Inqilab Logo

শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ইন্দোনেশিয়ায় উদ্ধার অর্ধশতাধিক রোহিঙ্গা

সাগরে ভাসমান ১৮০ রোহিঙ্গার মৃত্যুর শঙ্কা ইউএনএইচসিআরের

ইনকিলাব ডেস্ক : | প্রকাশের সময় : ২৭ ডিসেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

উদ্ধারকৃত রোহিঙ্গারা কয়েক সপ্তাহ ধরে সাগরে ভাসমান দেড় শতাধিক শরণার্থীর অংশ কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। নষ্ট ইঞ্জিনের একটি কাঠের নৌকায় চেপে কয়েক ডজন রোহিঙ্গা শরণার্থী ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলের এক সৈকতে ভেসে এসেছে বলে সেখানকার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। ক্ষুধার্ত ও দুর্বল এ রোহিঙ্গারা এক মাস সমুদ্রে কাটিয়েছেন। ভেসে আসা সবাই পুরুষ; এদের মধ্যে তিনজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। ইন্দোনেশিয়ায় পৌঁছানো এ রোহিঙ্গারা কয়েক সপ্তাহ ধরে সাগরে ভাসমান দেড় শতাধিক শরণার্থীর অংশ কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কোথা থেকে তারা যাত্রা শুরু করেছিল, তাও জানা যায়নি। মিয়ানমারের বাসিন্দা এ রোহিঙ্গা মুসলিমরা দীর্ঘদিন ধরেই দেশটির শাসকগোষ্ঠীর ভয়াবহ নিপীড়নের শিকার। অপর একখবরে বলঅ হয়, কয়েক সপ্তাহ ধরে ভেসে থাকা সমুদ্রযাত্রার অনুপযোগী নৌকাটির খোঁজ নেই। আরোহীদের সঙ্গে আত্মীয়স্বজনদের যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন। সাগরে কয়েক সপ্তাহ ভেসে থাকার পর চলতি মাসে রোহিঙ্গাবোঝাই একটি হালকা নৌকা ডুবে অন্তত ১৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে আশঙ্কা করছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর)। নভেম্বরে ওই রোহিঙ্গারা বাংলাদেশ ছেড়েছিলেন বলেও জানিয়েছে তারা। অসমর্থিত সূত্রের বরাত দিয়ে সংস্থাটি এখন বলছে, নিখোঁজ ওই ‘সমুদ্রযাত্রায় অনুপযোগী’ নৌকাটি সম্ভবত ডুবেই গেছে। “আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে তাদের (রোহিঙ্গা) যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া সবাই মারা পড়েছেন বলেই ধরে নেওয়া হচ্ছে,” শনিবার টুইটারে ইউএনএইচসিআর এমনটাই লিখেছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। ইন্দোনেশিয়ার পুলিশের এক মুখপাত্র প্যারিসভিত্তিক একটি বার্তা সংস্থাকে জানান, রোববার সকালে ৫৭ জনকে নিয়ে আসা একটি নৌকা আচেহ প্রদেশে পৌঁছেছে। “নৌকাটির ইঞ্জিন নষ্ট, বাতাস এটিকে আচেহ বাসার জেলার লাডং গ্রামের তীরে নিয়ে আসে। তারা (রোহিঙ্গা) জানান, তারা এক মাস ধরে সমুদ্রে ভাসছিলেন,” বলেছেন ওই মুখপাত্র। এই শরণার্থীদের আপাতত সরকারি একটি কেন্দ্রে রাখা হবে বলে এক অভিবাসন কর্মকর্তা প্যারিসভিত্তিক ওই বার্তা সংস্থাটিকে বলেছেন। কিছু গণমাধ্যম বলছে, ৫৭ জন নয়, আচেহতে পৌঁছানো নৌকায় রোহিঙ্গার সংখ্যা ৫৮। দুইদিন আগেই জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা সমুদ্রে দুই সপ্তাহ ধরে ভেসে থাকা দেড় শতাধিক রোহিঙ্গাবোঝাই একটি ছোট মাছ ধরার নৌকাকে সহায়তা করতে আন্দামান সাগরের আশপাশের দক্ষিণপূরব এশিয়ার দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল। নৌকাটির আরোহীরা একটি স্যাটেলাইট ফোনের মাধ্যমে শিশুসহ অনেকেই মারা গেছে এবং তাদের খাদ্য ও পানি ফুরিয়ে আসছে বলেও জানিয়েছিল। এছাড়া নিখোঁজ ওই নৌকাটি শেষ পর্যন্ত ডুবে গেছে বলে জাতিসংঘের সংস্থাটি আশঙ্কাও প্রকাশ করছে। ২০১৭ সালে সেনাবাহিনীর নির্মম নিপীড়নের মুখে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আসা কয়েক লাখসহ ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশের ভিড়ঠাসা শরণার্থী শিবিরগুলোতে অবস্থান করছে। বৌদ্ধ-সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের নাগরিকত্ব তো দেওয়াই হয় না, উল্টো তাদেরকে অনুপ্রবেশকারী, দক্ষিণ এশিয়া থেকে যাওয়া অবৈধ শরণার্থী হিসেবে দেখা হয়। এই সুযোগে মানবপাচারকারীরা তাদেরকে মালয়েশিয়ার মতো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে কাজ জুটিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সাগরে ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রায় প্রলুব্ধ করে। গত দুই মাসে এই ধরনের অন্তত ৫টি নৌকা বাংলাদেশ ছেড়েছে বলে জানা গেছে। বিবিসি, রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ