলাদেশ ছেড়ে যাওয়া অন্তত ১৮০ জন রোহিঙ্গা ছিলেন এবং নৌকাডুবির ফলে তাদের সবার মৃত্যু হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এটি ২০২২কে বাংলাদেশের শিবির থেকে পালানোর চেষ্টাকারী শরণার্থীদের জন্য সবচেয়ে মারাত্মক বছরগুলির মধ্যে একটি করে তুলেছে।

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গত নভেম্বর মাসে বাংলাদেশ ছেড়ে যাওয়ার পর রোহিঙ্গাদের দুর্বল ওই নৌকাটি টানা কয়েক সপ্তাহ ধরে সমুদ্রে আটকা পড়ে ছিল। কমপক্ষে ১৮০ জন রোহিঙ্গাকে বহনকারী নৌকাটি এই মাসেই ডুবে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অসমর্থিত একটি সূত্রের বরাত দিয়ে ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, সমুদ্রে নিখোঁজ হওয়ার পরে রোহিঙ্গাদের বহনকারী ওই নৌকাটি সম্ভবত ডুবে গেছে।

গেল শনিবার টুইটারে দেয়া এক বার্তায় জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক এই সংস্থা লিখেছে, ‘(রোহিঙ্গাদের সঙ্গে তাদের) আত্মীয়-স্বজনরা যোগাযোগ হারিয়েছেন। যাদের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত যোগাযোগ রাখা হয়েছিল তারাও সবাই মারা গেছে বলে মনে করা হচ্ছে।’ মিয়ানমার থেকে ১০ লাখেরও বেশি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে জনাকীর্ণ শিবিরে বসবাস করছে। এদের মধ্যে লাখ লাখ এমন শরণার্থীও রয়েছেন যারা মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর হাতে ২০১৭ সালে মারাত্মক দমন-পীড়নের শিকার হওয়ার পর পালিয়ে আসেন।

বৌদ্ধ-সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারে বেশিরভাগ রোহিঙ্গা মুসলমানদের নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত করা হয় এবং দক্ষিণ এশিয়া থেকে অনুপ্রবেশকারী, অবৈধ অভিবাসী হিসেবে দেখা হয়। অপরদিকে বাংলাদেশে অবশ্য তাদের কাজের সুযোগ নেই বললেই চলে। আর তাই পাচারকারীরা প্রায়ই মালয়েশিয়ার মতো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে কাজের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সাগরে বিপজ্জনক যাত্রা করার জন্য রোহিঙ্গাদের প্রলুব্ধ করে।

রয়টার্স বলছে, তৃষ্ণা, ক্ষুধা ও রোগের ভয় নিয়ে উদ্বেগ এবং খাদ্য, চাকরি ও আশ্রয়ের আশায় রোহিঙ্গা শরণার্থীরা প্রায়ই এশিয়ার অন্য কোনো দেশে পৌঁছাতে বাংলাদেশ ছেড়ে বিপজ্জনক সমুদ্রযাত্রা করে। গত সপ্তাহে মিয়ানমারের দুটি রোহিঙ্গা অ্যাক্টিভিস্ট গ্রুপ বলেছে, ভারতের উপকূলে দুই সপ্তাহ ধরে সমুদ্রে আটকে থাকা একটি নৌকায় ক্ষুধা বা তৃষ্ণায় ২০ জন মানুষ মারা গেছে। কমপক্ষে ১০০ জন লোক নিয়ে নৌকাটি মালয়েশিয়ার জলসীমায় ছিল বলে জানা গেছে।

এছাড়া এই মাসের শুরুর দিকে, শ্রীলঙ্কার নৌবাহিনী ভারত মহাসাগরের এই দ্বীপটির উত্তর উপকূলে ১০৪ জন রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করে। ইউএনএইচসিআর এই অঞ্চলের দেশগুলোকে মানবিক সংকট প্রশমনে সাহায্য করার জন্য আহ্বান জানিয়েছে। অন্য দিকে নিজেদের দুর্দশার কথা ভুলে না যাওয়ার জন্য বিশ্বের কাছে আবেদন করেছে শরণার্থীরা। সূত্র: দ্য গর্ডিয়ান।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ